আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় জানতে চান। তাদের জন্যই আজকে আমার এই লেখা। একটা সময় ছিল ইউটিউব থেকে আয় করা গেলেও ফেসবুক থেকে ইনকাম করার উপায় ছিল না।
কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসি চালু করে। বর্তমানে অনলাইন থেকে যেসব পদ্ধতিতে আয় করা যায় তার মধ্যে ফেসবুক থেকে আয় করা অন্যতম ।
ফেসবুক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় আছে। এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি আপনার ফেসবুক প্রোফাইল বা পেজ থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়
ফেসবুক থেকে ইনকাম করার ৫ টি প্রধান উপায় হচ্ছে:
- ফেসবুক মনিটাইজেশন
- ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি
- ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
- ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয়
- ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে ফেসবুক থেকে আয়
১। ফেসবুক মনিটাইজেশন এর মাধ্যমে আয়
ফেসবুক মনিটাইজেশন টুল এর মাধ্যমে বিভিন্নভাবে ফেসবুক পেজ থেকে আয় করা যায়। ফেসবুক মনিটাইজেশন হচ্ছে ফেসবুক থেকে আয় করার উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম । ফেসবুক মনিটাইজেশন টুল এর মাধ্যমে যেসব উপায়ে আয় করা যায়:
- ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিং এবং স্টার্স
- ফেসবুক রিলস এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয়
- ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় (In-Stream Ads)
- ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিং এবং ফ্যান সাবস্ক্রিপশন
- ব্র্যান্ড কোলাবোরেট
ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিং এবং স্টার্স এর মাধ্যমে আয়
ফেসবুক লাইভ (Facebook Live) হলো একটি ফিচার যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটররা লাইভে এসে তাদের ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে, পারফর্ম করতে বা অন্য কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। লাইভের মাধ্যমে আয় করার প্রধান উপায় হলো Facebook Stars। তবে ফেসবুক স্টার্স থেকে ইনকাম করার জন্য আপনাকে যে শুধু লাইভে আসতে হবে তা নয় আপনি স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন ধরণের কন্টেন্ট তৈরী করেও ফেসবুক স্টার্স এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয় করতে পারবেন।
Facebook Stars কীভাবে কাজ করে?
ফেসবুক স্টারস হলো ফেসবুকের একটি ভার্চুয়াল কারেন্সি সিস্টেম।
আপনার ভক্তরা আপনাকে সমর্থন করার জন্য স্টারস কিনতে পারে এবং লাইভের সময় আপনাকে স্টারস পাঠাতে পারে।
প্রতিটি স্টারের মূল্য হলো ১ সেন্ট (USD)। অর্থাৎ ১০০ স্টারস = ১ ডলার।
লাইভ স্ট্রিমিং থেকে আয়ের ধাপগুলো:
ফেসবুক পেজ তৈরি করুন
আপনি যদি লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে চান, প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করতে হবে এবং সেই পেজ থেকে লাইভে আসতে হবে।
ফেসবুকে কিভাবে পেজ খুলে সে ব্যাপারে যদি না জানেন তাহলে আপনাকে বলছি ফেসবুকে পেজ খোলা খুব সহজ ।মোবাইলে ফেসবুক পেজ খুলতে চাইলে স্ক্রিনের উপরে আপনার ছবিতে ক্লিক করলেই পেজের অপশন পেয়ে যাবেন আর কম্পিউটারে ফেসবুক পেজ খুলতে চাইলে স্ক্রিনের বাম পাশে পেজ অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করলেই create new page অপশন পাবেন ।
অ্যাড অপশন যোগ্যতা পূরণ করুন
Facebook Stars ব্যবহার করতে হলে আপনার পেজকে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এই যোগ্যতা নির্ভর করে ফলোয়ার সংখ্যা, ভিডিও ভিউ এবং ফেসবুকের কমিউনিটি গাইডলাইন অনুযায়ী কনটেন্ট পোস্ট করার ওপর।
Stars অপশন সক্রিয় করুন
যোগ্যতা অর্জন করলে যেভাবে স্টার অপশন চালু করবেন-
- আপনাকে যে নোটিফিকেশন দেওয়া হবে সেখানে ক্লিক করবেন বা মেটা বিজনেস সুট (Meta Business Suite) এ প্রবেশ করুন।
- বাম দিকের ম্যানু থেকে মনিটাইজেশন ট্যাব এ যান।
- সেট আপ অপশনে ক্লিক করুন
- যে পেজটি সেট করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন
লাইভ স্ট্রিমিং শুরু করুন
লাইভ স্ট্রিম করার সময় ভক্তদের স্টারস পাঠাতে উৎসাহিত করুন। লাইভ চলাকালীন দর্শকরা আপনাকে সরাসরি স্টারস পাঠাবে এবং আপনি এর মাধ্যমে আয় করবেন।
স্টারস কনভার্ট করুন
আপনি যে স্টারস পাবেন, তা টাকা হিসেবে পেমেন্টে পরিণত হবে। প্রতি মাসের ২১ তারিখে ফেসবুক আপনার স্টারসের অর্থ আপনার পেমেন্ট পদ্ধতিতে প্রদান করবে।
ফেসবুক লাইভ স্ট্রিমিংয়ের সুবিধা
- সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারবেন।
- প্রতিবার লাইভে নতুন দর্শক এবং সাবস্ক্রাইবার পেতে পারেন।
- কোনো খরচ ছাড়াই সহজে আয় করতে পারেন।
ফেসবুক রিলস এর মাধ্যমে আয়
ফেসবুক রিলস থেকে আয় বর্তমানে একটি জনপ্রিয় আয়ের পদ্ধতি। আপনার যদি ১০ হাজার ফলোয়ার থাকে এবং আপনি যদি ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলেন তাহলে আপনি ফেসবুক রিলস থেকে ইনকাম করতে পারবেন।
ফেসবুক ভিডিও থেকে আয় (In-Stream Ads)
ফেসবুক থেকে আয় করার উপায় এর মধ্যে ফেসবুক ভিডিও থেকে যায় খুবই জনপ্রিয়। যেভাবে ফেসবুক ভিডিও থেকে যায় করবেন :
ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড
ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড ফিচারটি ফেসবুকে ভিডিও কন্টেন্ট নির্মাতাদের জন্য একটি জনপ্রিয় আয়ের উৎস।
এটি মূলত ভিডিও কনটেন্টে বিজ্ঞাপন যুক্ত করার একটি পদ্ধতি। দর্শকরা যখন আপনার ভিডিও দেখবে, তখন ফেসবুক আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন দেখাবে এবং সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন। নিচে ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো:
ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড কী?
ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড হলো ফেসবুকের একটি মনেটাইজেশন ফিচার, যেখানে আপনার আপলোড করা ভিডিওগুলোর মাঝে, শুরুতে, অথবা শেষে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ফেসবুক আপনাকে তাদের আয়ের একটি অংশ প্রদান করে।
কীভাবে ইন স্ট্রিম অ্যাড কাজ করে?
ইন স্ট্রিম অ্যাড ফিচারটি মূলত ভিডিও কনটেন্টের জনপ্রিয়তার ওপর ভিত্তি করে কাজ করে। আপনার ভিডিওতে যথেষ্ট পরিমাণে ভিউ থাকলে ফেসবুক স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেই ভিডিওতে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করবে। আপনি যে বিজ্ঞাপনগুলো আপনার ভিডিওতে দেখাতে পারবেন তা হলো:
মিড–রোল বিজ্ঞাপন (Mid-Roll Ads): ভিডিওর মাঝখানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়।
প্রি–রোল বিজ্ঞাপন (Pre-Roll Ads): ভিডিওর শুরুতে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়।
ইমেজ বা ব্যানার বিজ্ঞাপন (Image Ads): ভিডিওর নিচে ছোট ব্যানার আকারে প্রদর্শিত হয়।
পোস্ট-রোল বিজ্ঞাপন (Post-roll ads) : ভিডিও শেষ হওয়ার পর বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয়।
ইন স্ট্রিম অ্যাড এর জন্য যোগ্যতা
ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড ব্যবহার করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়:
ফেসবুক পেইজের ফলোয়ার সংখ্যা: কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
ভিডিও ভিউস: গত ৬০ দিনে কমপক্ষে ৬,০০,০০০ মিনিটের বৈধ ভিডিও ভিউ থাকতে হবে।
ভিডিও কন্টেন্টের মান: আপনার ভিডিও কন্টেন্ট অবশ্যই ফেসবুকের মনিটাইজেশন নীতি মেনে তৈরি হতে হবে।
দেশভিত্তিক শর্ত: আপনাকে এমন দেশে থাকতে হবে যেখানে ফেসবুক অ্যাড ব্রেক ফিচারটি আছে ।
কীভাবে ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড চালু করবেন?
আপনি যদি উপরের শর্তগুলো পূরণ করেন, তবে ফেসবুক ইন স্ট্রিম অ্যাড ফিচারটি চালু করতে পারবেন। এর জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে:
- ফেসবুক পেইজে লগইন করুন এবং Meta Business Suit এ যান।
- তারপর All Tools থেকে Monetization।
- Monetization থেকে Overview এ ক্লিক করুন।
- Status > view page eligibility
- পেইজ যোগ্য হলে সেটআপ এ ক্লিক করুন। এর পেইজ সিলেক্ট করে।
- তারপর পেআউট অ্যাকাউন্ট সেট করে সাবমিট করুন।
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন (Fan Subscriptions) এর মাধ্যমে আয়
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন হলো ফেসবুকের এমন একটি ফিচার যেখানে আপনার ভক্তরা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট একটি ফি দিয়ে আপনার কনটেন্ট সাবস্ক্রাইব করতে পারে। এর মাধ্যমে তারা বিশেষ কিছু কনটেন্ট, এক্সক্লুসিভ অফার এবং আপনার সাথে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ পেয়ে থাকে। সাবস্ক্রিপশন ফি থেকে আপনি সরাসরি আয় করতে পারেন।
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন কীভাবে কাজ করে?
- আপনার পেজে Subscribe বাটন যুক্ত থাকবে, যা ব্যবহার করে ভক্তরা মাসিক সাবস্ক্রিপশনের জন্য অর্থ প্রদান করতে পারে।
- সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে ভক্তরা এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট, স্টিকার, ব্যাজ, এবং লাইভ স্ট্রিমিং সেশনের বিশেষ সুবিধা পাবে।
ফ্যান সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে আয়ের ধাপগুলো:
ফেসবুক পেজ তৈরি করুন
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন সুবিধা ব্যবহার করতে হলে আপনার একটি পেইজ থাকতে হবে এবং পেইজে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফলোয়ার ও এনজগেজমেন্ট থাকতে হবে।
পেইজের যোগ্যতা নিশ্চিত করুন
ফেসবুকের মনেটাইজেশন পলিসি অনুযায়ী আপনার পেইজটি ফ্যান সাবস্ক্রিপশনের জন্য যোগ্য কিনা তা চেক করতে হবে। সাধারণত ফ্যান সাবস্ক্রিপশন এর যোগ্য হওয়ার জন্য ১০,০০০ ফলোয়ার থাকা দরকার অথবা ২৫০+ রিটার্ন ভিউয়ার এবং বিগত ৬০ দিনে ৫০,০০০ পোস্ট এঙ্গেজমেন্ট থাকতে হবে অথবা ১,৮০,০০০ ওয়াচ টাইম থাকতে হবে
ভিডিও গেমিং ক্রিয়েটরদের জন্য- Level Up program এর অংশ হতে হবে এবং ২৫০+ রিটার্ন ভিউয়ার থাকতে হবে।
ফ্যান সাবস্ক্রিপশন ফিচার চালু করুন
Creator Studio বা Monetization ট্যাব থেকে ফ্যান সাবস্ক্রিপশন অপশনটি চালু করতে পারবেন। এরপর ভক্তরা আপনার পেজে Subscribe বাটন দেখতে পাবে।
সাবস্ক্রাইবারদের জন্য এক্সক্লুসিভ কনটেন্ট তৈরি করুন
সাবস্ক্রাইবারদের সন্তুষ্ট করার জন্য নিয়মিত বিশেষ কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। যেমন এক্সক্লুসিভ লাইভ সেশন, কাস্টম স্টিকার, ব্যাজ, ব্যক্তিগত বার্তা ইত্যাদি।
সাবস্ক্রিপশন পেমেন্ট গ্রহণ করুন
সাবস্ক্রাইবারদের কাছ থেকে মাসিক পেমেন্ট ফেসবুক আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠাবে। সাধারণত সাবস্ক্রিপশন ফি $৪.৯৯ থেকে শুরু হয়, তবে এটি ব্র্যান্ড এবং কনটেন্ট ক্রিয়েটরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে পারে।
ফ্যান সাবস্ক্রিপশনের সুবিধা
- মাসিক স্থায়ী আয়ের উৎস।
- আপনার অনুসারীদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ।
- কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য আরো ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করতে উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।
ব্র্যান্ড কোলাবোরেশন এর মাধ্যমে ফেসবুক থেকে আয়
আপনি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সাথে পার্টনারশিপ করতে পারেন যারা আপনার পেইজের মাধ্যমে তাদের পণ্য বা পরিষেবা প্রচার করতে ইচ্ছুক। একে ব্র্যান্ডেড কন্টেন্ট বলা হয়।
এই ব্র্যান্ডেড কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনি ফেসবুক থেকে আয় করতে পারেন।
- আপনার কন্টেন্ট ব্র্যান্ডেড হলে ফেসবুকের ব্র্যান্ডেড কন্টেন্ট ট্যাগ ব্যবহার করতে হবে।
- পেজ মনিটাইজেশনের শর্তাবলীর সাথে মিল রেখে এই কোলাবোরেশন করতে হবে।
আরও পড়ুন : কিভাবে ফেসবুকে স্পন্সরশিপ বা ব্র্যান্ড পার্টনারশিপ এর মাধ্যমে আয় করা যায়?
২ . ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি
ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে আপনি পণ্য বিক্রি করেও আয় করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে আপনাকে ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে পণ্য বা সেবা তালিকাভুক্ত করে তারপর বিক্রি করতে হবে।
বিস্তারিত পড়ুন : ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে কিভাবে পণ্য বিক্রি করে আয় করবেন?
৩ . অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য বা সেবার লিঙ্ক শেয়ার করে কমিশন পেতে পারেন।
বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেমন অ্যামাজন বা অন্যান্য ই-কমার্স সাইটের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
৪ . ফেসবুক গ্রুপ থেকে আয়
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন ফেসবুকে গ্রূপ কিভাবে খোলে এই বিষয়ে জানেন না । তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ফেসবুক গ্রূপ খোলা একদম সহজ। আপনি যদি মোবাইল থেকে ফেসবুকে গ্রূপ খুলতে চান তাহলে উপরে ডান পাশে নিজের ছবিতে ক্লিক করলেই গ্রূপের অপশন পাবেন । আর পিসিতে হলে আপনার স্ক্রিনের বাম পাশে গ্রূপ অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করলেই create new group অপশন পাবেন।
আপনি যদি একটি সক্রিয় এবং জনপ্রিয় ফেসবুক গ্রুপ চালান, তবে স্পন্সরশিপ বা পণ্য প্রচারের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।
এছাড়া কিছু গ্রুপের জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি ধার্য করে সদস্যদের কাছ থেকে আয় করা যায়।
৫. ডিজিটাল পণ্য বিক্রি
ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি ই-বুক, কোর্স, ডিজিটাল আর্ট বা সফটওয়্যারের মতো ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করতে পারেন।
ফেসবুক পেইজ বা গ্রুপে আপনার কনটেন্ট শেয়ার করে বিক্রির ব্যবস্থা করতে পারেন।
এসব উপায় ব্যবহার করে ফেসবুক থেকে নিয়মিত আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন। তবে এজন্য সঠিকভাবে পরিকল্পনা এবং নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
আশা করা যায় উপরের লেখাটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক থেকে কিভাবে আয় করা যায় এই ব্যাপারে ভালো একটা ধারণা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: টিকটক থেকে আয় করা যায় কি কি উপায়ে?
পাঠক জিজ্ঞাসা
ফেসবুক এর মাধ্যমে কত ভিউ এর জন্য কি পরিমাণ আয় করা যায়?
ফেসবুক থেকে কিভাবে আয় করা যায় এটা তো জানলেন। এখন আপনাদের জানাবো ফেসবুক কত ভিউ এর জন্য কি পরিমাণ অর্থ প্রদান করে থাকে।
মূলত ফেসবুক থেকে আয়ের জন্য সরাসরি ভিউ বা ভিডিও দেখার সংখ্যা ভিত্তিক আয়ের কোন নির্দিষ্ট ফর্মুলা নেই। ফেসবুকে আয় নির্ভর করে কিছু ভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর:
CPM (Cost Per Mille): সাধারণত প্রতি ১,০০০ ভিউ এর জন্য ১-৫ ডলার পর্যন্ত আয় হতে পারে, তবে এর পরিমাণ কম বা বেশি হতে পারে ভিডিওর ধরণ, দর্শকের অবস্থান (কোন যায়গার ভিউয়ার) এবং বিজ্ঞাপনের ধরণ ইত্যাদির উপর। বাংলাদেশের মত দেশে ভিউ থেকে তুলণামূলক আয় অনেক কম হয়।
নিচের বিষয়গুলো আয়ে প্রভাব ফেলে:
- ভিউয়ারদের দেশের অবস্থান: উন্নত দেশ থেকে ভিউ হলে CPM বেশি হয়।
- কনটেন্টের ধরণ: কিছু বিশেষ থিম যেমন টেকনোলজি, ফাইন্যান্স ইত্যাদি বেশি আয় প্রদান করে থাকে।
- এনগেজমেন্ট: ভিডিওতে লাইক, শেয়ার এবং কমেন্ট বেশি থাকলে আয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ফেসবুকে আয় শুরু করতে হলে প্রথমেই মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করে একটি শক্তিশালী ফলোয়ার বেজ গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া, মনেটাইজেশন নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসি কি?
যেকোনো প্রকাশক, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর বা অন্য কেউ ফেসবুকে মনিটাইজেশন টুল ব্যবহার করতে চায় তাহলে তাদেরকে অবশ্যই পার্টনার মনিটাইজেশন পলিসি এবং কন্টেন্ট মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলতে হবে। এসব পলিসির মধ্যে রয়েছে :
১. ফেসবুক মেসেঞ্জারে মনিটাইজেশন পলিসি অনুমোদিত দেশের অধিবাসী হতে হবে।
২. ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে হবে।
৩. ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলতে হবে।
৪. কোন ধরণের ফেইক কন্টেন্ট শেয়ার করা যাবেনা।
৫. কন্টেন্ট হতে হবে ইউনিক। অন্যের কন্টেন্ট নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে না।
৬. ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসি পেজ বা প্রোফাইলের পাবলিক পোস্টের জন্য প্রযোজ্য।
৮. ফেসবুক পেমেন্ট শর্ত মেনে চলতে হবে।
৯.ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং ইভেন্টের শর্ত মনে চলতে হবে।
ফেসবুক মনিটাইজেশন টুল কি কি?
ফেসবুক মনিটাইজেশন টুল হচ্ছে:
১. ফেসবুক স্টার্স
২. এডস অন রিলস
৩. ইন-স্ট্রিম এডস
৪. সাবস্ক্রিপশন
৫. বোনাস
৬. ব্র্যান্ড কোলাবোরেশান
ফেসবুক মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করা এবং চেক করার নিয়ম কি?
মোবাইল দিয়ে Professional Dashboard থেকে Monetization ট্যাবে এবং কম্পিউটার থেকে Meta Business Suite>Monetization ট্যাবে গেলেই আপনি মনিটাইজেশন চেক করতে পারবেন। আপনি যোগ্য কিনা সেটা দেখাবে। আপনি মনিটাইজেশন এর যোগ্য হলে Set up এ ক্লিক করে মনিটাইজেশন এর জন্য আবেদন করবেন।
ফেসবুক রিলস কি?
ফেসবুক রিলস হচ্ছে ছোট আকারের ভিডিও। ফেসবুক রিলস ভিডিও এর সাইজ হয়ে থাকে ৩ সেকেন্ড থেকে ৯০ সেকেন্ড পর্যন্ত। ফেসবুক রিলস ভার্টিকেল (৯:১৬) ফরম্যাটের হয়ে থাকে।
ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসি কি?
ফেসবুক মনিটাইজেশন পলিসিতে যেসব শর্ত আছে ফেসবুক রিলস মনিটাইজেশন পলিসিতেও একই বিষয় আছে তবে ফেসবুক রিলস এ বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে:
১. কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে।
২. টাইমলাইনে ৫ টি সক্রিয় রিল থাকতে হবে।
৩. গত ৬০ দিনে ৬ লাখ মিনিটের ভিউ থাকতে হবে।
ফেসবুক রিলস এ কত ভিউ এ কত টাকা প্রদান করা হয়?
ফেসবুক রিলস এ ১ হাজার ভিউ হলে সাধারণত ০.০১ ডলার থেকে ০.০২ ডলার পর্যন্ত প্রদান করা হয়। তবে স্থান, কাল বা কন্টেন্ট ভেদে এটি অনেক বেশিও হতে পারে। উন্নত দেশ আর এনগেজিং কন্টেন্ট হলে ১০০০ ভিউতে সর্বোচ্চ ২০ ডলার পর্যন্ত প্রদান করা হয়।
ফেসবুকে কত ফলোয়ার হলে আয় করা যায়?
ফেসবুকে ৫ হাজার ফলোয়ার হলেই আপনি আয় করা শুরু করতে পারবেন।
১০ হাজার ভিউ হলে ফেসবুক কত টাকা দেয়?
১ হাজার ভিউ হলে ফেসবুক থেকে ০.০১ ডলার থেকে ০.০২ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়। সেই হিসেবে ১০ হাজার ভিউ হলে ০.১০ ডলার থেকে ০.২০ ডলার আয় করা যায়। তবে স্থান, কাল বা কন্টেন্ট এনগেজমেন্ট রেট এর কারণে আরো অনেক বেশিও আয় করা যায়।