HomeFreelancing Guidelinesআকর্ষণীয় ফাইবার গিগ তৈরির পদ্ধতি। উদাহরণসহ আলোচনা

আকর্ষণীয় ফাইবার গিগ তৈরির পদ্ধতি। উদাহরণসহ আলোচনা

আমাদের দেশের অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য প্রতিনিয়ত ফাইবারে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে একটা বড় অংশই কিভাবে ফাইবার গিগ তৈরি করতে হয় সে ব্যাপারে ভাল ধারণা নেই।

ফাইবার তৈরি সম্পর্কে অল্প ধারণা থাকায় তারা গিগ পাবলিশ করলেও সেটি ভাল পারফর্ম করছে না। ইম্প্রেশন এবং ক্লিকের পরিমান কম হওয়ার কারণে তারা দ্রুতই হতাশ হওয়া শুরু করে। শুধুমাত্র কম জানার কারণেই তাদের সম্ভাবনাময় ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়ে যায়। তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই আমার আজকের এই লেখা।

ফাইবার গিগ তৈরি করার ১০ টি সহজ ধাপ 

ফাইবার গিগ তৈরি করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন :

১. প্রোফাইলে উল্লেখিত তথ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফাইবার গিগ তৈরি করুন

ফাইবার এলগরিদম এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে কেউ সার্চ বারে কোন কিছু খুঁজলে যেন সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক রেজাল্ট দেখানো যায়। এক্ষেত্রে ফাইবার সার্চ রেজাল্ট পেজে সেসব গিগ প্রদর্শন করে যেগুলোর সাথে কীওয়ার্ড প্রাসঙ্গিকতা আছে এবং প্রোফাইলের সাথে ম্যাচিং হবে।

সুতরাং উপরের কথা থেকে বুঝতেই পারছেন আপনাকে এমনভাবে গিগ তৈরি করতে হবে যা আপনার প্রোফাইলে উল্লেখ করা দক্ষতার সাথে থাকবে।

যেমন আপনি যদি প্রোফাইলে লিখেন আপনি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এ ১০ বছরের অভিজ্ঞ তাহলে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সার্চে ফাইবার আপনার গিগকে অনেক উপরের দিকে প্রদর্শন করবে। অর্থাৎ আপনার প্রোফাইল এ উল্লেখিত বিষয় আপনার গিগ র‍্যাংককে প্রভাবিত করে।

এখন যদি আপনি ওয়েব ডেভেলপার হয়ে অন পেজ এসইও এর গিগ তৈরি করতেন তাহলে সেটিকে ফাইবার এড়িয়ে যেত। তাই গিগ তৈরি করার সময় খেয়াল রাখবেন সেটা যেন আপনার প্রোফাইলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

আরও পড়ুন: আপওয়ার্ক এবং ফাইবার এ অ্যাকাউন্ট এবং প্রোফাইল তৈরির উপায়

২. এসইও সমৃদ্ধ ফাইবার গিগ তৈরি করুন

একটি আকর্ষণীয় ফাইবার তৈরি করতে হলে অবশ্যই আপনাকে এসইও সমৃদ্ধ ফাইবার গিগ তৈরি করতে হবে। এসইও ছাড়া ফাইবার গিগ তৈরি করলে সেটা সার্চবারে প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।

কীওয়ার্ড রিসার্চ করে আপনার সার্ভিসের সাথে প্রাসঙ্গিক সব কীওয়ার্ড খুঁজে বের করুন। তারপর সেগুলো আপনার ফাইবার গিগ টাইটেল এবং ডেস্ক্রিপশনে ব্যবহার করুন।

যেমন ধরেন আপনি একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার তাই আপনি ফাইবারে সোশ্যাল মিডিয়ায় ম্যানেজার হিসেবে সার্ভিস প্রদানের জন্য একটি গিগ তৈরি করবেন। তাহলে আপনার কীওয়ার্ড হবে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি। এসব কীওয়ার্ড দিয়ে যখন কেউ সার্চ করবে তখন ফাইবার সার্চ বারে আপনার গিগ সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শন করবে।

তাই একটি আকর্ষণীয় ফাইবার গিগ তৈরি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই গিগ এর মনে ভেতর সার্ভিস রিলেটেড কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।

৩. একটু নতুন ফাইবার গিগ তৈরি করা

একটি নতুন ফাইবার গিগ তৈরির প্রথম ধাপ হচ্ছে প্রোফাইলকে Seller মোডে সেট করতে হবে। একেবারে উপরে ডান দিকে আপনার প্রোফাইল ছবিতে ক্লিক করলেই Seller মোডে যাওয়ার অপশন পাবেন। আপনার প্রোফাইলে গিয়ে Gigs থেকে create a new GIG এ ক্লিক করুন।  নতুন ফাইবার গিগ তৈরি করার আগে Get Briefs এবং Custom Offers toggle বাটনে ক্লিক করে রাখুন।

Get Brief বাটনের মাধ্যমে আপনার সক্রিয় থাকা গিগে মিনিমাম রেট সেট করতে পারবেন। আর Accepting Custom Offers দ্বারা গ্রাহককে বুঝানো হয় যে এখানে দরকষাকষির সুযোগ আছে বা বায়ার তার প্রয়োজন অনুযায়ী সার্ভিস যুক্ত করতে পারবে।

এরপর Create a new gig বাটনে ক্লিক করুন।

৪. গিগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিন

ফাইবার গিগ তৈরির প্রথম ধাপে গিগ টাইটেল, গিগ ক্যাটাগরি এবং অন্যান্য মেটাডেটা যুক্ত করতে হবে।

একটি উপযুক্ত টাইটেল লিখুন

একটি উপযুক্ত টাইটেল ফাইবার গিগ র‍্যাংকিং এর জন্য যেমন প্রয়োজন তেমনি বায়ারের ক্লিক পাওয়ার জন্যও অনেক দরকারি। যেহেতু একজন বায়ার যখন সার্চ বারে সার্চ করে তখন আপনার গিগের নিচে শুধু গিগ টাইটেল প্রদর্শিত হয় তাই বায়ার ক্লিক পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই সার্ভিস সম্পর্কিত সবাই বুঝতে পারে এমন ভাষায় সংক্ষিপ্ত একটি টাইটেল লিখতে হবে।

আরও পড়ুন: ফাইবার গিগ টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন লিখার কিলার টিপস!

গিগ ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুন

এমন একটি ক্যাটাগরি সিলেক্ট করুন যার সার্চ ভলিউম অনেক কিন্তু প্রতিযোগিতা কম। এই ধরণের ক্যাটাগরি এবং সাবক্যাটাগরি নির্বাচন করার ক্ষেত্রে আপনাকে খুব সুনির্দিষ্ট হতে হবে।

মনে করুন আপনি একজন লেখক তাই স্বাভাবিকভাবেই Writing হবে ক্যাটাগরি এবং আর্টিকেল ও ব্লগ রাইটিং হবে সাবক্যাটাগরি। অনেক সময় দেখা ক্যাটাগরির চেয়ে সাবক্যাটেগরিতে অনেক বেশি প্রতিযোগিতা হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে বায়ারের লোকেশন এবং ইন্ডাস্ট্রি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট হতে হবে।

যেমন আপনি গিগ টাইটেল দিতে পারেন: I will write a killer blog post for you on American Insurance Sector. এর ফলে আপনি উভয় ক্যাটাগরি ম্যানেজ করতে পারবেন এবং সুনির্দিষ্ট বায়ারকে আকর্ষণ করতে পারবেন। একে বলে এক ঢিলে দুই পাখি মারা।

মেটা ডেটা পূরণ করুন

মেটা ডেটা হচ্ছে গিগ সম্পর্কিত অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য যা একজন বায়ারকে সেলারের গিগ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা প্রদান করে। ফাইবার তাদের প্লাটফর্ম এমনভাবে সাজিয়েছে তাতে বায়াররা খুব সহজে তাদের পছন্দের সার্ভিস ক্রয় করতে পারে ।

গিগ এর ওভারভিউ এমনভাবে সাজানো হয়েছে কেউ যদি সকল তথ্য দিয়ে একটি গিগ তৈরি করে তাহলে বায়ারকে সেলারের সার্ভিস সম্পর্কে খুব বেশি জানার থাকে না। এর ফলে বায়ার খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং ফাইবার এতে লাভবান হচ্ছে ।

গিগ তৈরি করার সময় ক্যাটাগরি এবং সাবক্যাটাগরি নির্বাচন করার পর আরো বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য এই অংশটি পূরণ করতে হয়। ধরেন আপনি Content Writing ক্যাটাগরি নির্বাচন করলেন তাহলে সেখানে আরো তথ্য পূরণের ঘর আসবে যেমন ভাষা, টপিক, টোন(Tone), আর্টিকেল টাইপ ইত্যাদি ।

সার্চ ট্যাগ নিবাচন করুন

সার্চ ট্যাগ হচ্ছে কীওয়ার্ড যা একজন গিগ সেলার তার গিগে যুক্ত করেন এই আশায় যে বায়ার যদি এই কীওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ করে তাহলে যেন তার গিগটি প্রথম পেজে প্রদর্শিত হয়।

সার্চ ট্যাগ এর মাধ্যমে ফাইবার এলগরিদম একজন সেলার কি সার্ভিস দিচ্ছে সে সম্পর্কে বুঝতে পারে। একটি গিগে সর্বোচ্চ ৫ টি সার্চ ট্যাগ ব্যবহার করা যায়।

উপরে আমি যে টাইটেল ব্যবহার করেছি তা হলো “I will write a killer blog post for you on American Insurance Sector”। এই আর্টিকেলের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সার্চ ট্যাগ হতে পারে blog writing, Insurance, American, Writer, best। এই সার্চ ট্যাগগুলো আপনার গিগের গুরুত্বকে তুলে ধরবে এবং সার্চ রেজাল্টে আপনার গিগ র‍্যাংকিং এ সাহায্য করবে । কেউ যদি উপরের শব্দগুলো দিয়ে সার্চ করে তাহলে আপনার গিগ সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

৫। ফাইবার গিগ মূল্য নির্ধারণে কৌশলি হতে হবে

প্রথমদিকে ফাইবারের মূল কনসেপ্ট ছিল অল্প মূল্যে অর্থাৎ মাত্র ৫ ডলারে সার্ভিস পাওয়ার সুযোগ। সময় পরিবর্তন হয়েছে সার্ভিস মূল্য বেড়েছে কিন্তু কমপক্ষে ৫ ডলারের নিয়ম এখনো রয়ে গেছে।

একজন ফ্রিল্যান্সার এই জায়গায় এসে চিন্তায় পড়ে যায়। ঠিক কত মূল্য ধার্য করলে সে গিগটি বিক্রি করতে পারবে । খুব বেশি মূল্য ধার্য করলে দেখা যাবে বায়ার দাম দেখে এড়িয়ে যাচ্ছে আবার খুব কম দাম ধার্য করলে অনেকে কাজের মান নিয়ে সন্দেহ করে এড়িয়ে যেতে পারে।

তাহলে কিভাবে একটি ফাইবার গিগ এর মূল্য নির্ধারণ করবেন? ফাইবার গিগ এর মূল্য নির্ধারণে ৩ টি বিষয় মাথায় রাখবেন: বর্তমান বাজার পরিস্থিতি, গিগ প্রতিযোগিতা একই গিগসমূহের মূল্যকাঠামো।

একেবারে নতুন সেলার হিসেবে আপনি ৫ ডলারে আপনার সার্ভিস শুরু করতে পারেন তবে বড় কাজের ক্ষেত্রে সেটা আবার মানানসই হবে না।

আসুন জেনে নিই ফাইবার গিগ এর Scope & Pricing ইন্টারফেস সম্পর্কে।

প্যাকেজ তৈরি করে ফাইবার গিগ বিক্রি

আপনি তিনটি প্যাকেজে গিগ বিক্রি করতে পারবেন। তিনটি প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে বেসিক, স্ট্যান্ডার্ড এবং প্রিমিয়াম। বায়ার আকর্ষণ করার জন্য তিনটি প্যাকেজের আলাদা করে দৃষ্টি আকর্ষক নাম প্রদান করুন। প্যাকেজের নামের পাশাপাশি ১০০ অক্ষরের মধ্যে প্যাকেজ সম্পর্কে বর্ননা দিন।

বেসিক প্যাকেজে সার্ভিসের পরিমাণ কম হয় তাই সার্ভিস প্রাইসও কম হবে। সার্ভিস ডেলিভারি টাইমও কম হবে। স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজে সার্ভিসের পরিমাণ এবং প্রাইস বেসিকের তুলনায় বেশি হবে। প্রিমিয়াম প্যাকেজে সার্ভিস, প্রাইস এবং ডেলিভারি সময় সবকিছু বেশি হবে।

Basic Package: ২টি লোগো কনসেপ্ট, ৩টি রিভিশন, ডেলিভারি ৩ দিনের মধ্যে।
Standard Package: ৩টি লোগো কনসেপ্ট, ৫টি রিভিশন, ডেলিভারি ২ দিনের মধ্যে।
Premium Package: ৫টি লোগো কনসেপ্ট, আনলিমিটেড রিভিশন, ডেলিভারি ১ দিনের মধ্যে।

উদাহরণ:

Basic Package:
Price: $20
2 logo concepts + 3 revisions + 3 days delivery.
Standard Package:
Price: $50
3 logo concepts + 5 revisions + 2 days delivery.
Premium Package:
Price: $100
5 logo concepts + unlimited revisions + 1-day delivery.

তবে একেবারে নতুন হলে বেসিক প্যাকেজ ৫ ডলার, স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজ ১০ ডলার এবং প্রিমিয়াম প্যাকেজ ১৫ ডলার এভাবে প্রাইসিং করতে পারেন। তবে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে আপনি আপনার প্রাইস বাড়াতে পারবেন। কারণ অনভিজ্ঞ সেলারকে বেশি প্রাইস দিতে ইচ্ছুক না হলে অভিজ্ঞদের পেছনে অর্থ ব্যয় করতে বায়াররা কুন্ঠাবোধ করে না। প্রাইসিং এর ক্ষেত্রে ভৌগোলিক অবস্থান একটা ফ্যাক্টর।

যেমন আমরা বাংলাভাষী এখন একজন আমেরিকান ক্লায়েন্ট স্বাভাবিকভাবেই অ-ইংরেজী ভাষাভাষী কারও থেকে বেশি দামে সার্ভিস কিনবে না। তাই এসব সার্ভিসের ক্ষেত্রে আপনাকে নেটিভদের তুলনায় কম প্রাইস সেট করতে হবে।

আবার খুব বেশি প্রতিযোগিতাসম্পন্ন কাজের সেক্টর হলে অন্যান্য গিগ সেলারের চেয়ে কিছুটা কম মূল্য ধার্য করলে গিগ বিক্রয় এর ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যাবে। কিন্তু বেশি কম প্রাইসিং করবেন না তাতে বায়ার আপনাকে মানহীন মনে করে অর্ডার নাও করতে পারে।

গিগ বেশি মূল্যে বিক্রয় করার ক্ষেত্রে পোর্টফলিও একটা ফ্যাক্টর। আপনার প্রোফাইলে যদি একটা ভাল পোর্টফলিও থাকে তাহলে আপনি চাইলেই গিগের মূল বেশি ধার্য করতে পারেন।

গিগ এক্সট্রা যুক্ত করতে পারেন। এটাকে অতিরিক্ত সার্ভিস বলা হয়। গিগ এর সার্ভিস এর বাইরে আপনি যদি অতিরিক্ত কোন সার্ভিস দিতে চান তাহলে আপনি অতিরিক্ত কিছু আয় করতে পারেন। যেমন আপনি আর্টিকেল রাইটিং এর পাশাপাশি ফিচারড ছবি বা ইনফোগ্রাফিক অফার করতে পারেন। এ জন্য আপনি অতিরিক্ত অর্থ দাবি করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: ফাইবার গিগ মার্কেটিং করার ৭ টি সেরা টেকনিক

৬. সুন্দর করে একটি বর্ণনা লিখুন

সর্বোচ্চ ১২০০ শব্দের মধ্যে আকর্ষণীয় একটি বর্ণনা লিখুন। মনে রাখবেন এই অংশটি আপনাকে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে দিবে।

এই অংশে আপনাকে সার্ভিস সম্পর্কিত কীওয়ার্ড ন্যাচারালি বর্ণনার বিভিন্ন জায়গায় বসাতে হবে। কারণ যত বেশি কীওয়ার্ড বসাবেন তত বেশি সার্চ রেজাল্টে প্রদর্শিত হওয়ার সুযোগ বাড়বে। আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাগুলো বুলেট পয়েন্টে হাইলাইট করে দিবেন । আপনি কেন অন্যদের চেয়ে সার্ভিস প্রদানের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন সেটা পরিমিত ভাষায় ফুটিয়ে তুলুন। তবে অতিরঞ্জিত কিছু লিখবেন না এতে আপনার সুনাম নষ্ট হবে ।

৭. FAQ সেকশন পূরণ করুন

আপনার সার্ভিস সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তৈরি করুন এবং ৩০০ শব্দের ভেতর প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করুন। এই অংশে এমন সব প্রশ্ন উত্তর তৈরি করুন যেগুলো বায়াররা সাধারণত জানতে চায়। আপনি নতুন হলে অন্যদের গিগ দেখে এই সম্পর্কে ভাল একটা ধারণা পেয়ে যাবেন। উপরের ছবিতে দেখুন একজন লোগো ডিজাইনার তার FAQ সেকশনে কি ধরণের প্রশ্ন সেট করেছে।

এই অংশেও প্রশ্ন এবং উত্তরের মাঝেও সার্ভিস সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড যুক্ত করুন।

প্রতিটি FAQ সেকশনে আপনি ১০ টি প্রশ যুক্ত করতে পারবেন। এই সেকশনে ফাইবার অনুমোদিত লিস্টের ইউরাল ব্যবহার করতে পারবেন। কোন যোগাযোগের ঠিকানা যুক্ত করতে পারবেন না।

৮. বায়ারকে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করুন

একটি কাজ পাওয়ার সাথে সাথেই শুরু করতে যাবেন না। সাধারণত নতুন সেলাররা এই ভুল করে থাকে। তারা কাজটি কিভাবে করবে সেব্যাপারে বায়ারকে প্রশ্ন না করেই কাজ করে ফেলে।

এর ফলে বায়ার তার কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট হয় এবং খারাপ রিভিউ প্রদান করে যা তার ফাইবার ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলে দিবে। এজন্য কাজ শুরু করার আগে বায়ারকে প্রয়োজনীয় প্রশ্ন করে নিজে নিন সে আপনার কাছে কি ধরণের সার্ভিস প্রত্যাশা করছে।

ফাইবার আপনাকে তিনভাবে প্রশ্ন করার সুযোগ দিবে।  ১. Free Text ২. Multiple Choice ৩.  Attachment

৯. একটি গিগ গ্যালারি তৈরি করুন

প্রতিটি গিগে আপনি ৩ টি পর্যন্ত ইমেজ যুক্ত করার সুযোগ পাবেন, এছাড়া ১ টি ভিডিও এবং ২ টি পিডিএফ যুক্ত করতে পারবে যা গিগে ক্লিক বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে। সর্বোচ্চ ৫ জিবি পর্যন্ত আপলোড করতে পারবেন। ইমেজ সাইজ 280px x 769px (at 72 DPI) হলে ভাল হয়।

ফাইবার গিগে ক্লিক পাওয়ার জন্য এই সেকশনটি খুবই বড় ভূমিকা পালন করে। আপনি যদি চমকপ্রদ ছবি তৈরি করতে পারেন তাহলে শুধুমাত্র ছবির কারণেই আপনার গিগে ক্লিক আসতে পারে ।

ভিডিও আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে অনেক সাহায্য করবে কারণ ভিডিওতে একজন বায়ার আপনাকে সরাসরি দেখার সুযোগ পায়। আপনার সুন্দর উপস্থাপনা বায়ারকে আকর্ষিত করবে এবং আপনাকে হায়ার করতে সে স্বাচ্ছন্দবোধ করবে। ভিডিও ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে হতে হবে এবং সাইজ ৫০ এমবির মধ্যে থাকতে হবে।

MP3 এবং MPEG ফরমেটে ৩:৩০ মিনিটের মধ্যে এবং ১০ এমবির ভেতর একটি অডিও প্রকাশেরও সুযোগ পাবেন।

পিডিএফ এ আপনি আপনার পূরণের কাজগুলো সুন্দর করে বিস্তারিত বর্ণনা করতে পারেন। এর ফলে আপনার গিগ বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

১০. গিগ প্রকাশ করুন

সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর এবার আপনার গিগ প্রকাশ করার পালা। পাবলিশ বাটনে ক্লিক করে গিগ পাবলিশ করুন এবং গিগ ইউআরএল (URL) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করুন।

পাঠক জিজ্ঞাসা 


ফাইবার গিগ কি ফ্রিতে পোস্ট করা যায়?

হ্যাঁ ফাইবার গিগ পোস্টিং একেবারে ফ্রি। আপনি সেলার একাউন্ট তৈরি করার পর ফ্রিতেই গিগ তৈরি করতে পারবেন।

কতগুলো ফাইবার গিগ তৈরি করা যায়?

ফাইবার আপনাকে ৭ টি পর্যন্ত গিগ তৈরি করার সুযোগ দিবে। কিন্তু আপনাকে এমনভাবে গিগ তৈরি করতে হবে যাতে তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকে। কথা এবং সার্ভিসের মধ্যে কিছু ভিন্নতা রাখবেন এবং নতুন গিগ বায়ার টার্গেট করে গিগ তৈরি করবেন।

ফাইবার কেন আমার গিগ পাবলিশ করলো না?

অনেক সময় দেখা যায় একজন সেলার গিগ পাবলিশ করার পর ফাইবার সেটিকে একটিভ করে না। এর কারণ হচ্ছে আপনার গিগ ফাইবার এর শর্ত এবং নীতিমালা অনুযায়ী পাবলিশ করা হয় নাই।

ফাইবার আপনাকে গিগ পাবলিশ না করার কারণ জানিয়ে ইমেইল করবে। যদি আপনার মতো নে হয় ফাইবার আপনার গিগ পাবলিশ না করার যে কারণ দেখিয়েছে তা আপনার দৃষ্টিতে ঠিক হয় নাই তাহলে আপনি ফাইবার কাস্টমার সাপোর্ট সেন্টারে যোগাযোগ করে আপনার বক্তব্য জানিয়ে গিগ পাবলিশ করার আবেদন করতে পারবেন।

কিভাবে ফাইবার গিগ অপ্টিমাইজ করবেন?

ফাইবার এলগরিদম এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা আপনার গিগ পাবলিশ করার পরে সতর্কভাবে আপনার গিগকে পর্যবেক্ষণ করবে। দেখবে বায়ার কিভাবে আপনার গিগ এর প্রতি কি রকম ব্যবহার করছে। যদি দেখে ভাল প্রতিক্রিয়া পাচ্ছে তখন ফাইবার সেটিকে ভাল র‍্যাংক দিয়ে থাকে।

তাই গিগ পাবলিশ করার পর গিগ এর পারফরম্যান্স ভালভাবে চেক করুন। এজন্য গিগ পাবলিশ করার পর কিছু আপনাকে এটি পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। গিগ মেট্রিক্স ড্যাশবোর্ডে গিগ ইম্প্রেশন, ক্লিক, অর্ডার এবং ক্যান্সেল এসব বিষয় সম্পর্কে জানা যায়।

যদি দেখেন আপনার গিগ পারফরম্যান্স ভাল না তাহলে যেসব গিগ ভাল পারফর্ম করছে তাদের গিগ বিশ্লেষণ করুন এবং তাদের গিগ কেন ভাল করছে সেটা বের করুন এবং সে অনুযায়ী গিগ অপ্টিমাইজ করুন।

কিভাবে ফাইবার গিগ শেয়ার করবো?

ফাইবার গিগ শেয়ার করার জন্য “My Business” প্রবেশ করে ” Gigs” থেকে আপনি যে গিগটি শেয়ার করবেন সেটি ড্রপ ডাউন বক্স থেকে সোশ্যাল আইকনে ক্লিক করে শেয়ার করুন।

কখন ফাইবার গিগ পাবলিশ করলে ভাল হয়?

বিভিন্ন টাইম জোন, কাজের শিডিউল এবং অনলাইনে উপস্থিতি এসব বিষয় বিবেচনা করে সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে গিগ পাবলিশ না করাই ভাল। কারণ অনেকেই আছেন যারা বন্ধের দিন কোন কাজ করতে চায় না। তাই সাপ্তাহিক বন্ধের দিন ছাড়া অন্য সময় গিগ পাবলিশ করুন।

ফাইবার কেন সার্চ রেজাল্ট থেকে আমার গিগ সরিয়ে ফেলেছে?

ফাইবার সার্চ রেজাল্ট থেকে গিগ সরিয়ে নেওয়ার কয়েকটা সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে:
১. গিগ পারফরম্যান্স ভাল না,
২. নেগেটিভ ফিডব্যাক
৩. ফাইবার সার্ভিস টার্মস ভঙ্গ করা ইত্যাদি।

ফাইবারে গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক কমে যাওয়ার কারণ কি?

“ফাইবার গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক কমে যাচ্ছে” এটি একটি কমন প্রশ্ন। বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার তাদের ফ্রিল্যান্সিং লাইফে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।

এই সমস্যার বেশ কিছু কারণ আছে, সেগুলো হচ্ছে :.

১. ফাইবারে দ্রুত নতুন ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে

বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার কারণে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম হিসেবে ফাইবারে প্রতিদিন নতুন ফ্রিল্যান্সার যোগ হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ ফ্রিল্যান্সার যোগ দেওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই আপনার গিগ ইম্প্রেশনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

যেমন ধরেন, আপনি জানুয়ারি মাসে অন্য ১০০ জনের মত একটি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর গিগ তৈরি করলেন, গিগ তৈরি করার সময় আপনার প্রতিযোগিত ছিল মাত্র ১০০ জন এই কারণে আপনার গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক এর পরিমাণ অনেক বেশি ছিল। কিন্তু একই বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আপনি দেখবেন একই গিগ আরো ৫০০ জন তৈরি করে ফেলেছে। সংগত কারণেই তখন আপনার গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক কমে যাবে।

২. গিগ রোটেশন (Gig Rotation)

ফাইবার তাদের এলগরিদম এমনভাবে সেট করে যেখানে সবাইকে কাজ পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ গিগ রোটেশন সিস্টেম ব্যবহার করে গিগের র‍্যাংকিং পরিবর্তন করে। এর ফলে আপনার গিগ সবসময় প্রথম পেইজে থাকবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই।

৩. গতানুগতিক গিগের নেতিবাচক প্রভাব

একসময় আপনি যে গিগ তৈরি করে ভাল গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক পেয়েছেন সেটা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে যাবে। কারণ ফাইবার মার্কেট প্লেসে প্রতিনিয়ত নতুন ফ্রিল্যান্সার যোগ হচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে তাদের গিগ ছবি, ভিডিও এবং ডেস্ক্রিপশন আপনার পুরাতনদের থেকে অনেক ভাল হচ্ছে।

করণীয় : আপনাকে নিয়মিত গিগ আপডেট করতে হবে যাতে আপনার গিগ একেবারে ফ্রেশ মনে হয়। আরেকটা বড় বিষয় হচ্ছে আপনার প্রতিযোগিদের গিগ বিশ্লেষণ করতে হবে। কেন তাদের গিগ আপনাকে টপকে শীর্ষে চলে গেল সেটা বের করতে হবে। তাদের গিগের এর তুলনায় আপনার গিগকে উন্নত করার চেষ্টা করতে হবে। ফ্ল্যাশি এবং আকর্ষণীয় ভিজুয়াল ব্যবহার করে গিগ ইম্প্রেশন এবং ক্লিক বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments