HomeFreelancing Guidelinesআপওয়ার্ক এবং ফাইবার এ অ্যাকাউন্ট এবং প্রোফাইল তৈরির উপায়

আপওয়ার্ক এবং ফাইবার এ অ্যাকাউন্ট এবং প্রোফাইল তৈরির উপায়

আপওয়ার্ক এবং ফাইবার দুটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস। বিশ্বের নানা প্রান্তের হাজারো ফ্রিল্যান্সার এই দুটি মার্কেটপ্লেসে কাজ করে আয় করছে। তাই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যদি আপনার আগ্রহ এবং কোন বিষয়ে ভাল দক্ষতা থাকে তাহলে আপনিও আপওয়ার্ক এবং ফাইবার থেকে আয় করতে পারবেন ।

কিভাবে আপওয়ার্ক এবং ফাইবার থেকে মার্কেটপ্লেসে প্রবেশ করবেন এবং প্রোফাইল তৈরি করবেন নিচে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কিভাবে আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন? 

Upwork আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খোলা খুব সহজ। আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনার একটি ইমেইল এড্রেস থাকতে হবে কারণ এর মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করা হবে।

আপওয়ার্কে অ্যাকাউন্ট তৈরি 

Upwork sign up  পেইজে গিয়ে একটি ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়ে গেলে আপনাকে প্রোফাইল পূরণ করতে হবে।

আপনি যদি গুগল বা অ্যাপল দিয়ে আপওয়ার্ক এ প্রবেশ করে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বিদ্যমান অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই লগ ইন করতে পারবেন। আপনাকে ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড মনে রাখতে হবে।

আপনি চাইলে অন্য কোন সার্ভিসে ব্যবহৃত হয় নাই এমন নতুন কোন ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে কিছু তথ্য প্রদান করতে হবে যেমন আপনার নাম, লোকেশন ইত্যাদি।

আপওয়ার্কে কিভাবে প্রোফাইল তৈরি করবেন? 

প্রোপোজাল জমা দেওয়ার আগে আপনাকে কমপক্ষে ৫০ ভাগ প্রোফাইল সম্পন্ন করতে হবে। আপনার বেসিক তথ্যের পাশাপাশি যেসব তথ্য দিতে হবে:

প্রোফাইল ছবি: আপনাকে নিজের একটি ছবি আপলোড করতে হবে। কোন গ্রুপ ছবি বা ডিজিটাল কোন মাধ্যম ব্যবহার করা কৃত্রিম ছবি ব্যবহার করা যাবে না।

প্রোফাইল টাইটেল: আপনার প্রোফাইলের টাইটেল দিতে হবে যেখানে আপনার অভিজ্ঞতা, কাজের ধরণ এবং দক্ষতার বিষয় উল্লেখ থাকবে।

বর্ণনা: নিজের সামর্থ্য এবং দক্ষতার দিকগুলো সম্পর্কে কিছু লিখতে হবে এবং আপনাকে কেন হায়ার করা উচিৎ সে ব্যাপারে কিছু লিখতে হবে।

স্কিল ট্যাগ ব্যবহার : আপনা যে স্কিল আছে সেই স্কিল ট্যাগ ব্যবহার করুন যাতে সার্চ রেজাল্টে কোন ক্লায়েন্ট স্কিল ধরে সার্চ করে তাহলে যাতে আপনাকে প্রদর্শন করে।

আপনি যদি ১০০% প্রোফাইল কমপ্লিট করতে পারেন সেটা অবশ্যই খুব ভাল। তবে আপনি চাইলেও প্রথমেই ১০০% কমপ্লিট করতে পারবেন না। সময়ের সাথে সাথে আপনার পোর্টফলিও বাড়বে এবং পরিচিতি ভিডিওতেও পরিবর্তন হবে।

তাই আপনার প্রোফাইল আপডেট চলিতেই থাকবে। নিয়মিত প্রোফাইল আপডেট রাখুন। নতুন কোন দক্ষতা অর্জন করলে বা পোর্টফলিও সমৃদ্ধ হলে সেটা প্রোফাইলে যুক্ত করুন তাতে আপনার প্রোফাইল অনেক শক্তিশালী হবে।

১. প্রাথমিক প্রশ্নের উত্তর দিন

how-to-create-upwork-account

প্রাথমিক পর্যায়ে আপনাকে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে যেমন, একজন স্বাধীন পেশাদার হিসেবে আপনার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। সুন্দর করে অভিজ্ঞতাগুলো উপস্থাপন করুন।

আপনার উদ্দ্যেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। যেমন আপওয়ার্ক কি আপনার আয়ের প্রধান উপায় নাকি আয়ের ২য় উৎস, আপনি কি অভিজ্ঞতা অর্জন করতে আসছেন নাকি জব পাওয়ার চেষ্টা করবেন।  তাই আপনার লক্ষ্য সম্পর্কে আপওয়ার্ক কর্তৃপক্ষকে স্পষ্ট ধারণা দিন। আপনার কাজের অগ্রাধিকার সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে। আপনি যে ধরণের কাজ পড়ে পছন্দ করেন তা তাদেরকে জানান। তবে এসব প্রশ্ন স্কিপ করার অপশন আছে।

২. আপনার কাজ সম্পর্কে তথ্য দিন

আপওয়ার্ক এবং ফাইবার

আপনি কোন ধরণের কাজ করবেন সে বিষয়ে তথ্য দিন। আপনি আপনার প্রোফাইলে সর্বোচ্চ ১৫ টি দক্ষতা উল্লেখ করার সুযোগ পাবেন । এখানে অবশ্যই আপনি যেসব বিষয়ে দক্ষ শুধুমাত্র সেগুলো উল্লেখ করুন। দক্ষতা নেই এমন বিষয় যদি আপনি উল্লেখ করেন তাহলে ক্লায়েন্ট যদি বুঝতে পারে আপনি তার সাথে প্রতারণা করেছেন তাহলে আপনাকে কম রেটিং দিতে পারে । এর ফলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে ।

একজন ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত নিবে আপনাকে সে হায়ার করবে কি করবে না। এজন্য প্রোফাইলে আপনার নিজের সম্পর্কে এবং আপনার কাজ সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে। আপনি যেসব বিষয়ে এক্সপার্ট সে বিষয়গুলো সুন্দর করে অল্প কথায় হাই লাইট করবেন।

৩। দক্ষতার লিস্ট তৈরি করুন

আপনি আপনার প্রোফাইলে সর্বোচ্চ ১৫ টি দক্ষতা উল্লেখ করার সুযোগ পাবেন । এখানে অবশ্যই আপনি যেসব বিষয়ে দক্ষ শুধুমাত্র সেগুলো উল্লেখ করুন। দক্ষতা নেই এমন বিষয় যদি আপনি উল্লেখ করেন তাহলে ক্লায়েন্ট যদি বুঝতে পারে আপনি তার সাথে প্রতারণা করেছেন তাহলে আপনাকে কম রেটিং দিতে পারে । এর ফলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে ।

৪। টাইটেল দিন 

আপনার প্রোফাইলের প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় একটা টাইটেল দিন। টাইটেল ৩৫ শব্দের মধ্যে রাখার চেষ্টা করবেন। ক্লায়েন্টরা যে ধরণের কীওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ করে সে ধরণের কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন । টাইটেল হতে হবে কাজের সাথে সংগতিপূর্ণ।

৫। কাজের ইতিহাস

adding-work-experience-on-upwork-account

আপনি যদি আগে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন সে প্রতিষ্ঠানের নামসহ যে ধরণের কাজ করতেন তা প্রোফাইলে যুক্ত করুন । এর ফলে আপনার প্রোফাইলের ওয়েট বাড়বে । অতীতে কোন প্রজেক্টে কাজ করলে সেটাও উল্লেখ করেন । আপনি চাইলে অন্য ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্মের পারফর্মেন্স এর কথাও উল্লেখ করতে পারেন ।

৬। শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করুন

এই অংশে আপনার স্কুল, ডিগ্রির বিষয়বস্তু ইত্যাদি বিষয় যুক্ত করার সুযোগ দেওয়া হবে। এই অংশে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেওয়ার পাশাপাশি আপনি যদি ট্রেনিং করে থাকেন বা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়ে থাকেন তাহলে সেগুলোও উল্লেখ করুন ।

৭। ভাষা বিষয়ক দক্ষতা উল্লেখ করা

আপনি যেসব ভাষায় দক্ষ বা মোটামুটি কথা চালিয়ে যাওয়ার মত বলতে পারেন সেগুলো প্রোফাইলে উল্লেখ করুন। এর ফলে ওই ভাষাভাষী ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিবে । এমনকি আপনি যদি কাজে একটু কম দক্ষও হয়ে থাকেন তারপরও অনেকে আপনাকে কাজ দিতে চাইবে শুধুমাত্র সহজে যোগাযোগ করার সুবিধার্তে।

৮। বায়ো লেখা 

এই অংশটি হচ্ছে আপনার কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে । একজন ক্লায়েন্ট যখন ফ্রিল্যান্সার খোঁজার জন্য সার্চ বারে সার্চ করে তখন ফ্রিল্যান্সারদের নামের পাশেই তাদের প্রোফাইল ওভারভিউ ভেসে উঠে।

সাধারণত এই ওভারভিউ দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে আপনাকে তারা কাজ দিবে কিনা। সর্বোচ্চ ৫ হাজার অক্ষরের ওভারভিউ লেখার সুযোগ থাকলেও আপনাকে ওভারভিউ লিখতে হবে খুব শুনে। এক্ষেত্রে বিখ্যাত ফ্রিল্যান্সার Morgan Overholt কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

Morgan Overholt এর মতে ওভারভিউ হতে হবে এক বা দুটি ছোট প্যারাগ্রাফের মধ্যে লিখতে হবে । কয়েকটি বিষয় সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরতে বলেছেন। আপনার পেশা এবং অভিজ্ঞতা, আপনি যেসব প্রজেক্টে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং আপনি ক্লায়েন্টের জন্য কি করতে চান এই বিষয়গুলো ছোট দুইটা প্যারাগ্রাফে তুলে ধরুন । তার মতে একটি সুন্দর বায়ো একজন নতুন ফ্রিল্যান্সারকে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে দেয়।

৮। ক্যাটাগরি নির্বাচন করা

একজন ফ্রিল্যান্সার সর্বোচ্চ ১০ টি ক্যাটাগরি নির্বাচন করার সুযোগ পায় । আপওয়ার্ক এসব ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করেই সার্চ রেজাল্টে ক্লায়েন্টদের সামনে ফ্রিল্যান্সারদের প্রোফাইল প্রদর্শন করে থাকে ।

৯। ঘন্টা প্রতি রেট সেট করা

এই পর্যায়ে আপনাকে ঘন্টা প্রতি রেট সেট করতে হবে। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি এই রেট যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারবেন এমনকি প্রপোজাল সাবমিট করার আগেও আপনি রেট পরিবর্তন করতে পারবেন ।

একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনাকে প্রথমে খুব বেশি রেট সেট করা ঠিক হবে না। সময়ের সাথে সাথে অভিজ্ঞতা বাড়লে এবং ভাল ভাল রিভিউ পেলে আপনি রেট বাড়াতে পারবেন । তখন আপনাকে অনেক বেশি অর্থ দিয়েও ক্লায়েন্টরা হায়ার করবে ।

১০। প্রোফাইল পিকচার যুক্ত করুন

অবশ্যই রুচিশীল এবং পরিষ্কার ছবি ব্যবহার করবেন।

  • একক ছবি দিবেন কোন গ্রূপ ছবি দিবেন না ।
  • ছবির সাইজ হবে ২৫০ * ২৫০ পিক্সেল।
  • ফরম্যাট হবে jpg বা png ।

ছবি আপলোড করার পর আপনার যোগাযোগের তথ্য লিপিবদ্ধ করুন । এর মাধ্যমে আপনার প্রোফাইল পূরণ করা কমপ্লিট হয়ে যাবে।

এখন কথা হচ্ছে আপনি যদি ১০০ ভাগ কমপ্লিট করতে পারেন তাহলে সেটা আপনার জন্য অনেক বড় ব্যাপার। এর ফলে আপনার কাজ পাওয়ার সুযোগ কম পূর্ন করা প্রোফাইল থেকে বেশি থাকবে ।

আপনি যদি Rising Talent badge পেতে চান বা Top Rated freelancer হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ১০০ ভাগ প্রোফাইল কমপ্লিট করতে হবে। এর মধ্যে থাকবে,.

  • কমপক্ষে একটি পোর্টফোলিও আইটেম,
  • যেকোন বিষয়ে একটি ডিগ্রি বা ডিপ্লোমা,
  • আপনার অর্জন করা সার্টিফিকেট,
  • ভিডিওর মাধ্যমে নিজের পরিচিতি প্রদান,
  • অভিজ্ঞতা,
  • দক্ষতা,

নিচে একজন টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইল দেওয়া হলো, এটা দেখলে আপনি অনেক কিছু বুঝতে পারবেন ।

আপওয়ার্ক প্রোফাইল

প্রোফাইল তৈরি করার সময় যেসব ভুল করা যাবে না 

১।  নিজেকে বিক্রি করার জন্য অতিরিক্ত কিছু লিখবেন না 

অনেক সময় দেখা যায় ফ্রিল্যান্সাররা তাদের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা যা আছে তার চেয়ে অনেক বেশি দেখায়। এটি কখনো করবেন না কারণ আপনি যখন আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা আপনার প্রোফাইলে লিখবেন তখন সেটা দেখে কোন ক্লায়েন্ট ইম্প্রেসড হয়ে আপনাকে কাজের অর্ডার প্রদান করে আর আপনি তখন যদি আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কাজ করতে না পারেন তাহলে ক্লায়েন্ট আপনাকে প্রতারক মনে করে নেগেটিভ রিভিউ দিবে ।

২।  দক্ষতা এবং ক্যাটাগরিতে গরমিল করা যাবে না 

আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি যেসব দক্ষতা প্রোফাইলে লিখেছেন এবং যে ক্যাটাগরি সিলেক্ট করেছেন তা যেন গরমিল না হয়।

৩।  প্রোফাইলে অতিরিক্ত শব্দ লিখবেন না 

মনে রাখবেন আপনার মত হাজারো ফ্রিল্যান্সার আছে আপওয়ার্ক প্লাটফর্মে তাই ক্লায়েন্টরদেরও এত প্রোফাইল দেখার সময় নেই।  এজন্য আপনাকে টু দ্যা পয়েন্টে লিখতে হবে অর্থ্যাৎ সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যবহুল ডেসক্রিপশন লিখতে হবে।

৪। অস্পষ্ট শিরোনাম

শিরোনাম অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে। আপনার কাজের ক্যাটাগরি এবং দক্ষতার সাথে মিল রেখে শিরোনাম লিখতে হবে।

৫। সঠিকভাবে সার্ভিস রেট না দেওয়া 

অনেকেই আছেন যারা তাদের দক্ষতার এবং অভিজ্ঞতার লেভেল অনুযায়ী তাদের সার্ভিস রেট প্রদান করে না যা তাদের কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দেয়। তাই এই কাজ করা যাবে না ।

আপনি যদি খুব রেট দাবি করেন তাহলে ক্লায়েন্ট আপনার যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করতে পারে আবার অতিবেশি রেট ধার্য করলেও ক্লায়েন্ট আপনাকে এড়িয়ে যেতে পারে তাই বাজার যাচাই করে প্রতিযোগিতামূলক সার্ভিস রেট নির্ধারণ করুন ।

৬। বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল করা 

এটা কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা বড় ইস্যু হয়ে যেতে পারে । প্রোফাইলে ডেসক্রিপশন লেখার সময় এই ব্যাপারে যথেষ্ট মনোযোগ দিতে হবে যাতে কোন প্রকার বানান এবং ব্যাকরণগত ভুল না হয় ।

আরও পড়ুন: 

ফাইবার (Fiverr)

ফাইবার (Fiverr) অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যা আপনাকে জানতে হবে 

প্রথমেই বলে রাখি ফাইবারে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। তবে যাদের বয়স ১৮ এর নিচে এবং ১৩ বছরের উপর তাদের জন্য ফাইবার বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের দরজা খোলা রেখেছে ।  এক্ষেত্রে আপনাকে পিতামাতা অথবা বৈধ অভিবাবকের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যবহার করতে পারবেন ।  এজন্য আপনাকে তাদের এনআইডি ব্যবহার করে ফাইবার অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

ফাইবারে ২ প্রকারের অ্যাকাউন্ট আছে ,

১।  বায়ার অ্যাকাউন্ট : যারা সেলারদের প্রকাশ করা গিগ ক্রয় করে থাকে,

২।  সেলার অ্যাকাউন্ট : যারা গিগ তৈরি করে তাদের সার্ভিস বিক্রি করে থাকে,

ফাইবারে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় বায়ার হিসেবে তারপর আপনি যখন গিগ তৈরি এবং পাবলিশ করতে চাইবেন তার পূর্বে আপনাকে সেলার অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। মনে রাখবেন ফাইবার সেলার অ্যাকাউন্ট শুধুমাত্র ডেস্কটপ দিয়ে খুলতে হয়। আপনি যদি গিগ তৈরি করতে চান তাহলে সেটাও ডেস্কটপ দিয়ে তৈরি করতে হবে।

ফাইবার (Fiverr) এ কিভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি করবেন?

ফাইবারে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফাইবার জয়েন পেজে গিয়ে আপনাকে ইমেইল পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এছাড়া ফেসবুক, গুগল কানেক্ট এবং অ্যাপল কানেক্ট ব্যবহার করেও আপনি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।

তারপর আপনাকে একটি ইউজার নেম দিতে হবে।

আপানাকে মনে রাখতে হবে ইউজার নেম পরিবর্তন করা যায় না

আপনি চাইলে আপনার ডিসপ্লে নাম পরিবর্তন করতে পারবেন । ডিসপ্লে নাম পরিবর্তন করার নিয়ম হচ্ছে লগ ইন করে Switch to selling এ গিয়ে প্রোফাইল পিকচারে ক্লিক করুন । তারপর ডিসপ্লে নামের পাশে  পেন্সিল আইকনে ক্লিক করে নতুন নাম দিয়ে Save Changes এ ক্লিক করুন ।

চতুর্থ ধাপে আপনাকে মেইলের মাধ্যমে যে ভেরিফিক্যাশন কোড দেওয়া হবে সেটি ভেরিফাই করলেই আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে ।

এক্ষেত্রে আপনার বায়ার অ্যাকাউন্ট একটিভ হয়ে হওয়ার পর আপনি সেলার অ্যাকাউন্ট একটিভ করতে পারবেন । এজন্য আপনাকে profile picture > select Become a Seller সিলেক্ট করতে হবে। তারপর আপনাকে সেলার অ্যাকাউন্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে ভিডিও দেখতে হবে এবং বিভিন্ন তথ্য প্রদান করতে হবে।

কিভাবে ফাইবারে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করবেন ?

ফাইবারে একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল আপনাকে অন্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে দিবে। এর মাধ্যমেই আপনি ক্লায়েন্টের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করবেন । আপনার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজ করার আগ্রহ এগুলো যখন আপনি প্রোফাইলে সুন্দর করে উপস্থাপন করবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই ক্লায়েন্ট আপনার গিগ ক্রয় করতে চাইবে ।

ফাইবারে প্রোফাইল তৈরির আগেই ফাইবার আপনাকে একটি সফল প্রোফাইল তৈরির বিষয়ে পরামর্শ দিবে এর মধ্যে রয়েছে:

১। সময় নিয়ে প্রোফাইল তৈরি করুন যাতে মনের মত একটা প্রোফাইল তৈরি করা যায়।
২। প্রোফাইলে আপনার প্রফেশনাল নেটওয়ার্কের লিঙ্ক যুক্ত করে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করুন,
৩। আপনার দক্ষতাগুলো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করুন এর ফলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।।
৪। একটি পরিশকার রুচিশীল প্রোফাইল পিকচার আপলোড করুন। গ্রুপ ছবি, এ আই দিয়ে তৈরি করা ছবি বা সেলিব্রেটির ছবি বা GIF আপলোড করবেন না।
৫। আপনার অ্যাকাউন্টের কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনা করার সুবিধার্থে আপনার আইডি ভেরিফাই করুন।

ফাইবারে যা করা যাবে না 

১। কোন ধরণের প্রতারণামূলক বা ত্রুটিযুক্ত তথ্য প্রদান করা যাবে না।
২। ডুপ্লিকেট অ্যাকাউন্ট তৈরি করা যাবে না।
৩। কাউকে গিগ ক্রয় করার জন্য অনুনয় বিনয় করা যাবে না।
৪। ফাইবারের বাইরে যোগাযোগ করা এবং পেমেন্ট দেওয়া যাবে না।

ফাইবারে প্রোফাইল তৈরি করার ধাপসমূহ:

ধাপ ১ : ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করা

১। আপনার পূরণ নাম প্রদান করবেন। আপনার নাম বাই ডিফল্ট প্রাইভেট করা থাকবে ।
২। ডিসপ্লে নামের ঘরে আপনি যে নাম ক্লায়েন্টের সামনে প্রদর্শন করতে চান সেটি লিখুন।
৩। প্রোফাইল পিকচার সেকশনে প্রোফাইল পিকচার আপলোড করুন । ব্যক্তিগত হলে ব্যক্তিগত ছবি, কোম্পানি হলে কোম্পানির লোগো।

আপওয়ার্ক এবং ফাইবার

৪। ডেস্ক্রিপশনের সেকশনে আপনার নিজের সম্পর্কে একটি সুন্দর করে বর্ণনা দিন। আপনার দক্ষতা, অর্জন, অভিজ্ঞতা এসব বিষয় সুন্দর করে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করুন ।  এখানে আপনি সর্বোচ্চ ৬০০ শব্দ এবং সর্বনিম্ন ১৫০ শব্দের মধ্যে বায়ো লিখার সুযোগ পাবেন ।

৫। ল্যাঙ্গুয়েজ সেকশনে আপনি যেসব ভাষা পারেন এবং সেগুলোর লেভেল সেগুলো যুক্ত করুন। চারটি লেভেল আছে যেমন : Basic, Conversational, Fluent, Native/Bilingual |

ধাপ ২ : পেশাগত তথ্য প্রদান

১। এই আপনার পেশা সম্পর্কে তথ্য দিন। আপনি সেই পেশায় কত সাল থেকে কত সাল পর্যন্ত সেখানে কাজ করেছেন সেটি উল্লেখ করুন ।

২। আপনার কোন কোন বিষয়ে দক্ষতা আছে সেগুলো উল্লেখ করুন ।  ২ থেকে ৫ টি বিষয়ে দক্ষতা উল্লেখ করুন

৩। আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার বিষয় উল্লেখ করুন । কোন ইউনিভারর্সিটি থেকে ডিগ্রি নিয়েছেন, মেজর সাবজেক্ট, গ্র্যাজুয়েশন বছর এগুলো উল্লেখ করুন । এই ঘরটি অপশনাল।  আপনার যদি ইচ্ছে হয় আপনি এই ঘর পূরণ না করেও প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন ।  তবে আপনার যদি ভাল ডিগ্রি থাকে তাহলে উল্লেখ করুন তাহলে আপনার প্রোফাইলের ওয়েট বাড়বে।

৪। আপনার অর্জন করা সার্টিফিকেট বা পুরস্কারের বিষয়টি উল্লেখ করুন । আপনার কোন ওয়েবসাইট থাকলে তার লিংক যুক্ত করতে পারেন ।

ধাপ ৩ : সিকিউরিটি সম্পর্কিত তথ্য দিন

আপনার ইমেইল এবং ফোন নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করে প্রোফাইল তৈরি করা শেষ করুন ।

আশা করি এই লেখা অনুসরণ করলে আপনি  আপওয়ার্ক এবং ফাইবার এ অ্যাকাউন্ট এবং প্রোফাইল তৈরি করতে করতে পারবেন । শুধু তাই নয় আপনি আমাদের পরামর্শ অনুযায়ী আপওয়ার্ক এবং ফাইবার প্রোফাইল তৈরি করলে অবশ্যই সেটি আকর্ষণীয় ও নির্ভুল হবে।

ফাইবার কেন আমার সেলার একাউন্ট এপ্রুভ করছে না?

অনেকেই এই সমস্যায় পড়ে থাকেন। নতুন সেলার একাউন্ট খোলার পর বিভিন্ন কারণে ফাইবার ফাইবার আপনার সেই একাউন্টটি এপ্রুভ না করতে পারে। মূলত যেসব কারণে ফাইবার আপনার একাউন্ট এপ্রুভ করে না সেগুলো হচ্ছে :

১. অসম্পূর্ণ বা ভূল তথ্য প্রদান

ফাইবার একাউন্ট খোলার সময় আপনি যদি অসম্পূর্ণ বা ভূল তথ্য প্রদান করেন তাহলে ফাইবার আপনার তথ্য যাচাই করতে পারবে না। এজন্য ফাইবার কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্ট এপ্রুভ করবে না।

২. ফাইবারের নীতিমালা ভঙ্গ করা

আপনি ফাইবারের নীতিমালা লংঘন করেন বা পূর্বে ফাইবার নিষিদ্ধ কোন কাজ করে থাকেন তখন আপনার একাউন্ট রিজেক্ট হতে পারে।

৩. বয়সের সীমাবদ্ধতা

৩. ফাইবারে একাউন্ট খুলতে কমপক্ষে ১৩ বছর লাগে তাই আপনার বয়স ১৩ এর কম হলে আপনার একাউন্ট এপ্রুভ হবে না।

৪. মানহীন অথবা অসঙ্গতিপূর্ণ সার্ভিস

আপনার অফার করা সার্ভিস যদি ফাইবারের কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী না হয় অথবা অসঙ্গতিপূর্ণ, অবৈধ বা অনৈতিক হয় তাহলে ফাইবার আপনার একাউন্ট এপ্রুভ করবে না।

৫. একাধিক একাউন্ট

আপনি যদি একাধিক একাউন্ট খুলেন তাহলে তারা আপনার এক বা একাধিক একাউন্ট রিজেক্ট করে দিতে পারে। ফাইবারের নিয়ম অনুসারে একজন ব্যক্তি একটি একাউন্ট খুলতে পারে।

৬. ভৌগোলিক নিষেধাজ্ঞা

ফাইবার অনেক সময় তাদের নিরাপত্তা এবং আইনগত কারণে কোন ভৌগোলিক অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা বা একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে। .

পরামর্শ

ফাইবার একাউন্ট খোলার সময় সঠিক তথ্য প্রদান করুন যাতে তারা আপনার তথ্য সহজে যাচাই করতে পারে। তাদের গাইডলাইন অনুসারে বৈধ, সঙ্গতিপূর্ণ এবং উচ্চ মানসম্পন্ন সার্ভিস অফার করুন।

যদি ফাইবার আপনার সেলার একাউন্ট এপ্রুভ না করে তাহলে আপনি ফাইবার কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করে একাউন্ট এপ্রুভ না করার কারণ জিজ্ঞেস করুন এবং একাউন্ট এপ্রুভ করার জন্য তাদের গাইডলাইন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন।

ফাইবার আমার একাউন্ট নিষিদ্ধ করলো কেন? এখন আমি কি নতুন একাউন্ট খুলবো?

ফাইবার তাদের গাইডলাইন অনুসারে গিগ তৈরি না করলে বা নীতিমালা বহির্ভূত অবৈধ কোন কাজ করলে আপনার একাউন্ট নিষিদ্ধ করতে পারে। এই পর্যায়ে আপনি যদি অন্য কোন মেইল এড্রেস, অন্য পেওনিয়ার অ্যাকাউন্ট, ফোন বা আইপি ব্যবহার করে নতুন একাউন্ট তৈরি করতে চান তাহলে ফাইবার আপনাকে আবার নিষিদ্ধ করবে। তাই আপনার উচিৎ হবে ফাইবার কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করে পুরাতন একাউন্ট এর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সমাধান করা।

বায়ারকে রিকোয়েস্ট পাঠানোর পর ফাইবার কেন রিকোয়েস্ট বাতিল করলো?

আপনার বায়ার রিকোয়েস্ট যদি ফাইবার সার্ভিস বা কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড নীতিমালা লংঘন করে তখন ফাইবার সেই রিকোয়েস্ট ক্যানসেল করতে পারে। অর্থাৎ আপনার রিকোয়েস্ট যদি অবৈধ,  অনৈতিক, আগ্রাসী মনোভাবসম্পন্ন হয় বা স্প্যাম, প্রতারণা বা অন্যের জন্য ক্ষতিকর হয় তখন ফাইবার আপনার বায়ার রিকোয়েস্ট বাতিল করে দিতে পারে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments