HomeDigital MarketingSEOএসইও (SEO) কি? এসইও স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

এসইও (SEO) কি? এসইও স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

এসইও (SEO) কি?

এসইও (Search Engine Optimization) এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটগুলোকে সার্চ ইঞ্জিনের র‍্যাংকিং এ ভাল অবস্থানে নেওয়া যায় । এসইও এর মাধ্যমে অর্গানিক ট্র্যাফিক বৃদ্ধি করা সম্ভব, যা কোনো পেইড বিজ্ঞাপনের উপর নির্ভর না করেই ওয়েবসাইটে ভিজিটর  নিয়ে আসে।

এসইও (SEO) গাইডলাইন 

একটি এসইও (SEO)  গাইডে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ টপিক থাকে, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা নিচে করা হলো:

. কীওয়ার্ড রিসার্চ (Keyword Research)

কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো এসইও এর অন্যতম  অস্ত্র। এর মাধ্যমে এমন সব জনপ্রিয় কীওয়ার্ড খুঁজে বের করা হয় যেগুলো  ব্যবহারকারীরা সার্চ ইঞ্জিনে অনুসন্ধান করে থাকে। কীওয়ার্ড রিসার্চের প্রধান ধাপগুলো:

টুল ব্যবহার করা: কী ওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য Google Keyword Planner, Ahrefs, SEMrush, moz ইত্যাদি কী ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন। উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন গুগল কীওয়ার্ড প্ল্যানার দিয়ে কিভাবে আপনি কীওয়ার্ড রিসার্চ করবেন । Enter products or servicers closely related to your business ঘরে কীওয়ার্ড লিখে দেশের নাম এবং ভাষা দিয়ে সার্চ দিলেই আপনি আপনার কীওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম এবং রিলেটেড কীওয়ার্ড সম্পর্কে সমস্ত তথ্য পাবেন ।

প্রতিযোগী গবেষণা: আপনার প্রতিযোগীরা কোন কীওয়ার্ডগুলোর উপর ফোকাস করছে, তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। Moz Authority Checker  এমন একটি টুল যা ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই প্রতিযোগীদের র‍্যাংকিং কীওয়ার্ড সম্পর্কে জানতে পারবেন । এছাড়া SEMrush সহ অন্যান্য টুল ব্যবহার করেও আপনি প্রতিযোগীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন । নিচে SEMrush এর কোন অপশন (Traffic Analytics) ব্যবহার করে প্রতিযোগী বিশ্লেষণ করবেন তার একটা স্ক্রিনশট দিলাম।

  • লং-টেইল কীওয়ার্ড নির্বাচন: বিশেষত কম প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং নির্দিষ্ট লং-টেইল কীওয়ার্ড খুঁজে বের করা।

আরও পড়ুন : কীওয়ার্ড রিসার্চ কি? কিভাবে কীওয়ার্ড রিসার্চ করতে হয়?

. অন পেজ এসইও (On-Page SEO)

অন পেজ এসইও হলো একটি ওয়েবসাইটের পেইজকে অভ্যন্তরীণভাবে অপটিমাইজ করার প্রক্রিয়া। ভালোভাবে অন পেজ এসইও করলে সেই পেজ সার্চ রেজাল্টে প্রথম পেজে অগ্রাধিকার পায় । এতে মূলত কীওয়ার্ড এবং কন্টেন্টের উপর ফোকাস থাকে। অন-পেজ এসইও সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারকে ওয়েবসাইটের অন্যান্য পেজে প্রবেশ করতে সাহায্য করে এবং হিউম্যান ভিজিটরের সাইট নেভিগেশন সহজ করে। অন পেজ এসইও এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:

  • টাইটেল ট্যাগ (Title Tag): পেইজের টাইটেল এমনভাবে লিখতে হবে যাতে এটি ব্যবহারকারীর সার্চের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
  • হেডিংস (Headings): অন পেইজ এসইও এর জন্য আর্টিকেল লেখার সময় H1, H2, H3 ট্যাগ ব্যবহার করে আর্টিকেল লিখুন।

বিস্তারিত পড়ুন : টাইটেল ট্যাগ হেডিং ট্যাগ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়? 

এসইও (SEO)

  • মেটা বর্ণনা (Meta Description): এটি একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ যা সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্টে প্রদর্শিত হয়। উপরের দেখতে পাচ্ছেন সার্চ রেজাল্টে কিভাবে মেটা বর্ণনা প্রদর্শিত হয়।  সঠিকভাবে মেটা ট্যাগ ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংকিং করা অনেক সহজ হয় কারণ সার্চ ইঞ্জিন মেটা ট্যাগকে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে  মেটা ট্যাগ নিয়ে বিস্তারিত জানা উচিৎ।
  • ইউআরএল (URL) গঠন: পেইজের ইউআরএল সংক্ষিপ্ত, অর্থপূর্ণ এবং কীওয়ার্ডসমৃদ্ধ হওয়া উচিত।
  • ইমেজ অপটিমাইজেশন: বড় সাইজের ইমেজ পেইজকে স্লো করে দেয় তাই ইমেজ আপলোড করার আগে ইমেজকে বিভিন্ন টুল ব্যবহার করে ইমেজের আকার যথাসম্ভব ছোট রাখুন। ইমেজে অ্যালট ট্যাগ দিন এবং ফাইলের নামকরণ করেন।
  • কীওয়ার্ডের সঠিক ব্যবহার: কন্টেন্টের ভিতরে কীওয়ার্ডগুলি এমন সাবলীল এবং সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবহার করুন যাতে একজন পাঠকের কাছে আপনার লেখা প্রাঞ্জল মনে হয়।

অন পেইজ এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

. অফপেজ এসইও (Off-Page SEO)

অফ-পেজ এসইও এটি মূলত ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে প্রভাব সৃষ্টি করে এমন বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে। একটি ওয়েবসাইটের নির্ভরযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধির জন্য অফ পেইজ এসইও জরুরি। অফ পেইজ এসইও করার জন্য যেসব কাজ করবেন:

লিঙ্ক বিল্ডিং (Link Building): গুগলের কাছে ওয়েবসাইটের জনপ্রিয়তা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি করতে চান? তাহলে আপনাকে অবশ্যই উচ্চমানের ব্যাকলিংক এর পেছনে সময় ব্যয় করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাক লিংক স্ট্র‍্যাটেজি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে।

অন্য ব্লগে গেস্ট ব্লগিং করে ব্যাক লিংক পেতে পারেন। ভাল ব্যাক লিংক পাওয়ার জন্য এটি একটি ভাল কৌশল।

তথ্যবহুল এবং কোয়ালিটিফুল আর্টিকেল লেখার চেষ্টা করুন তাহলে সহজেই ভালব্যাক লিংক পেতে পারেন। কারণ তথ্যবহুল আর্টিকেল লিখলে সেই আর্টিকেল এর লিংক অন্যরা তাদের ওয়েবসাইটে লিংক করতে উৎসাহিত হবে।

বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে বিক্রি করা ব্যাক লিঙ্ক কিনবেন না এতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

. টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)

টেকনিক্যাল এসইও হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা সার্চ ইঞ্জিনের টেকনিক্যাল রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করে একটি ওয়েবসাইটের অর্গানিক সার্চ র‍্যাংকিং এর উন্নতিতে সাহায্য করে। টেকনিক্যাল এসইও এর ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো প্রভাবক হিসেবে কাজ করে –

সাইটের গতি (Site Speed): ওয়েবসাইটের গতি সার্চ ইঞ্জিনের র‍্যাংকিং এর জন্য একটি বড় ফ্যাক্টর।  ওয়েবসাইটের গতি কম থাকলে পেইজ লোড নিতে দেরি হয় যা ভিজিটরের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই যেসব পেইজে লোডিং টাইম কম সেগুলো সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়। এক্ষেত্রে কিভাবে পেইজের লোডিং স্পীড বাড়ানোর জন্য যেসব টেকনিক আছে সেগুলো সম্পর্কে আপনার জানা উচিৎ।

PageSpeed Insights, GTmetrix, Pingdom এসব টুল ব্যবহার করে আপনি সহজেই আপনার সাইটের গতি কত সেটা বের করতে পারবেন।  আমি গুগলের PageSpeed Insights থেকে একটি ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স বের করে আপনাদের দেখলাম ।

মোবাইল-ফ্রেন্ডলি ডিজাইন (Mobile-Friendly Design): টেকনিক্যাল এসইও এর একটি বড় ফ্যাক্টর হচ্ছে মোবাইল ফ্র্যান্ডলি ডিজাইন। আমরা সবাই জানি বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করে থাকে। তাই আপনার সাইট যদি মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হয় তাহলে আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন অগ্রাধিকার দিবে না।

XML সাইটম্যাপ এবং রোবটস.টিএক্সটি ফাইল: সার্চ ইঞ্জিনের ক্রাউলিং এবং ইন্ডেক্সিং এর জন্য এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  গুগল সার্চ কনসোল এবং বিং ওয়েবমাস্টারের মাধ্যমে আপনি XML সাইটম্যাপ জমা দিতে পারবেন। সাইটম্যাপ তৈরি করা এবং জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন

SSL সার্টিফিকেট এবং HTTPS: ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার জন্য SSL এবং HTTPS ব্যবহারে জোর দেওয়া হয়।

. কন্টেন্ট এসইও (Content SEO)

কন্টেন্ট এসইও হলো এসইও-এর ভিত্তি যেখানে কন্টেন্টের মান, প্রাসঙ্গিকতা এবং কীভাবে তা অপটিমাইজ করা যায় তার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ইন-ডেপথ কন্টেন্ট: আপনার কন্টেন্টকে অবশ্যই তথ্যপূর্ণ ও গভীরভাবে বিশ্লেষণাত্মক হতে হবে। এমনভাবে কন্টেন্ট লিখবেন যাতে ভিজিটর আপনার পেইজ থেকে যা জানতে চাচ্ছেন তা যেন পরিপূর্ণভাবে জানতে পারেন।

কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন: কন্টেন্ট এর ভেতর কীওয়ার্ডগুলো সাবলীলভাবে ব্যবহার করুন যাতে পাঠকের কাছে কীওয়ার্ডগুলোব ন্যাচারাল মনে হয়। পুরো আর্টিকেল জুড়ে কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন।

ইউজার ইন্টারেকশন বাড়ানো: ব্যবহারকারীদের দীর্ঘ সময় ধরে রাখার জন্য আকর্ষণীয় এবং শিক্ষামূলক কন্টেন্ট তৈরি করুন। তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিন।

ইন্টারনাল লিঙ্কিং (Internal Linking): এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের এক পৃষ্ঠা থেকে অন্য পৃষ্ঠায় লিঙ্ক প্রদান করে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে ওয়েবসাইটের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে এবং এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন ওয়েবসাইটের অন্যান্য পেইজে ক্রাউল করার সুযোগ পায়।

আরও পড়ুনঃ কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করা হয়?

. লোকাল এসইও (Local SEO)

যারা স্থানীয় ব্যবসার জন্য এসইও করছেন, তাদের জন্য লোকাল এসইও গুরুত্বপূর্ণ।

গুগল মাই বিজনেস (Google My Business) অপটিমাইজেশন: গুগল মাই বিজনেসে আপনার ব্যবসা সম্পর্কে সব তথ্য সঠিকভাবে আপডেট রাখবেন যা আপনার লোকাল সার্চ রেজাল্টে অবস্থান ভাল পর্যায়ে নিয়ে যাবে।

স্থানীয় কীওয়ার্ড ব্যবহার: স্থানীয়ভাবে যেসব কীওয়ার্ড সার্চ এর সময় ব্যবহার হয় এমন কীওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে স্থানীয় সার্চ রেজাল্টে আপনার পেজ প্রথম দিকে প্রদর্শিত হবে ।

রিভিউ ম্যানেজমেন্ট: গ্রাহকদের রিভিউ সংগ্রহ করুন এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিন । তাদের মতামতের সুন্দরভাবে উত্তর দিন ।

. মোবাইল এসইও (Mobile SEO)

আজকাল বেশিরভাগ মানুষ মোবাইলে সার্চ করে, তাই মোবাইল এসইও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

AMP Plugin

রেসপন্সিভ ডিজাইন: আপনার ওয়েবসাইটটি এমনভাবে ডিজাইন করতে হবে যাতে মোবাইল স্ক্রীনে সুন্দরভাবে প্রদর্শিত হয়। আপনি যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন তাহলে AMP প্লাগিন ব্যবহার করুন তাহলে আপনি খুব সহজেই মোবাইল রেস্পন্সিভ ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারবেন ।

মোবাইল লোডিং স্পিড: মোবাইলে  দ্রুত লোড হতে পারে এমনভাবে ওয়েবপেজ তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে দ্রুত লোডিং এর ক্ষেত্রে যেসব ফ্যাক্টর বাধা সৃষ্টি করে সেগুলো দূর করতে হবে।

োবাইল ইউজার এক্সপেরিয়েন্স: ব্যবহারকারীর যাতে সহজে আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহার করতে পারে এজন্য সাইটের নেভিগেশন সিস্টেম ভাল হতে হবে।

. এসইও বিশ্লেষণ এবং মনিটরিং (SEO Analysis and Monitoring)

এসইও এর পারফরম্যান্স নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। এসইও বিশ্লেষণ এর জন্য কিছু  টুল আছে যেগুলো আপনি ব্যবহার করতে পারেন:

এসইও (SEO)

Google Analytics: আপনার ওয়েবসাইটে কতজন ব্যবহারকারী এসেছে, কীভাবে তারা এসেছেন গুগল এনালিটিক্স থেকে সহজেই ট্র্যাক করতে পারবেন। গুগল এনালিটিক্স এর রিপোর্ট পেজ থেকে আপনি ব্যবহারকারী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন ।

Google Search Console:  ওয়েবসাইটের ইমপ্রেশন, ক্লিক এবং ওয়েবসাইট এর পেইজের সমস্যাগুলো গুগল সার্চ কনসোল থেকে জানা যায়।

এছাড়া Ahrefs, Moz, SEMrush এর মত টুল ব্যবহার করে খুব সহজেই ওয়েবসাইটের এসইও বিশ্লেষণ করা যায়।

. এসইও সর্বশেষ ট্রেন্ড এবং আপডেট সম্পর্কে অবগত থাকা

গুগলের অ্যালগরিদম নিয়মিত আপডেট হয়, তাই এসইওতে সর্বশেষ ট্রেন্ডগুলো সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে কিছু হলো:

ভয়েস সার্চ অপটিমাইজেশন (Voice Search Optimization): এখন অনেক ব্যবহারকারী ভয়েস সার্চ ব্যবহার করে, তাই এই ধরনের সার্চের জন্য কন্টেন্টকে অপটিমাইজ করতে হবে।

AI এবং মেশিন লার্নিং: বর্তমানে আমরা সবাই জানি যে কন্টেন্টের জন্য AI এর ভূমিকা বেড়ে চলেছে। তাই AI ব্যবহার করে কিভাবে সহজেই এসইও করা যায় সেসব বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্সকে এসইও গবেষণায় ব্যবহার করতে হবে । ChatGPT এর মত AI টুল ব্যবহার করতে পারেন ।

ভিডিও এবং ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট: ইউটিউব এবং অন্যান্য ভিডিও প্ল্যাটফর্মেও এসইও খুব গুরুত্বপূর্ণ।

এসইও (SEO)  শেখার এবং প্রয়োগ করার মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্র্যাফিক উন্নত করা সম্ভব, এবং এটি আপনার ব্র্যান্ডকে দীর্ঘমেয়াদে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে।

কিভাবে সার্চ ইঞ্জিন কাজ করে? 

সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে?

সার্চ ইঞ্জিন তিনটি প্রধান ধাপের মাধ্যমে কাজ করে তাদের কার্যপ্রণালী সম্পন্ন করে থাকে। যেমন : ক্রলিং (Crawling), ইনডেক্সিং (Indexing), এবং ্যাংকিং/রেজাল্ট প্রদর্শন (Ranking/Serving Results)। নিচে এই প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:

১. ক্রলিং (Crawling)        

ক্রলিং হলো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম ধাপ, যেখানে একটি স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম (যাকে ক্রলার বা স্পাইডার বলা হয়) ওয়েব পেজগুলোতে প্রবেশ করে এবং সেগুলো স্ক্যান করে। ক্রলারগুলো ওয়েব পেইজের লিংকগুলো অনুসরণ করে নতুন পেইজ খুঁজে বের করে এবং পুরানো পেইজগুলো আপডেট করে থাকে।

কিভাবে ক্রলিং কাজ করে?

সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারগুলো একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে এবং সেই ওয়েবসাইটের প্রতিটি লিংককে অনুসরণ করে নতুন নতুন পেইজে যায়। এভাবে ক্রলারগুলো পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে।

ক্রলারগুলো পেইজের HTML কোড, কনটেন্ট এবং লিংকগুলো স্ক্যান করে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো সংগ্রহ করে সার্চ ইঞ্জিনের ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে।

.txt ফাইলের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের মালিকরা ক্রলারকে জানাতে পারেন কোন পেজগুলো স্ক্যান করা যাবে এবং কোনগুলো এড়িয়ে যেতে হবে।

২. ইনডেক্সিং (Indexing)

ইনডেক্সিং হলো ক্রলিংয়ের পরবর্তী ধাপ, যেখানে সার্চ ইঞ্জিন ক্রল করা পেজগুলোকে বিশ্লেষণ করে এবং একটি ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে, যাকে ইনডেক্স বলা হয়। এই ইনডেক্সে সার্চ ইঞ্জিন পেজের কনটেন্ট, কীওয়ার্ড, শিরোনাম, মেটা ট্যাগ, লিংক এবং অন্যান্য উপাদান বিশ্লেষণ করে।

কিভাবে ইনডেক্সিং কাজ করে?

  • সার্চ ইঞ্জিন পেইজের টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও এবং অন্যান্য ফাইলগুলো বিশ্লেষণ করে এবং পেজটির মূল বিষয়বস্তু চিহ্নিত করে।
  • পেইজের কনটেন্ট অনুযায়ী সার্চ ইঞ্জিন সেই পেজটিকে একটি নির্দিষ্ট বিভাগ বা ক্যাটাগরিতে লিপিবদ্ধ করে।
  • ইনডেক্স তৈরি হয়ে গেলে সার্চ ইঞ্জিন দ্রুত এবং সঠিকভাবে ব্যবহারকারীর সার্চ করা প্রশ্নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পেজগুলো খুঁজে দ্রুত বের করে ব্যবহারকারীর সামনে প্রদর্শন করে। তবে আপনি যদি মনে করেন গুগল আপনার এমন একটি পেইজ ইনডেক্স করেছে যা প্রয়োজন ছিল না তাহলে সেই ইনডেক্স পেইজ রিমুভ করার উপায় আছে।
  • Canonicalization প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন নিশ্চিত করে যে একটি ওয়েবসাইটের বিভিন্ন URL গুলোর মধ্যে কেবলমাত্র সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেজটি ইনডেক্স করা হচ্ছে।

৩. র‍্যাংকিং এবং রেজাল্ট প্রদর্শন (Ranking and Serving Results)

র‍্যাংকিং হলো সার্চ ইঞ্জিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যেখানে সার্চ ইঞ্জিন একটি নির্দিষ্ট প্রশ্ন বা সার্চ কুয়েরি‘র জন্য সেরা ও প্রাসঙ্গিক পেজগুলোকে র‍্যাংক করে। র‍্যাংকিংয়ের সময় সার্চ ইঞ্জিন একাধিক ফ্যাক্টর বিবেচনা করে।

কিভাবে র‍্যাংকিং কাজ করে?

  • ব্যবহারকারীরা সার্চ কুয়েরি অনুযায়ী সার্চ ইঞ্জিন তার ইনডেক্স ডাটাবেস থেকে প্রাসঙ্গিক পেজগুলো খুঁজে বের করে।
  • সার্চ ইঞ্জিন বিভিন্ন ফ্যাক্টর যেমন পেজের প্রাসঙ্গিকতা, কীওয়ার্ড ব্যবহার, পেজের গুণগত মান, ব্যাকলিংক সংখ্যা এবং পেজের ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে র‍্যাংক নির্ধারণ করে।
  • সার্চ ইঞ্জিন সাধারণত অ্যালগরিদম ব্যবহার করে র‍্যাংকিংয়ের কাজ করে, যার মাধ্যমে পেজগুলোর মান যাচাই করা হয় এবং ব্যবহারকারীর জন্য সেরা রেজাল্ট প্রদান করা হয়।

র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর

  • কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা: পেজটি ব্যবহারকারীর সার্চ কুয়েরির সাথে কতটা প্রাসঙ্গিক তা যাচাই করা হয়।
  • ব্যাকলিংক: পেজটির লিংক কতগুলো এবং সেগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে এসেছে সেটা সার্চ ইঞ্জিন বিশ্লেষণ করে।
  • পেজের গুণগত মান: সার্চ ইঞ্জিন পেইজের কনটেন্টের  মান, তথ্যের গভীরতা এবং পাঠকের জন্য কতটা উপকারী সেগুলো বিবেচনা করে।
  • সাইট স্পিড: ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড র‍্যাংকিং এর জন্য একটা বড় ফ্যাক্টর ।
  • মোবাইল ফ্রেন্ডলিনেস: পেইজের ডিজাইন মোবাইল ফ্র‍্যান্ডলি হলে সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং এর ক্ষেত্রে গুরুত্ব প্রদান করে।
উদাহরণ
  • ক্রলিং: ধরুন আপনি একটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন। সার্চ ইঞ্জিনের ক্রলার আপনার ওয়েবসাইটটি পরিদর্শন করবে এবং প্রতিটি পেজ স্ক্যান করবে।
  • ইনডেক্সিং: স্ক্যান করা পেজের তথ্য সার্চ ইঞ্জিন তার ডাটাবেসে ইনডেক্স করবে, যাতে প্রয়োজন হলে দ্রুত সেই তথ্য ব্যবহার করা যায়।
  • র‍্যাংকিং: যখন একজন ব্যবহারকারী আপনার ওয়েবসাইটের সাথে প্রাসঙ্গিক কোন কুয়েরি সার্চ করে, তখন সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইটকে অন্যান্য প্রাসঙ্গিক পেইজের মধ্যে র‍্যাংক করবে এবং সার্চ রেজাল্টে দেখাবে।

উপসংহার: সার্চ ইঞ্জিন মূলত ক্রলিং, ইনডেক্সিং এবং র‍্যাংকিং এই তিনটি ধাপে কাজ করে। সার্চ ইঞ্জিনের অ্যালগরিদম ওয়েব পেইজগুলোর তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং ব্যবহারকারীর সার্চ কুয়েরির জন্য সর্বোত্তম রেজাল্ট প্রদান করে। সঠিক SEO কৌশল অনুসরণ করলে একটি ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে ভালোভাবে র‍্যাংক করতে পারে এবং বেশি ভিজিটর আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।

এসইও (SEO) কেন প্রয়োজন? 

এসইও (Search Engine Optimization) একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েব পেইজ সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে আসে, বিশেষ করে সার্চ রেজাল্ট পেইজে (SERP) প্রথম সারিতেব দেখা যায়। এসইও-এর প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ:

. ওয়েবসাইটের দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি

সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় থাকা ওয়েবসাইটগুলো বেশি ভিজিটর পায়। তাই এসইও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অবস্থান উঁচুতে আনলে ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিনে সহজে দৃশ্যমান হয়।

. ট্রাফিক বৃদ্ধি

সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে থাকা ওয়েবসাইটগুলো বেশি ক্লিক পায়। এসইও এর মাধ্যমে অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি পায় অর্থাৎ বিনামূল্যে ওয়েবসাইটে দর্শনার্থী আসে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন সার্চ ইঞ্জিনে ৮.৫ বিলিয়ন সার্চ হয় এবং একটি ওয়েবসাইট এর মোট ট্রাফিকের ৫৩% সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসে।

. বিশ্বস্ততা প্রামাণিকতা বৃদ্ধি

সার্চ ইঞ্জিনে শীর্ষ অবস্থানে থাকা ওয়েবসাইটগুলোকে ব্যবহারকারীরা বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করে। গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে থাকা মানে ওয়েবসাইটটি বিষয়বস্তু ও কন্টেন্টের দিক থেকে ভাল এবং প্রাসঙ্গিক।

. ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি

এসইও-এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ভাল র‍্যাংকিং করাতে পারলে প্রচুর ভিজিটর পাওয়া যায়, যার ফলে সম্ভাব্য গ্রাহক বাড়ে এবং ব্যবসার বিক্রয় বৃদ্ধি পায়।

. ব্যয়বহুল বিজ্ঞাপনের বিকল্প

পেইড বিজ্ঞাপন যেমন পিপিসি (PPC) বা সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের তুলনায়, এসইও কম খরচে দীর্ঘমেয়াদে ফলপ্রসূ হতে পারে। অর্গানিক ফলাফলের মাধ্যমে যে ভিজিটর পাওয়া যায়, সেটি বিনামূল্যে আসে।

. ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধি

এসইও-এর অংশ হিসেবে ওয়েবসাইটের গঠন, কনটেন্ট উন্নত করা হয় এবং লোডিং সময় কমানো হয়, যা ব্যবহারকারীদের জন্য ভালো অভিজ্ঞতা প্রদান করে এবং ব্যবহারকারীরা সন্তুষ্ট থাক।

. প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা

প্রতিযোগীরা যদি এসইও ভালোভাবে করে থাকে, তবে ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আপনাকেও এসইও করতে হবে।

এসইও (SEO) কেবলমাত্র সার্চ ইঞ্জিনের জন্য নয়, এটি একটি ওয়েবসাইটকে ব্যবহারকারীদের জন্যও আরও কার্যকর ও সহজ করে তুলতে সাহায্য করে।

পাঠক জিজ্ঞাসা 

এসইও কত প্রকার?

এসইও এর প্রকারভেদ:

  • অন-পেজ এসইও (On-Page SEO)
  • অফ-পেজ এসইও (Off-Page SEO)
  • টেকনিক্যাল এসইও (Technical SEO)
  • কন্টেন্ট এসইও (Content SEO)
  • লোকাল এসইও (Local SEO)
  • মোবাইল এসইও (Mobile SEO)
  • ল্যান্ডিং পেজ এসইও (Landing Page SEO)
  • হোয়াইট হ্যাট এবং ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ( White-Hat & Black-Hat SEO)
  • গ্রে হ্যাট এসইও ( Gray-Hat SEO)
  • ইকমার্স এসইও (E-commerce SEO)
  • ইন্টারন্যাশনাল এসইও (International SEO)
  • নেগেটিভ এসইও Negative SEO

এসইও শিখতে কত দিন লাগে?

এসইও অনেক বিস্তৃত একটা বিষয় তাই এসইও শিখতে ঠিক কতদিন লাগে এটা বলা কঠিন। ভালোভাবে এসইও শিখতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে । আর এই বিষয়টা প্রতিনিয়ত আপডেট হচ্ছে তাই আপনাকে শিক্ষার মধ্যেই থাকতে হবে।  নতুন নতুন যে ট্রেন্ড আসবে সেগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে।

এসইও ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানতে চাই?

অনেকেই আমাদের এই প্রশ্নটা করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই এসইও ক্যারিয়ার হিসেবে ভাল অপশন হতে পারে । তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে এই সেক্টরে অনেক এক্সপার্ট রয়েছে তাই এদের সাথে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনাকে এক্সপার্ট লেভেলে যেতে হবে। একজন এসইও এক্সপার্ট কি রকম আয় করে থাকে জানার জন্য এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন “কিভাবে এসইও এক্সপার্ট আয় করে থাকে?”

 এসইও এর কাজ কি?

এসইও এর মূল কাজ হচ্ছে ওয়েবসাইটের সামগ্রিক গঠনকে এমনভাবে বিন্যস্ত করা যাতে সার্চ ইঞ্জিন ক্রলার ওয়েবসাইট সহজেই ক্রল করে পেজের ইনডেক্স করতে পারে । এছাড়া হিউম্যান ভিজিটররা যাতে সহজেই সাইট নেভিগেট করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যাবলী সম্পাদন করা ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments