HomeMarketing Guidelinesঅভিজ্ঞতা ছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার গাইডলাইনঃ ৬ টি ধাপ

অভিজ্ঞতা ছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার গাইডলাইনঃ ৬ টি ধাপ

নতুন মার্কেটাররা ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার আগে প্রথমেই চিন্তা করেন কিভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করবো।

তবে এই চিন্তাটা মাথায় আসা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করা একজন নতুন মার্কেটারের জন্য একটি রোমাঞ্চকর ও চ্যালেঞ্জিং যাত্রা হতে পারে। ঠিক কোন উপায়ে ক্যারিয়ার শুরু করবেন সে বিষয়ে প্রথমদিকে বুঝতে পারেন না।

সঠিক কৌশল এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকলে আপনি সফলভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারবেন। তবে এই পথচলায় কিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হবে। নিচে বিস্তারিতভাবে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো।

নতুন মার্কেটারদের জন্য সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জসমূহ

একজন নতুন মার্কেটার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে:

১. অধিক জ্ঞানের প্রয়োজন

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অনেকগুলো বিষয় থাকে—SEO, SEM, কনটেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল মার্কেটিং ইত্যাদি। নতুন মার্কেটার হিসেবে এতগুলো বিষয় দ্রুত শেখা এবং প্রতিটি বিষয়ে দক্ষ হওয়া বেশ কঠিন কাজ । প্রথমে প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা নিয়ে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বিশেষায়িত ক্ষেত্রের উপর আরও গভীরভাবে জ্ঞান অর্জন করুন।

২. প্রতিযোগিতা বেশি 

ডিজিটাল মার্কেটিং একটি প্রতিযোগিতামূলক সেক্টর । অনেক অভিজ্ঞ মার্কেটার ইতোমধ্যে এই সেক্টরে সফলতার সাথে কাজ করছে। নতুন হিসেবে আপনি তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হবেন। তাই নিজের দক্ষতা বাড়াতে এবং ক্রমাগত উন্নতির চেষ্টা করতে হবে।

৩. পরিবর্তনশীলতা

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্ষেত্রটি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হয়। এসব পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে গুগলের এলগরিদম আপডেট, নতুন সোশ্যাল মিডিয়া ফিচার কিংবা নতুন মার্কেটিং টুলস । তাই সবসময় নিজেকে আপডেট রাখা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

৪. পারফর্মেন্স পরিমাপের জটিলতা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অনেক পরিসংখ্যান এবং ডেটা বিশ্লেষণ করতে হয়। নতুন হিসেবে এই ডেটা বিশ্লেষণ করা এবং তার উপর ভিত্তি করে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হতে পারে।

৫. বাজেটের সীমাবদ্ধতা

ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে বেশ ভাল একটা বাজেট খরচ করতে হবে। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞাপন খরচ, ডিজিটাল মার্কেটিং টুল ব্যবহারের খরচ ইত্যাদি। অনেক সময় নতুন মার্কেটাররা কম বাজেট নিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়। তাই অল্প বাজেটে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়ার জন্য সঠিক কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

৬. ফলাফল পেতে সময় লাগা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে অনেক কৌশল রয়েছে যার তাৎক্ষণিক ফলাফল পাওয়া যায় না। যেমন SEO এবং কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে সময় লাগে এবং ধৈর্য ধরে কাজ করতে হয়।

৭. গ্রাহকের প্রত্যাশা মেটানো

গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে হয় এবং তাদের প্রত্যাশা মেটাতে হয়। তাদের চাহিদা অনুযায়ী কনটেন্ট বা বিজ্ঞাপন তৈরির সময় তাদের চাহিদা বুঝতে ভুল হতে পারে, যা মার্কেটিং প্রচারণার সাফল্যে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কিভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবেন?

১. শেখার প্রবণতা তৈরি করুন

একসাথে সবকিছু শেখার চেষ্টা না করে প্রতিটি উপাদান আলাদাভাবে শিখুন। প্রতিটি বিষয়ে ধীরে ধীরে দক্ষতা অর্জন করুন। শেখার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত বই আর্টিকেল পড়তে হবে এবং ভিডিও দেখতে হবে।

২. নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে আপডেট থাকুন

ডিজিটাল মার্কেটিং ব্লগ, নিউজলেটার এবং সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে জয়েন হয়ে নিয়মিতভাবে নতুন ট্রেন্ড ও কৌশল সম্পর্কে জানুন। নতুন ট্রেন্ডগুলো দ্রুত রপ্ত করার চেষ্টা করুন। প্রতিযোগিতার এই মার্কেটে আপনি যত বেশি নতুন ট্রেন্ড সম্পর্কে আপডেট থাকবেন তত বেশি আপনি এগিয়ে থাকবেন।

৩. মেন্টরের কাছ থেকে শেখার চেষ্টা করুন 

অভিজ্ঞ মার্কেটারদের সাথে যোগাযোগ করুন এবং তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিন। এই সেক্টরে ভাল করতে হলে একজন ভাল মেন্টরের বিকল্প নেই। এটি আপনাকে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে।

৪. ধৈর্য এবং অধ্যবসায়

দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যান এবং তাৎক্ষণিক ফলাফলের জন্য অস্থিরতা না দেখিয়ে ধৈর্য ধরুন। কারণ ডিজিটাল মার্কেটিং এর ফলাফল সাথে সাথে পাওয়া যায় না। যেমন আপনি যদি সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন নিয়ে কাজ করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই অনেক সময় দিতে হবে। অনেক সময় দেখা সার্চ ইঞ্জিনে ভাল র‍্যাংকিং পেতে কয়েক মাসও লেগে যায়।

আরও পড়ুন : কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করবেন? গাইডলাইন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার ধাপসমূহ 

একজন নতুন মার্কেটার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার জন্য আপনাকে কতগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হবে।

আপনি যদি সফলভাবে এসব ধাপ অতিক্রম করতে পারেন তাহলে সহজেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটার হতে পারবেন। নিচে ধাপগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো :

ধাপ ১. ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা গ্রহণ

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করতে হলে প্রথমেই আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মৌলিক বিষয়গুলো যেমন এসইও, এসইএম, ইমেইল মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, এনালিটিক্স, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

এসব দক্ষতা অর্জন করা অবশ্যই সহজ কোন কাজ নয়। এর জন্য সময়ের প্রয়োজন। ভালভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে কয়েকমাস এমনকি কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।

আমাদের দেশে একটা বিষয় প্রায় দেখে থাকি। কয়েক মাস একটা বা দুটো কোর্স করে অনেকেই মনে করে আমি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে গেছি। তারপর দেখা যায়, যখন সে মার্কেটপ্লেসে গিয়ে কাজ খুঁজে তখন দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার অভাবে কাজ না পেয়ে হতাশ হয়ে যায়।

এসব বিষয়ের পাশাপাশি লেখায় দক্ষতা, ইন্টারনেট বিষয়ে জ্ঞান, সৃজনশীল চিন্তাভাবনা ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার এ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাই আমি আপনাদের বলবো ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করার আগে অবশ্যই ভাল করে জ্ঞান অর্জন করে তারপর মার্কেটে আসেন তাহলে আপনি সফল হবেন এটা বিশ্বাসের সাথে বলা যায়।

আরও পড়ুনএসইও (SEO) কি? এসইও সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন 

ধাপ ২. ডিজিটাল মার্কেটিং টুলের ব্যবহার শিখুন

ডিজিটাল মার্কেটিং টুল

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলের ব্যবহার জানা একজন মার্কেটারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসব টুল ব্যবহারে আপনি যত বেশি দক্ষ এবং অভিজ্ঞ হবে তত বেশি এই প্লাটফর্মে আপনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং টুলের মধ্যে রয়েছেঃ

Google Analytics
Google Ads
MailChimp
Ahrefs
Moz
semrush
Buffer
Canva
Hubspot

গুগল এনালিটিক্স এমন একটি টুল যেখানে আপনি আপনার মার্কেটিং ক্যাম্পেইন এবং ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স বিস্তারিত জানতে পারবেন। গুগল অ্যাডস এর মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত বিশাল পরিমাণ গ্রাহকের কাছে পণ্য বা সেবাকে পৌঁছে দিতে পারবেন। তাই এই টুলের ব্যবহার জানা একজন মার্কেটারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য MailChimp, SendGrid এর মতো টুলের ব্যবহার শিখতে হবে। MailChimp ইমেইল মার্কেটিং এর জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় টুল।

semrush, Ahrefs, Moz এই তিনটি টুল ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে খুবই বিখ্যাত এবং জনপ্রিয় টুল। এসব টুলের ব্যবহার আপনাকে শিখতেই হবে। মার্কেটপ্লেসে কাজ পেতে চাইলে এসব টুলে দক্ষ হতেই হবে। আমি আপনাকে বলবো খরচ করে এদের কোন একটা প্ল্যান ক্রয় করে ভালভাবে শিখুন ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার এ খুব কাজে লাগবে।

Canva ব্যবহার করে আপনি সহজেই বিভিন্ন ডিজাইন তৈরি করতে পারবেন। এই প্লাটফর্মে হাজারো তৈরি করা টেম্পলেট আছে যা আপনি চাইলেই নিজের মতো করে পরিবর্তন করে ডিজাইন করতে পারবেন।

এসব টুলের ব্যবহার শেখার পাশাপাশি আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারেও দক্ষ হতে হবে। ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, টিকটক এসব প্লাটফর্মে কিভাবে বিজ্ঞাপন দিতে হয়, অর্গানিক রিচ কিভাবে বাড়াতে হয়, এসব প্লাটফর্মের বিভিন্ন টুলস ব্যবহার করে কিভাবে ব্র্যান্ডের পরিচিতি এবং পণ্যের বিক্রয় বাড়ানো যায় এসব বিষয় শিখতে হবে।

আরও পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমগুলো কি কি?

ধাপ ৩: ডিজিটাল মার্কেটিং পোর্টফোলিও তৈরি করুন

একজন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে আপনি যেসব কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন সেগুলো গুছানোভাবে উপস্থাপন করুন। এসব কাজের মধ্যে রয়েছে ইমেইল নিউজলেটার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচার করা জনপ্রিয় কন্টেন্ট, কন্টেন্ট মার্কেটিং এর জন্য লেখা আর্টিকেল।

তবে শুধু উপস্থাপন করলেই হবে না, কাজগুলো সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে টিম ওয়ার্ক, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করার প্রক্রিয়া সম্পর্কেও লিখুন। এর ফলে আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার বিষয়টি ফুটে উঠবে।

পোর্টফলিও কাদের জন্য বেশি প্রয়োজন জানেন? যাদের অতিত অভিজ্ঞতা নেই তাদের জন্য। আপনি যদি কোন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার জন্য পোর্টফোলিও তেমন কোন ফ্যাক্টর না। আপনি সিভিতে আপনার কাজের ক্ষেত্র উল্লেখ উল্লেখ করলেই আপনি চাকরি পেয়ে যাবেন।

পোর্টফলিও কোথায় প্রদর্শিত করবেন সেটা এই বিষয়টি নিয়ে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে আমি আপনাকে বলবো নিজের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করুন।

এই ওয়েবসাইটে আপনি যে বিষয়গুলো জানুন সেগুলো নিয়ে তথ্যবহুল বিশ্লেষণাত্মক লেখা লিখুন। তারপর ওয়েবসাইটের একটা অংশ রাখুন নিজের সফলভাবে সম্পন্ন করা কাজের শোকেজ হিসেবে। লেখার ভেতরও নিজের কাজগুলো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। ক্লায়েন্টরা এই বিষয়টাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এটা আপনার পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ প্রকাশ হবে।

আপনি চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে নিজের পারদর্শীতা মানুষকে জানাতে পারেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিভিন্ন পোস্টে নিজের কাজের প্রামাণকগুলো নিয়মিত শেয়ার করার চেষ্টা করুন।

ধাপ ৪: ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার এর জন্য সিভি তৈরি করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার এর জন্য আপনাকে একটি সিভি তৈরি করতে হবে। একটি শক্তিশালী পরিছন্ন সিভি আপনাকে অনেক প্রতিযোগিতার মধ্যে এগিয়ে রাখবে। ক্লায়েন্টরা কাউকে কাজ দেওয়ার আগে মূলত সিভি দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে।

সিভিতে আপনার মার্কেটিং এ দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাগুলো বুলেট পয়েন্টে উল্লেখ করুন।
দক্ষতাগুলোকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় যেমন,

মার্কেটিং দক্ষতা ( এর মধ্যে সফটওয়্যার এবং মার্কেটিং টুলস ব্যবহারের দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত হবে)
কন্টেন্ট তৈরি এবং বিক্রয়ে দক্ষতা,
নেতৃত্ব এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা,

সংক্ষিপ্ত এবং সহজ ভাষায় এমনভাবে বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলুন যাতে যে কেউ আপনার সিভি পড়ে আপনার প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।

আমার পরামর্শ হচ্ছে প্রতিটি আবেদনের সময় জব ডেস্ক্রিপশন অনুযায়ী সিভিতে কিছু পরিবর্তন আনুন। জব ডেস্ক্রিপশনে যে বিষয়গুলোতে ফোকাস করা হয়েছে সেগুলো সিভিতে নিয়ে আসুন।

চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সিভির পাশাপাশি কাভার লেটারও একটা বড় ফ্যাক্টর। কাভার লেটারের সাথে সিভির মিল থাকতে হবে। কাভার লেটারে অবশ্যই জব ডেস্ক্রিপশনকে ফোকাস করে নিজের পেশাদারিত্ব ফুটিয়ে তুলে লিখতে হবে যাতে চাকরিদাতা আপনাকে যোগ্য মনে করে।

সিভি তৈরি করার সময় যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে,

১. সিভি হবে পরিষ্কার এবং সংক্ষিপ্ত,
২. মার্কেটিং দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতাগুলো বুলেট পয়েন্টে উল্লেখ করুন,
৩. প্রতিটি চাকরির আবেদনে জব ডেস্ক্রিপশন অনুযায়ী সিভিতে কিছু পরিবর্তন আনুন,
৪. সিভির প্রথম অংশে মার্কেটিং দক্ষতাগুলো ফুটিয়ে তোলার পর নিচের অংশে অন্যান্য দক্ষতাগুলো উপস্থাপন করুন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার

ডিজিটাল মার্কেটার Suleman Khan লিংকডইন এ এই বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক লেখা লিখেছেন। আপনি চাইলে পড়ে দেখতে পারেন।

আরও পড়ুন: আপওয়ার্ক কাভার লেটার গাইডলাইন। উদাহরণসহ টিপস এবং স্যাম্পল।

ধাপ ৫: নেটওয়ার্ক তৈরি করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গঠন করার জন্য নেটওয়ার্কিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। নিয়মিত কাজ পেতে চাইলে আপনাকে একটি নেটওয়ার্ক এর প্রবেশ করতে হবে।

নেটওয়ার্ক এ প্রবেশ করার উপায় কি? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কন্টেন্ট শেয়ার এবং ব্লগিং হচ্ছে নেটওয়ার্ক তৈরির সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের একাউন্ট থেকে এবং বিভিন্ন গ্রুপে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে নিয়মিত লেখালেখি অথবা ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করতে হবে। এর পাশাপাশি এই প্লাটফর্মের অন্যান্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের কন্টেন্ট দেখা এবং তাদের সাথে কমেন্টে বা ব্যক্তিগত বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার সম্মেলন

এছাড়া বিভিন্ন সময় ডিজিটাল মার্কেটিং সম্মেলন হয়ে থাকে। চেষ্টা করবেন এসব সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে। এভাবে অনলাইন এবং অফলাইনে নিয়মিত সবার সাথে যোগাযোগ করতে থাকলে দেখবেন আপনার একটা নেটওয়ার্ক হয়ে গেছে।

এই নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রচুর কাজ পাওয়া যায়। কারণ নেটওয়ার্ক এর সদস্যরা যখন অতিরিক্ত কাজের কারণে কোন কাজ করার পর্যাপ্ত সময় পায় না অথবা কোন কাজে সে যদি নিজের চেয়ে তার পরিচিত নেটওয়ার্ক এর কোন সদস্যকে বেশি উপযুক্ত মনে করে তখন সে তাকে রেফার করতে পারে।

আরও পড়ুন: ইমেইল মার্কেটিং এর সংজ্ঞা টুলস সুবিধা এবং শুরু করার গাইডলাইন।

ধাপ ৬: নিজেকে মার্কেটিং করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং এ ক্যারিয়ার গঠন করতে চাইলে নিজেকেও মার্কেটিং করতে হবে! কথাটা শুনতে নিজেত কাছে একটু অন্যরকম লাগলেও এটাই সত্যি।

নিজেকে মার্কেটিং করা মানে হচ্ছে নিজের দক্ষতা এবং কাজের নমুনা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে অনলাইন অফলাইনে যেখানেই সুযোগ পাওয়া যাবে সেখানেই কথা বলতে হবে। মানুষের সামনে নিজেকে যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। তাহলে কাজের অভাব হবে না।

লিংকডইন এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে নিজের দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখালেখি করে অনেকেই চাকরি পাচ্ছে। কারণ এখানে চাকরি প্রার্থী এবং চাকরি দাতার বিশাল একটা কমিউনিটি আছে। তাদের কাছে নিজেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হিসেবে হিসেবে প্রমাণ করতে পারলে আপনি খুব সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন।

ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে কিভাবে আয় করবেন?

ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে সেটা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করে আপনাকে আয় করতে হবে। যেসব পদ্ধতিতে আয় করবেন:

ফ্রিল্যান্সিং
ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি
কন্সাল্টেন্সি

ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কিত অনেক কাজ পাবেন। এসব প্লাটফর্মে প্রতিদিন অসংখ্য ডিজিটাল মার্কেটিং জব পোস্ট হচ্ছে।

ফাইবার, আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার ডট কম এর মতো প্লাটফর্মে একাউন্ট খুলে আপনি এসব জবে আবেদন করতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং কাজের সুবিধা হচ্ছে আপনাকে স্থায়ীভাবে একজন ক্লায়েন্টের কাজ করতে হবে না। বিভিন্ন ক্লায়েন্টের বিভিন্ন ধরণের কাজ করার কারণে বিচিত্র ধরণের অভিজ্ঞতা অর্জন করা যায়।

ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি শুরু করুন 

অনেক ডিজিটাল মার্কেটারদের দেখা যায় তারা কয়েকজন মিলে ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি খুলে ফেলে। যেহেতু কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকছে তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিগুলোর চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কন্সাল্টেন্সি

আপনি চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া অনলাইন বা অফলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে আগ্রহীদের জন্য কোচিং সেন্টার খুলতে পারেন।

উপসংহার

একজন নতুন মার্কেটার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার জন্য ধাপে ধাপে এগোনো এবং প্রতিনিয়ত শেখার মানসিকতা থাকা জরুরি।

যদিও বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে সঠিক জ্ঞান, পরিকল্পনা এবং প্র্যাকটিসের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠা সম্ভব। আমাদের গাইডলাইন অনুসারে ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করলে আপনি সফল হবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular