HomeBusiness Guidelinesপাইকারি ব্যবসা কি? শুরুর করার ধাপ, সুবিধা অসুবিধা, লাভ-খরচসহ বিস্তারিত

পাইকারি ব্যবসা কি? শুরুর করার ধাপ, সুবিধা অসুবিধা, লাভ-খরচসহ বিস্তারিত

পাইকারি ব্যবসা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ও দীর্ঘমেয়াদি লাভজনক ব্যবসার মধ্যে একটি। ছোট, মাঝারি ও বড় প্রায় সব ধরনের খুচরা ব্যবসায়ী পাইকারদের কাছ থেকেই পণ্য সংগ্রহ করে। যার কারণে এই ব্যবসায় আপনি নিয়মিত আয় করতে পারবেন।

আপনি যদি প্রথম দিকে অল্প পুঁজি, সঠিক পরিকল্পনা এবং বাজারজ্ঞান নিয়ে পাইকারি ব্যবসা শুরু করেন তাহলে খুব দ্রুতই এই ব্যবসাকে বড় ব্যবসায় রূপ দিতে পারবেন।

পাইকারি ব্যবসা কাকে বলে? 

পাইকারি ব্যবসা (Wholesale Business) হলো এমন একটি ব্যবসা যেখানে বেশি পরিমাণে পণ্য কম দামে সরবরাহকারীর কাছ থেকে কিনে খুচরা ব্যবসায়ী, দোকানদার বা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছে অধিক পরিমাণে বিক্রি করা হয়।

পাইকাররা সাধারণত সরাসরি ক্রেতার কাছে পণ্য বিক্রি করে না। তাদের লক্ষ্য থাকে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে একসাথে বেশি পরিমাণে বিক্রি করা।

সহজভাবে বললে পাইকাররদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে:

১. পাইকাররা অধিক পরিমাণে কিনে,

২. একসাথে বেশি পরিমাণে বিক্রি করে,

পাইকারি ব্যবসার সুবিধা ও অসুবিধা

প্রতিটি ব্যবসার কিছু সুবিধা-অসুবিধা থাকে। পাইকারি ব্যবসারও ঠিক তেমনি বেশ কিছু সুবিধা-অসুবিধা রয়েছে। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।

সুবিধাসমূহ

১. লাভের সুযোগ বেশি

যেহেয় এই ব্যবসায় বেশি পরিমাণে কেনা-বেচা হয়ে থাকে তাই প্রতি পণ্যে লাভ কম হলেও মোট লাভ অনেক বেশি হয়।

২. নিয়মিত চাহিদা

যেহেতু খুচরা ব্যবসায়ীদের নিয়মিত বিভিন্ন পণ্য কিনতে হয় তাই নিয়মিত ক্রেতা পাওয়া যায়। আপনার ক্রেতা ধরে রাখার ক্ষমতা থাকলে ক্রেতার অভাব হবে না।

৩. ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সহজ

এই ধরণের ব্যবসার পরিধি বাড়ানো অন্য ব্যবসার তুলনায় সহজ। আপনি যদি মজুত করার যায়গা, ট্রান্সপোর্ট ও নেটওয়ার্ক বাড়াতে পারেন তাহলেই আপনার আয় বাড়াতে পারবেন।

৪. মার্কেটিং এর প্রয়োজন কম 

পাইকারি ব্যবসায় নতুন ব্যবসার মতো প্রচুর মার্কেটিং প্রয়োজন হয় না। এই ব্যবসায় নেটওয়ার্কই হলো মূল শক্তি। ভাল নেটওয়ার্ক থাকলে নিয়মিত কাস্টমার পাবেন।

৫. টেকসই ব্যবসা

 দোকানদারদের সাথে দীর্ঘমেয়াদী লেনদেন থাকার কারণে ব্যবসায়িক স্থিতিশীলতা অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় বেশি।

অসুবিধাসমূহ

১. বেশি পুঁজি প্রয়োজন

প্রথম দিকে বেশি করে পণ্য ক্রয় করা, গুদাম ভাড়া, পরিবহন ইত্যাদির জন্য বড় পুঁজি লাগে।

২. স্টকের ঝুঁকি বেশি

পণ্য নষ্ট হওয়া, মডেল পরিবর্তন, ট্রেন্ড কমে যাওয়া ইত্যাদি ঝুঁকি থাকে। এসব ঝুঁকির মধ্যে পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকির পরিমাণ বেশি থাকে কারণ পাইকারকে বেশি পরিমাণে পণ্য স্টক করতে হয়।

৩. তারল্য সংকট

অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় খুচরা ব্যবসায়ীরা একসাথে বেশি পরিমাণে পণ্য কেনার কারণে বাকিতে পণ্য কিনতে চায়। একসময় অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বেশি বাকি দেওয়ার কারণে তারল্য সংকট দেখা দেয়।

৪. পরিবহন ও লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ

বড় পরিমাণ পণ্য পরিবহনে সময়, শ্রম ও খরচ বেশি লাগে। সময়মতো পরিবহনের ব্যবস্থা করা এবং অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া এই ব্যবহার একটা বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

পাইকারি ব্যবসা শুরু করার ধাপসমূহ

পাইকারি ব্যবসা

ধাপ ১: ব্যবসার ধরন নির্বাচন

কোন ধরণের পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন সেটা প্রথমেই ঠিক করে ফেলুন।৷ বিভিন্ন ধরণের পণ্য নিয়ে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন যেমন:

  • প্লাস্টিক সামগ্রী
  • কসমেটিকস
  • ইলেকট্রনিক্স
  • গার্মেন্টস আইটেম
  • স্টেশনারি
  • মুদি পণ্য

যে ধরণের পণ্য সম্পর্কে আপনার জানাশোনা বেশি সে ধরণের পণ্য নিয়েই শুরু করুন। পরে ধীরে ধীরে পণ্যের সংখ্যা বাড়ান।

ধাপ ২: বাজার গবেষণা (Market Research)

যেকোনো ব্যবসা শুরু করার আগে বাজার গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজার গবেষণায় যেসব বিষয় বিবেচনা করবেন:

  • আপনি যে পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন সেই পণ্যের চাহিদা আপনার এলাকায় আছে কিনা?
  • প্রতিযোগী কতজন আছে?
  • তারা কী দামে বিক্রি করছে?
  • কোন পণ্য বেশি চলে?

ধাপ ৩: মূলধন ও বাজেট পরিকল্পনা

একটি আনুমানিক বাজেট নির্ধারণ করুন। সেই বাজেট অনুযায়ী আপনাকে প্রাথমিকভাবে ব্যবসা শুরু করতে হবে। আপনার যদি বাজেট বিষয়ে ভাল ধারণা না থাকে তাহলে অভিজ্ঞ কারও সাহায্য নিন। বাজেট পরিকল্পনার মধ্যে যেসব বিষয় থাকবে:

  • স্টক কেনার খরচ
  • গুদাম/দোকান ভাড়া
  • কর্মচারীর বেতন
  • ট্রান্সপোর্ট খরচ
  • জরুরি তহবিল

যতটুকু সম্ভব ক্যাশফ্লো ধরে রেখে শুরু করুন। প্রথমদিকে বড় বিনিয়োগ করবেন না।

ধাপ ৪: সরবরাহকারী (Supplier) নির্বাচন

বলা হয় বিশ্বস্ত সরবরাহকারী নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবসার ৫০% সফলতা নিশ্চিত হয়। সরবরাহকারি নির্বাচন করার জন্য নিচের কাজগুলো করুন:

  • বড় কারখানা বা আমদানিকারকের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • দাম তুলনা করুন।
  • রিটার্ন পলিসি জানুন।
  • ড় পরিমাণ কিনলে ছাড় (Discount) নিশ্চিত করুন। 

ধাপ ৫: গুদাম বা দোকান সেটআপ

পাইকারি ব্যবসার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা দরকার। এজন্য গুদাম বা দোকান নির্বাচনের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে :

  • ভালো ভেন্টিলেশন
  • স্টক সাজানোর জন্য র‍্যাক
  • নিরাপত্তা ব্যবস্থা
  • ট্রাক/পিকআপ ঢোকার সুবিধা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।

ধাপ ৬: পরিবহন ব্যবস্থা ঠিক করা

নিজস্ব ভ্যান/পিকআপ রাখতে পারেন বা ভাড়ায় মাল পরিবহন করতে পারেন। আপনার সক্ষমতার উপর বিষয়টি নির্ভর করবে। মনে রাখবেন সময়মতো ডেলিভারি না দিতে পারলে আপনি গ্রাহক হারাবেন। তাই উপযুক্ত পরিবহন ব্যবস্থার উপর অবশ্যই ফোকাস থাকতে হবে।

ধাপ ৭: রিটেইলার নেটওয়ার্ক তৈরি করুন

পাইকারি ব্যবসায় সফল হতে হলে আপনাকে রিটেইলারদের সাথে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য:

  • স্থানীয় দোকানদারদের সাথে কথা বলুন
  • নমুনা পণ্যের (Sample) দিন
  • প্রথম দিকে কম লাভে পণ্য সাপ্লাই দিন
  • নিয়মিত follow-up করুন

ধাপ ৮: ব্যবসার লাইসেন্স ও ডকুমেন্টেশন

যেকোনো ব্যবসা করতে হলে আপনাকে লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টশন সম্পন্ন করতে হবে। এই ব্যবসা শুরু করতে হলে আপনাকে যেসব লাগবে:

  • ট্রেড লাইসেন্স
  • TIN
  • VAT রেজিস্ট্রেশন (প্রয়োজনে)

এভাবেই আপনি পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

আরও পড়ুন: ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা কি? শুরু করার ধাপ, লাভ-খরচসহ বিস্তারিত

পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া 

পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া

১. প্লাস্টিক প্রোডাক্টের পাইকারি ব্যবসা

যেসব পণ্য নিয়ে শুরু করতে পারেন:

  • বালতি,
  • মগ,
  • টিফিন বক্স,
  • কন্টেইনার,
  • ঝাড়ু,
  • কাপ
  • বয়াম,
  • হোম এপ্লায়েন্স ইত্যাদি।

যেহেতু সব বাসাবাড়িতে প্লাস্টিক পণ্যের প্রয়োজন হয় তাই সারাবছর চাহিদা থাকে।

২. কসমেটিকস ও পারসোনাল কেয়ার পাইকারি ব্যবসা

যে ধরণের পণ্য নিয়ে শুরু করতে পারেন :

  • লোশন
  • ক্রিম
  • সাবান
  • শ্যাম্পু
  • পারফিউম
  • মেকআপ

মেয়েদের মধ্যে এই ধরণের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে।

৩. স্টেশনারি ও অফিস সাপ্লাই পাইকারি ব্যবসা

স্কুল কলেজ ভার্সিটি বা অফিস আদালত আছে এমন এলাকায় এই ধরণের পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। স্টেশনারি আইটেমের মধ্যে রয়েছে:

  • কলম
  • খাতা
  • ফাইল
  • পেপার
  • ক্লিপস
  • স্টেপলার ইত্যাদি।

৪. ইলেকট্রনিক্স অ্যাকসেসরিজ পাইকারি ব্যবসা

ইলেকট্রনিক্স অ্যাক্সেসরিজ এর মধ্যে রয়েছে :

  • চার্জার
  • ক্যাবল
  • ইয়ারফোন
  • স্মার্টওয়াচ
  • পাওয়ার ব্যাংক
  • মোবাইল কাভার ইত্যাদি।

ইলেকট্রনিক্স অ্যাকসেসরিজ ব্যবসায় ২০৫০% পর্যন্ত লাভ করা যায়। এসব পণ্যের চাহিদা সারাবছর থাকে।

৫. কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা

কাপড়ের পাইকারি ব্যবসা খুবই জনপ্রিয় এবং লাভজনক ব্যবসা। টি-শার্ট, জিন্স, বাচ্চাদের পোশাক, লেগিংস, হিজাব, মেয়েদের জামাকাপড় নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। অন্যদের তুলনায় মেয়েদের জামাকাপড় বেশি বিক্রি হয়।

৬. মুদি পণ্য পাইকারি ব্যবসা

মুদি পণ্য পাইকারি ব্যবসা সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বরাবর বেশি থাকে। যেহেতু এসব পণ্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তাই সারাবছর বিক্রি হয়ে থাকে। মুদি দোকান ব্যবসায়ীরাই হচ্ছে আপনার মুল ক্রেতা। মুদি আইটেমের মধ্যে রয়েছে :আটা, চিনি, চাল, ডাল, তেল, নুডলস, বিস্কুট ইত্যাদি।

৭. বেবি প্রোডাক্টস পাইকারি ব্যবসা

বেবি প্রোডাক্ট এর মধ্যে রয়েছে ডায়াপার, ওয়াইপস, বেবি ক্রিম, ফিডার ইত্যাদি। শহর অঞ্চলে এসব প্রোডাক্ট বেশি চলে।

৮. স্যানিটারি ও বাথরুম অ্যাকসেসরিজ পাইকারি ব্যবসা

মানুষের উন্নত জীবন যাপনের সাথে সাথে এসব পণ্যের চাহিদা আনুপাতিক হারে বেড়ে থাকে। স্যানিটারি আইটেমের মধ্যে রয়েছে ফ্লেক্স পাইপ, শাওয়ার, ট্যাপ, সিট, মগ, বালতি ইত্যাদি।

৯. হার্ডওয়্যার ও টুলস পাইকারি ব্যবসা

হার্ডওয়্যার ও টুলস আইটেমের মধ্যে রয়েছে হাতুড়ি, স্ক্রু-ড্রাইভার, প্লায়ার্স, নাট-বল্টু ইত্যাদি। এসব পণ্যে ২০-৩০% লাভ পাওয়া যায়।

১০. জুতার পাইকারি ব্যবসা

জুতার পাইকারি ব্যবসা বেশ লাভজনক একটি ব্যবসা স্যান্ডেল, ক্যাজুয়াল শু, স্কুল শু, ফুটওয়্যার

গার্মেন্টসের মতো জুতার চাহিদাও সারা বছর একই থাকে। তাই এসব আইটেম নিয়ে ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।

১১. হোম অ্যাপ্লায়েন্স ছোট আইটেম পাইকারি ব্যবসা

হোম অ্যাপ্লায়েন্স আইটেমের মধ্যে রয়েছে পাখা, ব্লেন্ডার, ইলেকট্রিক কেটলি, রাইস কুকার। এসব আইটেমে মুনাফা বেশ ভাল হয়।

আরও পড়ুন: ২০২৫ সালে শুরু করতে পারবেন এমন ১০ টি স্মার্ট ব্যবসার আইডিয়া

সারা বাংলাদেশে জনপ্রিয় পাইকারি বাজারের তালিকা

ঢাকা (Dhaka) পাইকারি বাজার

১. ইসলামপুর

কাপড়, ফ্যাব্রিক, শাড়ি, জামদানি, লেইস, গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ ইত্যাদি আইটেম পাওয়া যায়।

২. চকবাজার

মসলা, শুকনো পণ্য, কিচেন আইটেম, কসমেটিকস, খেলনা ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৩. নিউ মার্কেট গাউছিয়া চাঁদনী চক

জুতা, ব্যাগ, কসমেটিকস, জামাকাপড়, গিফট আইটেম ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৪. কাওরান বাজার

সবজি, মাছ, ফল, মুদি পণ্য, হোটেল সাপ্লাই ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৫. বায়তুল মোকাররম মার্কেট

জামা-কাপড়, জুতা, ক্যাপ, ইসলামিক পোশাক ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৬. গাবতলী গরুর বাজার

গরু, ছাগল পাওয়া যায়।

৭. শ্যামবাজার

মসলা, শুঁটকি, কাঁচা বাজার পণ্য ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৮. বিএনসিসি মার্কেট, মালিবাগ

মোবাইল অ্যাকসেসরিজ, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৯. বরিশল প্লাজা / মোহাম্মদপুর টাউন হল

পোশাক, বাচ্চাদের ড্রেস, হিজাব ইত্যাদি পাওয়া যায়।

১০. চকবাজার

আপনার প্রয়োজন আছে এমন সব ধরণের পণ্য এই বাজারে পাবেন।

চট্টগ্রাম পাইকারি বাজার

১. খাতুনগঞ্জ

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মুদি ও খাদ্যশস্যের পাইকারি বাজার।

(চাল, ডাল, তেল, মসলা, চিনি, নিত্যপণ্য)

২. রিয়াজউদ্দিন বাজার

গার্মেন্টস, লেডিস পোশাক, শাড়ি, জুতা ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৩. আগ্রাবাদ

জুতা, ব্যাগ, ছোট ইলেকট্রনিকস ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৪. আসাদগঞ্জ

হার্ডওয়্যার, ইলেকট্রিক আইটেম ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৫. পতেঙ্গা ফিশারিঘাট

মাছের অন্যতম বড় পাইকারি কেন্দ্র।

সিলেট পাইকারি বাজার

১. বন্দর বাজার

জুতা, স্টেশনারি, পোশাকের বাজার।

২. জিন্দাবাজার

গার্মেন্টস ও কসমেটিকস পাওয়া যায়।

৩. লালবাজার

মুদি ও নিত্যপণ্য পাওয়া যায়।

রাজশাহী পাইকারি বাজার

১. সাহেব বাজার

পোশাক, জুতা, গৃহস্থালি ইত্যাদি পাওয়া যায়।

২. লক্ষ্মীপুর বাজার

মুদি পণ্য পাওয়া যায়।

৩. নিউমার্কেট এলাকা

বিভিন্ন মিক্স পণ্য পাওয়া যায়।

রংপুর পাইকারি বাজার

১. শাপলা মার্কেট

পোশাক, জুতা ইত্যাদি পাওয়া যায়।

২. ভেন্ডাবাড়ী বাজার

সবজি, ফল পাওয়া যায়।

ময়মনসিংহ পাইকারি বাজার

১. নতুন বাজার 

পোশাক, কসমেটিকস, ছোট গৃহস্থালি আইটেম পাওয়া যায়।

২. পুরাতন গুদামঘর এলাকা

মুদি পণ্য, চাল-ডাল ইত্যাদি পাওয়া যায়।

৩. গাঙ্গিনাপাড় মার্কেট

ফ্যাশন ও কসমেটিকস হোলসেল মার্কেট।

খুলনা পাইকারি বাজার

নওয়াবপুর মার্কেট এলাকা

ইলেকট্রনিক্স বাজার।

২. খুলনা নিউ মার্কেট

পোশাক বাজার।

৩. শিববাড়ী মোড় বাজার

মুদি ও কিচেন বাজার।

বরিশাল পাইকারি বাজার

১. চাঁদমারি বাজার

সবজি, মাছ বাজার

২. নাথুলাবাদ বাজার

মুদি পণ্য পাওয়া যায়।

৩. পোর্ট রোড মার্কেট

পোশাক ও জুতা বাজার

কুমিল্লা পাইকারি বাজার

ময়মনসিংহ-পাইকারি বাজার 

১. কান্দিরপাড়

পোশাক, জুতা পাওয়া যায়।

২. টমছমব্রিজ মার্কেট

ইলেকট্রনিক্স বাজার

৩. শহীদ মিনার মার্কেট

কসমেটিকস ও স্টেশনারি আইটেম পাওয়া যায়।

পণ্যভিত্তিক বাংলাদেশে সেরা পাইকারি বাজার

কাপড়/গার্মেন্টস

* ইসলামপুর (ঢাকা)

* নিউ মার্কেট, গাউছিয়া

* রিয়াজউদ্দিন বাজার (চট্টগ্রাম)

কসমেটিকস

* চকবাজার (ঢাকা)

* নিউ মার্কেট

* গাঙ্গিনাপাড় (ময়মনসিংহ)

প্লাস্টিক পণ্য

* বিবির বাজার (ঢাকা)

* চকবাজার

* চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে 

ইলেকট্রনিক্স ও মোবাইল অ্যাকসেসরিজ

* নওয়াবপুর (ঢাকা)

* বসুন্ধরা সিটি (হোলসেল ফ্লোর)

* আগ্রাবাদ (চট্টগ্রাম)

মুদি পণ্য/খাদ্যশস্য

* খাতুনগঞ্জ (চট্টগ্রাম)

* কাওরান বাজার (ঢাকা)

* শ্যামবাজার (ঢাকা)

 জুতা

* গুলিস্তান

* নিউ মার্কেট

* আগ্রাবাদ (চট্টগ্রাম)

মাছ/মাংস

* করতোয়া ফিশ মার্কেট (ঢাকা)

* পতেঙ্গা ফিশারিঘাট (চট্টগ্রাম)

স্টেশনারি

* বাংলাবাজার (ঢাকা)

* নিউ মার্কেট

পাইকারি ব্যবসা শুরু করার খরচ

খরচের বিষয়টি নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন, লোকেশন, স্টক সাইজ এবং পরিবহন খরচ ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে।

তবে আমি এখানে ঢাকায় গড়পড়তা একটি পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে যে আনুমানিক খরচ ও সম্ভাব্য লাভ হতে পারে, তার একটি পরিষ্কার হিসাব দিচ্ছি।

ঢাকা শহরে পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে খরচ (Average Calculation)

মাঝারি সাইজের একটি পাইকারি ব্যবসা ধরে হিসাব করা হয়েছে (স্টক ৩৫ লাখ টাকার)।

১. দোকান ভাড়া / গোডাউন ভাড়া

ঢাকার লোকেশনভেদে

* চকবাজার/ইসলামপুর অঞ্চলে: ১৫,০০০ ৫০,০০০ টাকা/মাস

* কাওরান বাজার/শ্যামবাজার: ২৫,০০০ ৫০,000 টাকা/মাস

* গাউছিয়া/নিউ মার্কেট: ২০,০০০ ৪০,000 টাকা/মাস

* শহরের বাইরে বা গুদাম: ১০,০০০ ৫০,000 টাকা/মাস

সাধারণভাবে: ২০,০০০ ৩০,০০০ টাকা/মাস 

২. স্টক/মাল কেনার খরচ

এটা ব্যবসার মূল ব্যয়।

ঢাকায় ছোট-মাঝারি সাইজে শুরু করলে সাধারণত-

৩ লাখ ১০ লাখ টাকা স্টক দিয়ে শুরু করা যায়।

 উদাহরণ:

* কসমেটিকস (হোলসেল): ৩৫ লাখ

* প্লাস্টিক সামগ্রী: ৪৭ লাখ

* মোবাইল Accessories: ৪ লাখ

* হোম অ্যাপ্লায়েন্স: ৬১০ লাখ

* কাপড়/গার্মেন্টস: ৫১২ লাখ

গড়: ৪৬ লাখ টাকা স্টক নিয়ে শুরু করলে ভালো হয়।

৩. কর্মচারীর বেতন

একজনদুজন দরকার হতে পারে।

১ কর্মচারী: ১০,০০০ ১৫,000 টাকা

২ কর্মচারী: ১৮,০০০ ৩০,000 টাকা

৪. পরিবহন / লোড-আনলোড

ঢাকায় মাসিক ট্রান্সপোর্ট:

৫,০০০ ২৫,000 টাকা

৫. অন্যান্য খরচ

ব্যবসার লাইসেন্স, বিল, রক্ষণাবেক্ষণ: ৫,০০০ ১৫,000 টাকা

প্রাথমিক মোট খরচঃ ৪.৮ লাখ ৬.৮ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করা যায়।

আপনি যদি বড়পড়িসরে শুরু করতে চান, ১০১৫ লাখও লাগতে পারে।

পাইকারি ব্যবসার লাভ কত হতে পারে?

এই ধরণের ব্যবসায় পণ্যভেদে লাভের হার আলাদা হয়। 

সাধারণ লাভের হিসাব:

কসমেটিকস ২০% ৪০%

 প্লাস্টিক প্রোডাক্ট ১৫% ৩০%

মোবাইল Accessories ২০% ৫০%

পোশাক/গার্মেন্টস ১৫% ৩৫%

মুদি পণ্য/খাদ্যশস্য ৫% ১২% (ভলিউম বেশি)

স্যানিটারি/হার্ডওয়্যার ১০% ২৫%

গড় লাভ:

* মাসে বিক্রি যদি হয়: ৪৮ লাখ টাকার,

* লাভ হবে: ৫০,০০০ ১.৮ লাখ টাকা/মাস।

প্রথম ৩৪ মাসে লাভ কম হবে।

৬ মাস পর স্থায়ী কাস্টমার হলে লাভ দ্রুত বাড়ে।

উদাহরণস্বরূপ লাভ হিসাবঃ

ধরুন আপনি ৫ লাখ টাকার স্টক রাখলেন।

* মাসিক বিক্রি ধরলাম: ৬ লাখ টাকা

* লাভ ধরলাম: ২০%

* তাহলে মাসিক লাভ: ১,২০,০০০ টাকা

খরচ বাদ দিয়ে নেট প্রফিট থাকতে পারে: ৬০,০০০ ৯০,০০০ টাকা

কোন পণ্য বিক্রি করলে লাভ বেশি?

ঢাকায় সবচেয়ে লাভজনক হোলসেল পণ্যগুলো

১. মোবাইল অ্যাকসেসরিজ

২ প্লাস্টিক সামগ্রী

৩. কসমেটিকস

৪. জুতা

৫. নার্সারি/ডেকোর স্টাফ

৬. হোম অ্যাপ্লায়েন্স ছোট আইটেম

৭. শিশুদের পোশাক

পাইকারি ব্যবসা নির্বাচনে যেসব বিষয় বিবেচনা করতে হয়

১. বাজারের চাহিদা (Market Demand)

২. পণ্যের লাভের হার (Profit Margin)

৩. প্রাথমিক বিনিয়োগ (Initial Investment)

৪. সরবরাহকারীর স্থায়িত্ব ও উৎস (Supplier Reliability)

৫. প্রতিযোগিতা বিশ্লেষণ (Competition Analysis)

৬.টার্গেট কাস্টমার (Target Customer)

৭. স্টোরেজ ও পরিবহন ব্যবস্থা (Storage & Logistics)

৮. আইনি দিক ও লাইসেন্স (Legal Requirements)

৯. রিস্ক ফ্যাক্টর (Risk Factors) যেমনঃ পণ্য কি দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি আছে? দাম ওঠানামা বেশি হয় কি? নকল পণ্যের ঝুঁকি আছে কিনা?

১০. ব্যবসার লোকেশন (Location Importance)**

১১. মার্কেট কানেকশন ও নেটওয়ার্ক

পাইকারি ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য কার্যকর টিপস

১. বাজার রিসার্চ ছাড়া শুরু করবেন না

২. নির্ভরযোগ্য সাপ্লায়ারের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করুন,

৩. খুচরা দোকানদারদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ুন

পাইকারি ব্যবসার আসল শক্তি হলো “নেটওয়ার্ক”।

৪. দাম প্রতিযোগিতামূলক রাখুন,

৫. নিয়মিত স্টকের হিসাব রাখুন ও নগদ প্রবাহ (Cash Flow) ঠিক রাখুন

৬. গুদাম ও ডেলিভারি সিস্টেম উন্নত করুন

৭. কাস্টমার সাপোর্ট শক্তিশালী রাখুন

৮. হিসাব-নিকাশ ডিজিটাল করুন

৯. নিয়মিত শেখা ও বাজার ট্রেন্ড সম্পর্কে আপডেট থাকা

সারসংক্ষেপ

পাইকারি ব্যবসায় সফলতার মূল চাবিকাঠি হলো চাহিদাসম্পন্ন পণ্য নিয়ে ব্যবসা শুরু করা, শক্তিশালী সাপ্লায়ার নেটওয়ার্ক তৈরি কিরা, খুচরা ক্রেতার সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রাখা, সঠিক দাম, স্টকের নিয়ন্ত্রণ এবং সিস্টেমেটিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments