HomeFreelancing Guidelinesফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইন মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে গাইডলাইন।

ফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইন মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে গাইডলাইন।

ফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইন (99designs) তিনটি বিখ্যাটি ফ্রিল্যান্স প্লাটফর্ম। এসব প্লাটফর্ম ব্যবহার করে হাজারো ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্টদের বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করে আয় করছে।

ফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইন প্লাটফর্মের কার্যপ্রণালী ও বৈশিষ্ট্যগত কিছু ভিন্নতা রয়েছে। এই গাইডলাইনে আপনাদের এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com) মার্কেটপ্লেস গাইডলাইন 

ফ্রিল্যান্সার ডট কম (Freelancer.com) হলো একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর, ডিজাইনার, ডেভেলপার, এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করার সুযোগ পায়। ৬ বছর আগে শুরু হওয়া এই প্লাটফর্মে বর্তমানে প্রায় ৭৯  মিলিয়ন নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার আছে এবং এ পর্যন্ত ২৪ মিলিয়নের বেশি জব পোস্ট হয়েছে । সময়ের সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সার তাদের নিয়মকানুনে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন নিয়ে আসছে।

ফ্রিল্যন্সার ডট কম এ প্রায় সব দেশ থেকেই ফ্রিল্যান্সার কাজ করলেও সবচেয়ে বেশি ৫ টি দেশ হচ্ছে ভারত, বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং পাকিস্তান। এই প্লাটফর্মে ক্লায়েন্টরা প্রজেক্ট অথবা কন্টেস্ট পোস্ট করে তারপর সেখানে ফ্রিল্যান্সাররা আবেদন করে। সেখান থেকে ক্লায়েন্ট তার দৃষ্টিতে সবচেয়ে যোগ্য ফ্রিল্যান্সারকে কাজ প্রদান করে।

Freelancer.com এ কিভাবে অ্যাকাউন্ট খুলবেন?

Freelancer.com এ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ওদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে উপরে সর্বডানে  Sign up বাটনে ক্লিক করুন।

সাইন আপ এ ক্লিক করার পর আপনাকে নতুন উইন্ডোতে নিয়ে যাবে। সেখানে আপনাকে নামের প্রথম অংশ এবং শেষ অংশ পূরণ করতে হবে। তারপর ইমেইল পাসওয়ার্ড দিয়ে I agree to the Freelancer User Agreement and Privacy Policy তে টিক দিয়ে Join Freelancer এ ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট খোলা সম্পন্ন করুন। আপনি চাইলে গুগল অথবা ফেসবুক দিয়েও Freelancer.com এ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। এর পর আপনাকে একটি ইউজার নাম দিতে বলবে। ইউজার নাম একবারই দেওয়া যায় এটা পরিবর্তন করা যায় না। ইউজার নাম এ অক্ষর এবং নাম্বার দিবেন এবং সর্বোচ্চ ১৬ অক্ষরের হবে।

ইউজার নাম দেওয়ার পর আপনাকে অ্যাকাউন্ট টাইপ নির্ধারণ করতে হবে। আপনি ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করলে I want to work এ ক্লিক করবেন আর ক্লায়েন্ট হিসেবে যুক্ত হতে চাইলে I want to hire এ ক্লিক করবেন । তবে আপনি চাইলে অ্যাকাউন্ট সেটিংস থেকে যেকোন সময় পরিবর্তন করতে পারবেন। আপনার মেইলে একটি কনফার্মেশন লিংক এবং কোড প্রদান করা হবে। মেইলে নির্দেশনা মোতাবেক আপনাকে অ্যাকাউন্ট এক্টিভেট করতে হবে।

Freelancer.com এ প্রোফাইল তৈরি 

সাইন আপ করার পর আপনাকে প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। প্রোফাইল তৈরি করার সময় আপনাকে আপনার নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রদান করতে হবে। যেমন: আপনার দক্ষতা, কাজের রেট, প্রফেশনাল হ্যাডলাইন, প্রোফাইল পিকচার, পোর্টফোলিও, অতীত অভিজ্ঞতা, রেফারেন্স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কোয়ালিফিক্যাশন, প্রকাশনা থাকলে প্রকাশনা, সার্টিফিকেট, আর্টিকেল ইত্যাদি।

প্রোফাইল পিকচার হিসেবে নিজের ছবি ব্যবহার করবেন, কোন গ্রূপ ছবি দিবেন না। ছবি হবে একেবারে পরিষ্কার, কোন মাস্ক বা সানগ্লাস পড়ে আছেন এমন ছবি দিবেন না। আপনার কাঁধ পর্যন্ত দেখা যায় এমন ছবি দিবেন। ছবির সর্বনিম্ন ডাইমেনশন হবে 280×280 pixels আর ফরম্যাট হবে JPG, PNG

Know Your Customer Program (KYC) পূরণ করতে হবে। এর তিনটা উপাদান আছে যেমন:

  1. Proof of Identity
  2. Keycode Verification
  3. Proof of Address

প্রুফ অব আইডেন্টিটি হিসেবে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, টিন , প্রফেশনাল লাইসেন্স আইডি ইত্যাদি। ইমেজ ডাইমেনশন হবে কমপক্ষে 500 x 300 pixels। আইডির দুই পাশের ছবি তুলে আপলোড করতে হবে।

Keycode Verification এ আপনাকে একটি ইউনিক কোড (ভেরিফিক্যাশন সেন্টার কর্তৃক প্রদত্ত) এবং আপনার আইডি কার্ড হাতে নিয়ে ছবি তুলে আপলোড করতে হবে নিচের ছবির মতো।

ছবি: ফ্রিল্যান্সার ডট কম

আপনার আইডি কার্ডে যদি আপনার বর্তমান ঠিকানা থাকে তাহলে আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করার দরকার নেই। যদি না থাকে তাহলেই শুধু এর প্রয়োজন হবে। বর্তমান ঠিকানা ভেরিফাই করার জন্য ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট, ইউটিলিটি বিল, ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন, রেসিডেন্স পারমিট, সরকার প্রদত্ত কোন ডকুমেন্টস যেখানে বর্তমান ঠিকানা আছে।  আপনি যেকোন সময় এটি পূরণ করতে পারেন। বিশেষ করে পেমেন্ট নেয়ার আগে আপনাকে এগুলো পূরণ করতে হবে।

পেমেন্ট ম্যাথড 

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ বিভিন্ন ধরণের পেমেন্ট ম্যাথড ব্যবহার করা যায়। যেমন:

  • এক্সপ্রেস (Express)
  • ওয়্যার (Wire),
  • পেপাল (Paypal)
  • পেওনিয়ার (Payoneer)
  • স্ক্রিল (Skrill)

কন্টেস্ট এবং প্রজেক্ট 

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ দুইভাবে কাজ পাওয়া যায়।  একটি হচ্ছে প্রজেক্টে আবেদন করে এবং অন্যটি হচ্ছে কন্টেস্টে এ অংশগ্রহণ করে।

কন্টেস্টে একজন ক্লায়েন্ট তার রিকোয়ারমেন্ট দিয়ে একটি পোস্ট করে এবং সেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের প্রস্তাব জমা দেয় সেখান থেকে ক্লায়েন্ট একজন বা একাধিক ফ্রিল্যান্সারকে কাজ প্রদান করে।

প্রজেক্টের ক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট তার বিবরণ দিয়ে পোস্ট করবে আর ফ্রিল্যান্সাররা সেখানে বিড করবে। এক্ষেত্রে ক্লায়েন্ট বরাবর প্রস্তাব জমা দিতে হয়। তারপর ক্লায়েন্ট যেকোন একজন বিডারকে কাজ প্রদান করে।

আরও পড়ুনঃ আপওয়ার্ক (Upwork) এ কাজ পাওয়ার উপায় এবং বিড করার কৌশল

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ কিভাবে কাজ খুঁজবেন?

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ কাজ পাওয়ার উপায় হচ্ছে ২ টি:
১. প্রজেক্ট বিডিং
২. কন্টেস্ট এ যুক্ত হয়ে

আবেদন করার আগে অবশ্যই প্রোফাইল তৈরি করে নিবেন। প্রজেক্ট এ বিড করার জন্য আপনার ইমেইল ভেরিফাই থাকতে হবে এবং প্রোফাইলে বেসিক তথ্য আপডেট থাকতে হবে।

সার্চ পেজ এর মেইন Menu থেকে Browse এ ক্লিক করে প্রজেক্ট এবং কন্টেস্ট নির্বাচন করতে হবে। এখানেই আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ পেয়ে থাকবেন। আপনি বিভিন্নভাবে প্রজেক্ট ফিল্টার করতে পারবেন, যেমন:

  • Project Type
  • Price / Hourly rate
  • Skills
  • Listing Types (Project)
  • Location
  • Languages

কন্টেস্ট পেজ ফিল্টার করতে পারবেন নিম্নোক্তভাবে,

  • Contest Prize
  • Skills
  • Listing Types (Contest)

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ প্রজেক্ট বিড করার নিয়ম

বিড করার জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে:

১. প্রথমে সার্চ পেজ থেকে আপনার দক্ষতা, বাজেট, ভাষা ইত্যাদির সাথে মিলে এমন কাজ খুঁজে বের করুন।
২. প্রজেক্ট প্রবেশ করে প্রথমে প্রজেক্ট এর বিবরণ ভালভাবে পড়ুন। বিশেষ করে প্রজেক্ট এ যেসব শর্ত এবং দক্ষতা চাওয়া হয়েছে সেগুলো লক্ষ করুন।
৩. বিডিং ফর্ম পূরণ করুন। বিড অ্যামাউন্ট, ডেলিভারি টাইম, প্রোপোজালের বিস্তারিত পূরণ করুন। আপনার অভিজ্ঞতা, পোর্টফলিও, সার্টিফিকেট এগুলো থাকলে সুন্দর করে উপস্থাপন করুন। এক্ষেত্রে প্লাস, প্রফেশনাল অথবা প্রিমিয়ার মেম্বারশিপ এর গ্রাহকরা “Write my bid button” এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রোপোজাল লিখতে পারেন।
৪. Suggest a milestone থেকে আপনি পুরো প্রজেক্টকে কয়েকটা ভাগে করার প্রস্তাব করতে পারেন এবং এজন্য Milestone পেমেন্ট এর প্রস্তাব দিতে পারেন।
৫. Place Bid to submit এ ক্লিক করে বিড সাবমিট করুন। আপনি চাইলে বিউকে স্পনসর করতে পারেন।
বিড করার পর আপনি চাইলে সেটি My Projects এ প্রবেশ করে Active Bids দেখতে পারবেন।
আপনার যদি ক্লায়েন্টের কাছে কিছু জানার থাকে তাহলে Public Clarification Board এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টকে প্রশ্ন করতে পারবেন। ক্লায়েন্ট যদি মনে করে আপনার প্রশ্নের উত্তর দেওয়া দরকার তাহলে কমেন্টের সরাসরি রিপ্লাই দিবে।

আরও পড়ুন : আপওয়ার্ক এবং ফাইবার এ অ্যাকাউন্ট তৈরি ও বিডিং এবং পেমেন্ট পদ্ধতি

প্রজেক্ট বিড করার জন্য প্রোপোজাল লেখার টিপস

একটি প্রোপোজাল লেখার জন্য নিচের টিপসগুলো মনে রাখবেন তাহলে আপনার জন্য কাজ পাওয়া সুবিধা হবে।
আপনি যে প্রজেক্ট এ আবেদন করছেন সেটি ভালোভাবে পড়েছেন এবং ক্লায়েন্টের কি ধরণের সেবা দরকার সেটি আপনি বুঝেছেন তা প্রোপোজালে উল্লেখ করতে হবে। আপনি কত সময়ের মধ্যে কাজটি সরবরাহ করতে পারবেন এবং এর জন্য কি পরিমান অর্থ আপনি দাবি করবেন সেটা উল্লেখ করুন। প্রজেক্ট সম্পর্কে সম্পর্কে কোন কিছু জানার থাকলে সেটি উল্লেখ করুন।

নিজের সম্পর্কে সম্পর্কে এমন কিছু কথা লিখুন যা ক্লায়েন্টকে আকর্ষণ করে। আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড, পেশা এসব সম্পর্কে কিছু লিখুন এবং এই বিষয়গুলো কিভাবে আপনার কাজকে প্রভাবিত করছে সেটাও সুন্দর করে লিখতে পারেন। সবকিছুর মধ্যে একটা পেশাদারিত্ব এবং ব্যক্তিত্ব বজায় রাখুন ।

অতীতে করেছেন এমন কাজের কিছু বর্ণনা দিন এবং ক্লায়েন্টকে আপনার পোর্টফোলিও দেখার আমন্ত্রণ জানান । পোর্টফোলিও ক্লায়েন্টের বিশ্বাস বাড়াতে অনেক সহায়তা করে থাকে।

মনে রাখবেন ক্লায়েন্টের কাছে আপনার মত অনেক ফ্রিল্যান্সারের আবেদন যাচ্ছে তাই খুব বেশি কথা লিখবেন না। যতটা সম্ভব কম কথায় মূল বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করুন। নিজের সম্পর্কে বেশি বাড়িয়ে কিছু লিখবেন না এতে আপনার হিতে বিপরীত হতে পারে।

টিপস: একেক প্রজেক্টের জন্য প্রপোজাল একেক রকম হবে। সব জায়গায় একই কথা লিখে পাঠাবেন না। প্রজেক্টের শর্ত এবং কাজের ধরণ অনুযায়ী আপনার প্রপোজাল লিখতে হবে। নিজের দক্ষতার সাথে না মিললে আবেদন করবেন না। প্রপোজাল জমা দেওয়ার কয়েকবার রিভিশন দিন যাতে কোন ধরণের ভুল না থাকে। কারণ একটি ছোটখাটো ভুলও আপনাকে কাজ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করতে পারে।

আরও পড়ুন: কিভাবে প্রপোজাল এবং কাভার লেটার লিখলে আপওয়ার্কে কাজ পাওয়া যায়?

ফ্রিল্যান্সার ডট কম এ সহজে একটি প্রজেক্ট জেতার কৌশল

যেহেতু একটি প্রজেক্টে আপনার মত আরো অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার কাজের জন্য আবেদন করছে তাই আপনাকে যেকোন প্রজেক্ট জেতার জন্য অনেক বেশি কৌশলী হতে হবে। নিচে কৌশলগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলো:

প্রজেক্টে আবেদন করার আগে ভালোভাবে পরে বুঝুন ক্লায়েন্ট ঠিক কি ধরণের সার্ভিস চাচ্ছে। আপনি যদি না বুঝেই আবেদন করেন তাহলে ক্লায়েন্ট আপনাকে কখনো কাজ দিবে না।

উপরের নির্দেশনা মোতাবেক দৃষ্টি আকর্ষক একটি প্রোপোজাল লিখে প্রজেক্টে বিড করুন।
বিড করার সময় আপনার পেশাদারিত্ব প্রদর্শন করার জন্য প্রজেক্টকে কয়েকটা মাইলস্টোন এ ভাগ করুন। তাহলে ক্লায়েন্ট আপনার সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করবে।

কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাইসিং একটা বড় ফ্যাক্টর। আপনি নতুন হলে অবশ্যই তুলনামূলক কম প্রাইস ধার্য করবেন। আর অভিজ্ঞ হলে মার্কেট যাচাই করে প্রতিযোগিতামূলক প্রাইসিং করতে হবে। অতিরিক্ত কম বা অতিরিক্ত বেশি প্রাইসিং প্রজেক্ট জেতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে।

পোর্টফোলিওতে আপনার সবচেয়ে ভাল কাজগুলো আপলোড করুন। সাধারণমানের কাজ দিয়ে পোর্টফোলিও বড় করার কোন দরকার নেই।

ক্লায়েন্ট আপনার সাথে প্রাইভেট মেসেজে যোগাযোগ করলে দ্রুত সাড়া দিন। ঠিক সময়ে সাড়া না দিতে পারলে আপনার কাজ হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। সবসময় পেশাদারিত্ব এবং সততা বজায় রাখুন তাহলে কাজ পেতে আপনার অনেক সুবিধা হবে।

টোপাল (Toptal) মার্কেটপ্লেস

ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় প্লাটফর্ম গুলোর মধ্যে টোপাল হচ্ছে এমন একটি ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম যেখানে পৃথিবীর টপ ৩ ভাগ ফ্রিল্যান্সার কাজ করে থাকে। টোপাল নামটি এসেছে টপ টেলেন্ট শব্দ থেকে। টোপালের মতে, পৃথিবীর সেবা ৫০০ টি কোম্পানি এই প্লাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কাজের জন্য ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে থাকে। এই প্লাটফর্ম ব্যবহারকারী ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজাইনিং, ফাইনান্সিয়াল এক্সপার্ট, প্রোডাক্ট ম্যানেজার এবং প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে।

যেহেতু এখানে টপ ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে থাকে তাই কোম্পানিগুলো এই প্লাটফর্মে কাজ করা ফ্রিল্যান্সারদের অন্যভাবে মূল্যায়ন করে থাকে।

অন্য ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম থেকে টোপাল এর একটা বড় পার্থক্য আছে। সেটা হচ্ছে টোপাল এ যুক্ত হতে হলে আপনাকে একটা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। পরীক্ষায় পাশ করলেই কেবল আপনি এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন।

টোপাল এ আপনি যেসব সুবিধা পাবেন

টোপাল এ যুক্ত হওয়ার পর আপনি আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ পাবেন। যেহেতু ক্লায়েন্টরা টোপাল ফ্রিল্যান্সারদের অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকে তাই এই প্লাটফর্ম এর সুনাম এর কারণে আপনাকে কাজের জন্য বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না। এই প্লাটফর্ম আপনি নেটওয়ার্কিং সুবিধা এবং সার্বক্ষণিক কাস্টমার সাপোর্ট পাবেন।

কিভাবে টোপাল এ সাইন আপ করবেন?

আপনি যদি একজন ডেভেলপার, ডিজাইনার, প্রোডাক্ট ম্যানেজার অথবা প্রজেক্ট ম্যানেজার হয়ে থাকেন এবং কমপক্ষে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনি https://www.toptal.com/talent/apply এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

টোপাল এর স্ক্রিনিং প্রসেস কেমন?

এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে একটি স্ক্রিনিং প্রসেস এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে। প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার আবেদন করার পরেই আপনাকে স্ক্রিনিং প্রসেস এর মধ্যে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।এখানে ৩ টি বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়। ১.আপনি যে বিষয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন সেই বিষয়ের উপর আপনার দক্ষতা কোন লেভেলে আছে সেটি যাচাই করা হবে, ২. পেশাদারিত্ব, ৩। যোগাযোগ দক্ষতা। এই প্রসেসটা শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ লাগতে পারে।

প্রসেস ধাপসমূহ

১ম ধাপ-ভাষা ও ব্যক্তিত্ব পরীক্ষা

এই ধাপে আপনার ইংরেজি দক্ষতা যাচাই করা হবে এবং যোগাযোগে কেমন পটু সেটি দেখা হবে। আপনার ব্যক্তিত্ব এবং কাজের প্রতি কি পরিমান মনোযোগ সেটি যাচাই করা হবে।

দ্বিতীয় ধাপ- স্কিল টেস্ট

এই ধাপে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে আপনার টেকনিক্যাল স্কিল এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা যাচাই করা হবে। শুধুমাত্র খুবই দক্ষ যারা তারাই এই ধাপে পাশ করে থাকে।

তৃতীয় ধাপ- লাইভ স্ক্রিনিং

এই ধাপে টোপাল এর বিশেষজ্ঞরা আপনাকে লাইভ বিভিন্ন কাজ দিবে। তারা সরাসরি আপনার কাজ, যোগাযোগ দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, সৃজনশীলতা এবং কিভাবে সমস্যা সমাধান করেন সেটি দেখবে।

চতুর্থ ধাপ- টেস্ট প্রজেক্ট

এই ধাপে প্রতিটি ফ্রিল্যান্সারকে একটি প্রজেক্ট দেওয়া হয়। ১ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে এই প্রজেক্টটি সম্পন্ন করতে হয়। প্রজেক্টে কাজ করার সময় আপনি কিভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করবেন, আপনার দক্ষতা, প্রজেক্ট সফলভাবে সম্পন্ন করার বিষয়ে আপনার ভাবনা, পেশাদারিত্ব এবং সততা হবে এই ধাপের বিবেচ্য বিষয়।

পঞ্চম ধাপ- চলমান স্ক্রিনিং

এই ধাপটি চলতেই থাকবে। ক্লায়েন্টের সাথে করা প্রতিটি প্রজেক্টের ফিডব্যাক যাচাই করা হবে। ক্লায়েন্ট আপনার কাজে সন্তুষ্ট কিনা সেটি হবে এই ধাপের মূল্য বিষয়।

স্ক্রিনিং এর কারণ হচ্ছে ক্লায়েন্টদের বিশ্বাস ধরে রাখা। ক্লায়েন্ট আশা করে এই প্লাটফর্ম থেকে হাই কোয়ালিটি ফ্রিল্যান্সার পাবে তাই তাদের চাহিদা মেটানোর জন্যই টোপাল এই পরীক্ষার আয়োজন করে থাকে। পরীক্ষায় পাশ করার আপনি আপনার সেট করা প্রাইস অনুযায়ী প্রচুর কাজের আদেশ পাবেন।

আপনি যদি স্ক্রিনিং প্রসেস এ উত্তীর্ণ হতে না পারেন তাহলে আপনাকে আবার অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। তবু একটি পর্বে ফেইল করলে কিছুদিন সময় নিয়ে আবার স্ক্রিনিং টেস্ট এ অংশগ্রহণ করুন। এই টেস্টে পাশ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই সিরিয়াসলি ইন্টারভিউ দিতে হবে।

কিভাবে টোপাল এ প্রথম কাজ পাবেন?

টোপাল এ যুক্ত হওয়ার আবেদন এর আপনাকে স্ক্রিনিং প্রসেস এ অংশ নিতে হবে। সেই প্রসেস এ পাশ করলে আপনাকে এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করার সুযোগ প্রদান করা হবে। তারপর আপনার দক্ষতা অনুযায়ী কাজের সন্ধান করে আবেদন করতে হবে।

টোপাল এর একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এখানে একটি ম্যাচিং টিম আছে যাদের কাজ হচ্ছে ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার খুঁজে বের করা। ম্যাচিং টিম নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার এর প্রোফাইল চেক করে দেখে কার প্রোফাইল সংশ্লিষ্ট ক্লায়েন্টের জন্য বেশি উপযুক্ত। তারপর তারাই আপনার সাথে ক্লায়েন্টের জব এর ব্যাপারে যোগাযোগ করবে। আপনি রাজি থাকলে ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করবেন।

টোপাল এ আমি কি একসাথে একাধিক প্রজেক্টে কাজ করতে পারবো?

অবশ্যই আপনি এক সাথে একাধিক প্রজেক্টে কাজ করতে পারবেন। এটা আপনার দক্ষতা এবং সময় ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করবে। বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট ফুল টাইম ( সপ্তাহে ৪০ ঘন্টা) ফ্রিল্যান্সার খুঁজে থাকে, তবে অনেক পার্ট টাইম কাজও পাওয়া যায়। প্রজেক্টের শেষের দিকে নেটওয়ার্কের সদস্যরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী নতুন কাজের অফার পেয়ে থাকে।

পেমেন্ট পাওয়ার নিয়ম

টোপাল প্লাটফর্মের পেমেন্ট এর নিয়ম বেশ সুন্দর । পেমেন্টের প্রক্রিয়াটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে কিছুই করতে হবে না । টোপাল কর্তৃপক্ষ ক্লায়েন্টের সাথে বিল এর ব্যাপারে সব ধরণের যোগাযোগ করবে। আপনি শুধু কাজ করবেন আর সফলভাবে কাজ শেষ হলেই পেমেন্ট নিশ্চিত। ইউএস ডলারে সব পেমেন্ট হবে হবে। আপনার আয় থেকে টোপাল কোন অর্থ কেটে রাখবে না।

আপনাকে প্রথমে কাজের ঘন্টা প্রতি রেট সেট করতে হবে। রেট সেট করার ক্ষেত্রে আপনি টোপাল এর কাজে পরামর্শ চাইতে পারেন। তারা আপনাকে পরামর্শ দিবে। কিন্তু আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কি পরিমান অর্থ দাবি করবেন। রেট সেট করার আগে অবশ্যই বর্তমান বাজার যাচাই করে নিন।

নাইনটি নাইন ডিজাইন (99designs) গাইডলাইন 

৯৯ ডিজাইন ৯৯ ডিজাইন হচ্ছে এমন একটি বৈশ্বিক প্লাটফর্ম যেখানে আপনি ডিজাইন সম্পর্কিত কাজ করার সুযোগ পাবেন। ডিজাইনারদের কথা চিন্তা করেই এই প্লাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে। ডিজাইন ছাড়া অন্যরা এই প্লাটফর্ম থেকে কোন কাজ পাবেন না। ক্লায়েন্টরা এখানে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন পাওয়ার জন্যই এই প্লাটফর্মে আসে। ক্লায়েন্টরা সেরা ডিজাইন পাওয়ার জন্য কন্টেস্ট পোস্ট করে থাকে আর ডিজাইনাররা সেখানে তাদের ডিজাইন সাবমিট করে থাকে।

৯৯ ডিজাইন এ প্রোফাইল তৈরি করার নিয়ম 

৯৯ ডিজাইন এ একটি আকর্ষণীয় প্রোফাইল তৈরি করার জন্য আপনাকে বেশ কিছু টিপস দিব, এগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই ক্লায়েন্টের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারবেন।

১. প্রোফাইল কাভার

৯৯ ডিজাইন এ প্রোফাইল তৈরি

প্রোফাইল কাভার ক্লায়েন্ট আকর্ষণ করার একটি বড় মাধ্যম। একটি সুন্দর আকর্ষণীয় প্রোফাইল কাভার আপনার ভাগ্য গড়ে দিতে পারে। প্রোফাইল কাভার হবে 2480 x 400 px তবে মিনিমাম সাইজ হবে 1240 x 200 px। ডেস্কটপের জন্য ডিসপ্লে সাইজ হবে 1240 x 200 px এবং মোবাইল সাইজ হবে 540 x 200 px (minimum)| প্রোফাইল কাভারে ইমেইল এবং ব্যক্তিগত তথ্য তুলে ধরুন। নিজের ডিজাইন স্টাইল ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করুন।

২. এভাটার (Avatar)

উচ্চ মানসম্পন্ন ও প্রফেশনাল ছবি এভাটার হিসেবে ব্যবহার করুন। একক ছবি ব্যবহার করবেন। মুখ ঢাকা কোন ছবি দিবেন না। একেবারে পরিষ্কার ছবি ব্যবহার করুন। ডাইমেনশন হবে 500 x 500px square, মিনিমাম ডিসপ্লে সাইজ 32 x 32px।

৩. পোর্টফোলিও

৯৯ ডিজাইন এ পোর্টফোলিও কিভাবে তৈরি করবেন

আপনার সেরা কাজগুলো দিয়ে একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন। পোর্টফোলিও কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখে থাকে। এক্ষেত্রে কিছু টিপস:

১. এমনভাবে পোর্টফোলিও সাজাবেন যেন এটি দেখতে অদ্ভুত মনে না হয়। ধরেন আপনি লোগো ডিজাইনের পোর্টফোলিও তৈরি করছেন তাহলে সবগুলো একটি সাইজের, ব্যাকগ্রাউন্ড বা লাইটিং দেওয়ার চেষ্টা করবেন।

২. আপনি যদি বিভিন্ন স্টাইলে ডিজাইন করে থাকেন তাহলে একই ডিজাইনের কাজগুলো গ্রূপ আকারে দিতে পারেন।

৩. ক্লায়েন্টের মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য ছবিকে ক্রপ করে মূল অংশটা আপলোড করতে পারেন। এতে ক্লায়েন্ট এর আগ্রহ বেড়ে যেতে পারে।

৪. আপনার ডিজাইনের একটা উপযুক্ত টাইটেল প্রদান করুন যাতে টাইটেল পরে ক্লায়েন্ট কাজের ধরণ সম্পর্কে বুঝতে পারে।

৫. সুন্দর করে সংক্ষিপ্তভাবে কাজের বর্ণনা দিন।

৬. উপযুক্ত ট্যাগ ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন জোট বেশি উপযুক্ত ট্যাগ ব্যবহার করবেন ৯৯ ডিজাইন এলগোরিদম তত বেশি আপনার পোর্টফোলিওকে ক্লায়েন্টের সামনে প্রদর্শিত করবে। যেহেতু ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চ এলগোরিদম সেটাকে মূল্যায়ন করে থাকে তাই অপ্রাসঙ্গিক ট্যাগ ব্যবহার করতে যাবেন না। এর ফলে আপনি প্যানাল্টি খেতে পারেন।

আরও পড়ুন: ফাইবার গিগ টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন লিখার কিলার টিপস!

৪. এবাউট পেজ (About page)

এই পেজে আপনার নিজের সম্পর্কে সুন্দর করে বর্ণনা দিবেন। এখানে আপনাকে নিজেকে এমনভাবে প্রদর্শন করতে হবে যাতে ক্লায়েন্ট আপনাকে যোগ্য মনে করে। অল্প কথায় ডিজাইন ব্যাকগ্রাউন্ড, কোন ক্ষেত্রে আপনার আগ্রহ আছে, অতীতে ডিজাইন করে কোন পুরস্কার জিতেছেন কিনা এসব বিষয় লিখুন।

আপনি কোন কোন ভাষায় পারদর্শী সেটা উল্লেখ করুন।

অভিজ্ঞতা তুলে ধরুন। আপনি এই কাজে কতদিন যাবৎ যুক্ত আছেন সেটি লিখুন।

আপনার দক্ষতা তুলে ধরুন এবং কোন সার্টিফিকেট পেয়ে থাকলে সেটি উল্লেখ করুন।

ক্লায়েন্টের ভাল রিভিউ থাকলে সেটি অবশ্যই তুলে ধরুন।

৯৯ ডিজাইন এ কোন ধরণের কাজ পাওয়া যায়?

এই প্লাটফর্মে আপনি ডিজাইন এর কাজ করতে পারবেন। এই প্লাটফর্মটি তৈরি করা হয়েছে ডিজাইনারদের জন্য তাই আপনি যদি ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে আপনার জন্য রয়েছে ভাল পরিমাণে আয়ের সুযোগ। যত বেশি কন্টেস্ট এ অংশগ্রহণ করবেন তত বেশি আয়ের সম্ভাবনা বাড়বে।

৯৯ ডিজাইন থেকে কি পরিমাণ আয় করা সম্ভব?

আপনি ফ্রিতে এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে পারবেন এবং যত ইচ্ছা কন্টেস্ট এ অংশ নিতে পারবেন। যত বেশি কাজ করতে তত বেশি আয় করতে পারবেন। এর কোন সীমা নেই। কোন কন্টেস্ট এ জেতার পর ৩ কার্যদিবসের মধ্যে আপনি পেমেন্ট পেয়ে যাবেন।

৯৯ ডিজাইন কি পরিমান ফি ধার্য করে থাকে?

৯৯ ডিজাইন এ আয়ের পাশাপাশি ফি’র পরিমাণও বেশি।
ক্লায়েন্ট ইন্ট্রোডাকশন ফি: আপনি যখন কোন নতুন ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করা শুরু করবেন তখন প্রথম ৫০০ ডলার আয়ের উপর ২০% অর্থাৎ সর্বোচ্চ ১০০ ডলার ফি প্রদান করতে হবে। ৯৯ ডিজাইন এর তথ্য মতে এই খরচের মধ্যে রয়েছে প্লাটফর্ম এবং প্লাটফর্মের বাইরে প্রমোশন খরচ, পেইড বিজ্ঞাপন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং এলগোরিদম ম্যাচিং খরচ।

প্লাটফর্ম ফি: ৯৯ ডিজাইন আপনার উপর প্লাটফর্ম ফি ধার্য করবে। প্রতিটি প্রজেক্ট সম্পন্ন হওয়ার পর আপনাকে প্রতিটি প্রজেক্টের জন্য প্লাটফর্ম ফি দিতে হবে। লেভেল অনুযায়ী প্লাটফর্ম ফি ভিন্ন হয়ে থাকে যেমন:
টপ লেভেল : ৫% প্লাটফর্ম ফি
মিড লেভেল: ১০ % প্লাটফর্ম ফি
এন্ট্রি লেভেল: ১৫ % প্লাটফর্ম ফি

৯৯ ডিজাইন এ কাজ পাওয়ার উপায়

৯৯ ডিজাইন এ ২ ভাবে কাজ করতে পারবেন।

১. সরাসরি ক্লায়েন্টের সাথে কাজ করা। ক্লায়েন্ট আপনার প্রোফাইল এবং পোর্টফোলিও দেখে সরাসরি আপনাকে হায়ার করতে পারে।

২. কন্টেস্ট এ অংশগ্রহণ করে আপনি আয় করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে ক্লায়েন্ট যখন একটি কন্টেস্ট পোস্ট করবে তখন সেখানে আপনি অন্যান্য ডিজাইনারদের সাথে প্রতিযোগিতা করবেন অর্থাৎ আপনি সেখানে ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন তৈরী করে কনটেস্ট এ পোস্ট করবেন। ক্লায়েন্ট যদি আপনাকে বিজয়ী ঘোষণা করে তাহলে আপনি আয় করতে পারবেন।

কিভাবে আমি পেমেন্ট পাব?

কোন প্রজেক্ট শেষ করার পর আপনি ডিজাইন হ্যান্ডওভার স্টেজে প্রবেশ করবেন অর্থাৎ এই স্টেজে ক্লায়েন্টকে মূল ফাইল প্রদান করার মাধ্যমে ডিজাইনের কপিরাইট দিয়ে দেওয়া হয়। ক্লায়েন্ট মূল্য ফাইল পাওয়ার পর কনফার্ম করলে ৯৯ ডিজাইন কর্তৃপক্ষকে আপনাকে পেমেন্ট প্রদান করবে।

পেমেন্ট পাওয়ার পর আপনি পেআউট রিকোয়েস্ট প্রদান করতে পারবেন। ৯৯ ডিজাইন এ কমপক্ষে ২৫ ডলার হলে আপনি পেআউট রিকোয়েস্ট করতে পারবেন। পেপাল, পেওনিয়ার বা ব্যাংক ট্রান্সফার দিয়ে আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

কিভাবে কন্টেস্ট এ অংশ নিবেন?

প্রতিদিন ৯৯ ডিজাইন এ ১৫০০ এর উপর কন্টেস্ট পোস্ট হয়ে থাকে। সার্চ বারে ইন্ডাস্ট্রি, কিওয়ার্ড, প্রাইজ এমাউন্ট এবং শিডিউল ফিল্টার করে আপনার জন্য একেবারে সঠিক কাজটি আপনি বের করতে পারবেন।

বিভিন্ন ধরণের কন্টেস্ট আছে যেমন লোগো ও ব্র্যান্ড কন্টেস্ট, ওয়েব ও অ্যাপ ডিজাইন, ব্যবসা ও বিজ্ঞাপন, ক্লথিং ও মার্চেন্ডাইজিং, আর্ট ও ইলাস্ট্রেশন, প্যাকেজিং ও লেভেল, বুক ও ম্যাগাজিন।

এসবের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে লোগো এবং ব্র্যান্ড কন্টেস্ট।  ২৯৯ ডলার থেকে কন্টেস্ট প্রাইজ শুরু হয়।  কন্টেস্ট এর নিয়ম অনুসারে কন্টেস্ট এ জয় লাভ করলে ক্লায়েন্টকে ১ টি লোগো এবং ১ টি ব্র্যান্ড গাইড প্রদান করতে হবে। লোগো ফাইল হবে JPG, PNG, Vector PDF, Adobe Illustrator আর ব্র্যান্ড ফাইল হবে উচ্চ রেজুলেশন এর সম্পাদনা করা যায় ফাইনাল ডিজাইন (PSD, AI অথবা INDD) এবং পিডিএফ। ব্র্যান্ড গাইডে যেসব বিষয় থাকবে তার মধ্যে রয়েছে কাভার, এবাউট পেজ, লোগোর ব্যবহার, টাইপোগ্রাফি (Typography), কালার পেলেট (Color palette), Glossary এবং ব্যাক কাভার।

পরিশেষে 

ফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইন নিয়ে এরকম একটি দীর্ঘ লেখা আপনি ভাল করে পড়েন তাহলে আপনার অবশ্যই এই ৩ টি প্লাটফর্ম সম্পর্কে ভাল একটা ধারণা হয়ে গেছে বলে আমি বিশ্বাস করি। যেহেতু ফাইবার আপওয়ার্কে দিন দিন ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে তাই আপনাকে অন্যান্য প্লাটফর্ম বেছে নিতে হবে। অন্যান্য প্লাটফর্ম এর মধ্যে ফ্রিল্যান্সার টোপাল এবং ৯৯ ডিজাইনকে অবশ্যই প্রথম দিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments