HomeDigital MarketingSEOপেইজ লোড স্পিড বাড়ানোর কিছু সেরা টেকনিক

পেইজ লোড স্পিড বাড়ানোর কিছু সেরা টেকনিক

ওয়েবসাইটের পে লোড স্পিড বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা এবং সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পেইজের ধীর লোডিং  ব্যবহারকারীদের বিরক্ত করে এবং তারা সাইট ত্যাগ করতে পারে, এর বাউন্স রেট বেড়ে যায়। নিচে পেইজ লোড স্পিড বাড়ানোর কিছু কার্যকর কৌশল দেওয়া হলো:

পেইজ লোড স্পিড বাড়ানোর উপায়

পেইজ লোড স্পীড বাড়ানোর বিভিন্ন উপায় আছে, নিচে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :

১. পেইজ লোড স্পীড বাড়াতে ছবি কমপ্রেস এবং অপটিমাইজ করুন

বড় এবং উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি ওয়েবসাইট লোড করতে সময় নেয়। ছবি কম্প্রেস করার মাধ্যমে তাদের সাইজ ছোট করে পেজ স্পিড বাড়ানো যায়।

কৌশল:

পেজ লোড স্পীড অপটিমাইজেশন

ছবি কমপ্রেস করার জন্য LiteSpeed Cache plugin, TinyPNG বা JPEG-Optimizer এর মতো টুল ব্যবহার করুন।

আমি LiteSpeed Cache plugin ব্যবহার করি।  এই প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি খুব সহজে ইমেজ অপ্টিমাইজ করতে পারবেন । প্লাগিনের ইমেজ অপটিমাইজেশন অপশন থেকে আপনি ইমেজ অপ্টিমাইজ করতে পারবেন ।

আপনি যদি WebP ফরম্যাটে ছবি ব্যবহার করেন সেটা আপনার জন্য ভাল হবে কারণ এটি JPEG বা PNG এর চেয়ে কম সাইজের হয়।

২. ব্রাউজার ক্যাশিং ব্যবহার করুন

ব্রাউজার ক্যাশিং এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন উপাদান (যেমন ছবি, CSS, JS ফাইল) ব্যবহারকারীর ব্রাউজারে সংরক্ষিত থাকে, ফলে পরবর্তীতে সাইট ভিজিট করলে পৃষ্ঠা দ্রুত লোড হয়।

কৌশল: আপনার ওয়েবসার্ভারে ক্যাশিং সক্ষম করার জন্য .htaccess ফাইলে কনফিগারেশন যুক্ত করুন অথবা W3 Total Cache WP Super Cache, LiteSpeed Cache plugin এর মতো ক্যাশিং প্লাগইন ব্যবহার করুন।

৩. CSS, JavaScript, এবং HTML মিনিফাই করুন

মিনিফাই করা মানে অপ্রয়োজনীয় স্পেস, কমেন্ট এবং ফরম্যাটিং সরিয়ে ফাইলের সাইজ কমানো। এটি পৃষ্ঠার লোডিং স্পিড বাড়ায়।

কৌশল: CSS এবং JavaScript মিনিফাই করার জন্য LiteSpeed Cache plugin, Minify Code, CSS Minifier, বা UglifyJS এর মতো টুল ব্যবহার করতে পারেন। WordPress এর জন্য Autoptimize প্লাগইনটি ভালো কাজ করে।

৪. Content Delivery Network (CDN) ব্যবহার করুন:

CDN এমন একটি নেটওয়ার্ক যেখানে সার্ভারের কন্টেন্ট বিভিন্ন জায়গায় সংরক্ষণ করা হয়। ব্যবহারকারীর কাছের সার্ভার থেকে কনটেন্ট সরবরাহ করার ফলে পেইজ দ্রুত লোড হয়।

কৌশল: Cloudflare, Akamai, বা Amazon CloudFront এর মতো CDN পরিষেবা ব্যবহার করুন।

আরও পড়ুন : লোকাল এসইও (Local SEO) কি? লোকাল এসইও কিভাবে করতে হয়?  

৫. ফাইল সাইজ কমান (GZIP কমপ্রেশন ব্যবহার করুন):

ওয়েবপেইজের HTML, CSS, এবং JavaScript ফাইলগুলোর সাইজ  কমাতে GZIP কমপ্রেশন ব্যবহার  করুন। GZIP কম্প্রেশন  ফাইলগুলোকে কমপ্রেস করে সার্ভার থেকে দ্রুত ডাউনলোড করতে সাহায্য করে।

কৌশল: GZIP কমপ্রেশন সক্রিয় করতে আপনার সার্ভারে .htaccess ফাইল আপডেট করুন বা WordPress এর জন্য WP-Optimize, LiteSpeed Cache plugin ব্যবহার করুন।

৬. পেইজ লোড স্পীড বাড়াতে Lazy Loading ব্যবহার করুন

Lazy Loading এর মাধ্যমে ইমেজ বা ভিডিও তখনই লোড হয় যখন ব্যবহারকারী সেই পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট অংশে পৌঁছায়, ফলে পৃষ্ঠার শুরুতে লোডিং সময় কমে যায়। এটি পেজ লোড স্পীড কমাতে অনেক ভূমিকা পালন করে কারণ ছবির জন্যই মূলত পেজের লোডিং স্পীড কমে যায়।

কৌশল: Lazy Loading সক্ষম করতে WordPress এর জন্য a3 Lazy Load, LiteSpeed Cache plugin প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন, অথবা lazysizes.js এর মতো স্ক্রিপ্ট ইমপ্লিমেন্ট করতে পারেন।

আমি যখন Lazy Loading জন্য প্লাগিন ব্যবহার করা শুরু করেছি তখন দেখেছি কিভাবে পেজের লোডিং স্পীড বেড়েছে ।  এই পদ্ধতির ফলে একজন পাঠক ইমেজ লোড নেয়ার আগেই পেজে প্রবেশ করে আর্টিকেল পড়া শুরু করতে পারে ।

৭. সার্ভারের রেসপন্স টাইম উন্নত করুন

সার্ভারের রেসপন্স টাইম বেশি হলে পৃষ্ঠার লোডিং স্পিড ধীর হয়। সার্ভার অপ্টিমাইজেশনের মাধ্যমে এটি উন্নত করা সম্ভব।

দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য এমন হোস্টিং পরিষেবা বেছে নিন।

আপনার ডেটাবেস অপটিমাইজ করুন এবং সার্ভারের অতিরিক্ত লোড এড়িয়ে চলুন।

৮. প্লাগইন অপ্টিমাইজেশন (WordPress-এর জন্য)

বেশি প্লাগইন ইনস্টল করা থাকলে সাইটের পারফরম্যান্স ধীর হতে পারে। অতিরিক্ত প্লাগইন সরিয়ে ফেলুন এবং প্রয়োজনীয় প্লাগইনগুলো হালনাগাদ রাখুন। আবার অনেক সময় দেখা যায় প্লাগিন ইন্সটল করে সেটা ইন্যাক্টিভ করে ফেলে রাখা হয়। ইটা করা উচিত না। এর ফলে শুধু আপনার পেজ লোড স্পীড কমবে না সাথে হ্যাকরের আক্রমণের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করবে ।

শুধুমাত্র কার্যকরী এবং প্রয়োজনীয় প্লাগইন রাখুন আর অপ্রয়োজনীয় বা ধীর প্লাগইনগুলি সরিয়ে ফেলুন।

৯. রিডাইরেক্ট কমান

বেশি রিডাইরেক্ট থাকলে পৃষ্ঠার লোডিং টাইম বাড়ে, কারণ প্রতিটি রিডাইরেক্ট একটি অতিরিক্ত HTTP অনুরোধ সৃষ্টি করে। এজন্য অপ্রয়োজনীয় 301 রিডাইরেক্ট কমিয়ে দিন এবং সরাসরি লিঙ্ক ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুন : ৩০১ রিডাইরেক্ট (301 Redirect) এবং ৪০৪ নট ফাউন্ড (404 – Not Foun) সম্পর্কে বিস্তারিত

১০. AMP (Accelerated Mobile Pages) ব্যবহার করুন

AMP এমন একটি প্রযুক্তি, যা মোবাইল ডিভাইসের জন্য পেইজের লোডিং স্পিডকে দ্রুত করে। এটি মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য উপযুক্ত।

AMP প্লাগইন ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই এই কাজটি করতে পারবেন ।  এই প্লাগিন ব্যবহার করার কারণে আপনার ওয়েবসাইটটি মোবাইল ডিভাইসে ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে ।

আপনার ওয়েবসাইটের মোবাইল সংস্করণে AMP ইমপ্লিমেন্ট করতে WordPress এর জন্য AMP প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন।

পে লোড স্পীড টেস্ট করার টুল

পেজ লোড স্পীড টেস্ট করার জন্য অনেক তুলে আছে।  গুগলে সার্চ করলেই আপনি এসব তুলে খুঁজে পাবেন । নিচে কয়েকটা টুলের নাম দিলাম:

পেজ লোড স্পীড টুল

এসব টুল ব্যবহার করা খুব সহজ। আপনি শুধু এসব ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন আর ওদের নির্দেশনা অনুযায়ী লিংক দিয়ে টেস্ট করলেই পেজ লোড স্পিড সম্পর্কে সকল তথ্য দিয়ে দিবে ।

Google PageSpeed Insights এ আমি একটি ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স টেস্ট করেছি।  তারপর এভাবে সেই ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেছে। এর পাশাপাশি real users are experiencing এবং ওয়েবসাইটের Diagnostics রিপোর্ট প্রদান করে থাকে ।

ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট (Bounce rate) কি? বাউন্স রেট কেমন থাকলে ভাল?  

বাউন্স রেট (Bounce Rate) হলো একটি মেট্রিক, যা ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীরা একটি পৃষ্ঠায় প্রবেশ করার পর অন্য কোনো পৃষ্ঠায় না গিয়ে সাইটটি ত্যাগ করার হার নির্দেশ করে। এটি সাধারণত শতাংশে পরিমাপ করা হয় এবং বাউন্স রেট যত কম হয়, তত ভালো ধরা হয়।

  • ২৬%-0%: চমৎকার বাউন্স রেট।
  • ৪১%-৫৫%: গড় মানের।
  • ৫৬%-0%: সাধারণত উন্নতির প্রয়োজন, তবে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ঠিক হতে পারে।
  • 70%+: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভালো নয় এবং ৭০%+ হলে সাইটের বিভিন্ন বিষয়ে উন্নতি করতে হবে।

বাউন্স রেট উন্নতির জন্য কী করতে হবে? 

  • ওয়েবসাইটের ইউজার ইন্টারফেস উন্নত করতে হবে।
  • পাঠকদের আকর্ষণীয় ও প্রাসঙ্গিক কন্টেন্ট উপহার দিতে হবে যাতে তাদের এনগেজমেন্ট বাড়ে ।
  • পেজ লোডিং স্পীড বাড়াতে হবে।

ওয়েবসাইটের পেজ লোড স্পিড বাড়ানো ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা এবং সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত কৌশলগুলো আপনি যদি অনুসরণ করতে পারেন তাহলে  সহজেই আপনার সাইটের লোডিং স্পিড উন্নত করতে পারবেন, যা আপনার ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে এবং ব্যবহারকারীদের সাইটে আরও সময় ব্যয় করতে উৎসাহিত করবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments