HomeMarketing Guidelinesডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমগুলো কি কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমগুলো কি কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করাকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। ডিজিটাল মাধ্যমের মধ্যে রয়েছে ওয়েবসাইট, অ্যাপ্স, ইমেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইত্যাদি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি কম খরচে এবং দ্রুত বিশাল পরিমাণ মানুষের কাছে ব্র্যান্ড পরিচিতি এবং পণ্য পৌঁছে দিতে পারবেন। এর মাধ্যমে আপনি আপনার ব্র্যান্ডের অনলাইন উপস্থিতি বাড়াতে পারবেন, এর ফলে টার্গেট গ্রাহকদের এনগেজমেন্ট, ক্লিকের পরিমাণ বাড়বে এবং পাশাপাশি বিক্রয় বাড়বে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব

ডিজিটাল মার্কেটিং এর কিছু পরিসংখ্যান দেখলেই বুঝতে পারবেন এর গুরুত্ব কেমন।

২০২৪ সালের মধ্যে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের আকার হবে ৬৬৭ বিলিয়ন ডলার এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ৭৮৬.২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।

২০২০ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি হচ্ছে ৯%

৬৩% ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মার্কেটিং এ তাদের বাজেট বাড়িয়েছে এবং ২০২৪ সালে ৯৪% ছোট ব্যবসায়ী তাদের বাজেট বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।

PPC মার্কেটিং এ প্রতি ১ ডলার বিনিয়োগে ডলার রিটার্ন আসছে।

ফেসবুক এডস এবং গুগল এডস এর রিটার্ন সবচেয়ে বেশি।

ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মার্কেটিং এর সুবিধাগুলো হচ্ছেঃ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে মূল্যবান তথ্য প্রাপ্তি

এই মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে আপনি আপনার গ্রাহকের এনালিটিক্স দেখতে পারবেন যা আপনাকে আপনার গ্রাহকের বিক্রয় সাইকেল সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা প্রদান করবে।

আপনার গ্রাহক কোন ধরণের পণ্য পছন্দ করে, ক্রয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে তিনি কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করেন, পণ্য ক্রয় করার আগে কোন বিষয়গুলো তিনি বিবেচনা করেন ইত্যাদি বিষয় আপনি জানতে পারবেন। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে আপনার ব্যবসার কৌশল ঠিক করতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং আপনাকে বিশাল পরিমাণ গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিবে

এই মার্কেটিং ব্যবহার করে আপনি শুধু আপনার শহর বা দেশ নয় সারা বিশ্বের শ্রোতাদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। যেমন বিশ্বের ৬ বিলিয়নের বেশি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর মাধ্যমে বিশাল সংখ্যক মানুষের কাছে আপনার পণ্য পৌঁছে দিতে পারেন।

কম খরচে মার্কেটিং

প্রচলিত পদ্ধতি যেমন টিভি বা ছাপানো পত্রিকার চেয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে অনেক কম খরচে আপনি মার্কেটিং করতে পারবেন। ফেসবুকে, টিকটক, গুগলে মাত্র কয়েক ডলার খরচ করে আপনি কয়েক হাজার গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যেতে পারবেন।

pay-per-click (PPC) বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে আপনি তখনই অর্থ প্রদান করবেন যখন কেউ আপনার প্রদত্ত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবে।

গুগল সার্চ রেজাল্টে অগ্রাধিকার

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং পারফর্মেন্স উন্নত করতে পারবেন। গুগল সার্চে যদি র‍্যাংকিং ভাল থাকে তাহলে আপনি প্রচুর ভিজিটর পাবেন। আর যত বেশি ভিজিটর তত আপনার বিক্রি বাড়বে।

গ্রাহকের সম্পৃক্ততা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারলে গ্রাহকদের সম্পৃক্ততা অন্য যেকোন মাধ্যমের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। এই মাধ্যমে গ্রাহকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা যায় বলে গ্রাহকের সম্পৃক্ততা বেশি থাকে।

এছাড়া আপনি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমেও অনেক মানুষকে আকর্ষণ করতে পারবেন। আপনার লেখা যদি ভাল মানের হয় তাহলে দেখবেন আপনার পাঠকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এরাই একসময় আপনার ক্রেতায় রুপান্তরিত হবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যম

বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবেন। এসব মাধ্যমের মধ্যে রয়েছেঃ

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (এসইও)
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং
ভিডিও মার্কেটিং
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং
এসএমএস মার্কেটিং

নিচে এগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলোঃ

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (এসইও)

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন হচ্ছে ওয়েবপেজকে এমনভাবে অপ্টিমাইজ করা যাতে সার্চ ইঞ্জিনে ভাল র‍্যাংকিং পায়।

ভাল এসইও আপনার অনলাইন অবস্থান অনেক শক্তিশালী করবে যা কারণে ভিজিটরের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি আপনার বিক্রয় বাড়াতে সাহায্য করবে।

এসইও এর মধ্যে কিছু বিষয় রয়েছে যেমনঃ

কিওয়ার্ড রিসার্চ
ইন্টারনাল লিংকিং
এক্সটার্নাল লিংকিং (ব্যাক লিংক)
মোবাইল-ফ্রেন্ডলি ডিজাইন
সাইট লোডিং স্পিড
ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা
রেস্পন্সিভ ডিজাইন

উপরের বিষয়গুলো অনুসরণ করে আপনি যদি ওয়েবসাইট এবং কনেন্ট তৈরি করতে পারেন তাহলে সার্চ ইঞ্জিন সার্চ রেজাল্টে আপনার ওয়েবপেজকে প্রথমদিকে স্থান দিবে। এর ফলে আপনি প্রচুর পরিমাণে অর্গানিক ট্রাফিক পাবেন।

আরও পড়ুন: এসইও (SEO) কি? এসইও স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং

search engine marketing

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হচ্ছে পেইড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে  একটি ওয়েবসাইটকে প্রমোট করা।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে পিপিসি (PPC) বিজ্ঞাপন। প্রতি ক্লিকের বিপরীতে পেমেন্ট করা। ফেসবুক এডস, গুগল এডস এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনি পিপিসি বিজ্ঞাপন প্রদান করতে পারবেন।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং নিলাম পদ্ধতিতে কাজ করে। বিজ্ঞাপনদাতারা নির্দিষ্ট কিওয়ার্ড এর জন্য বিড করে থাকে। আবার বিজ্ঞাপনদাতারা চাইলে নির্দিষ্ট বয়স, স্থান, লিঙ্গ বা পেশাভেদে বিজ্ঞাপন প্রদান করতে পারে।

বিড এমাউন্ট, বিজ্ঞাপনের প্রাসঙ্গিকতা, বিজ্ঞাপনের মান, বিজ্ঞাপন দ্বারা একজন গ্রাহক কিভাবে উপকৃত হবে এসব বিষয়ের উপর নির্ভর করে একটি বিজ্ঞাপন থেকে কি পরিমাণ রিটার্ন আসবে।

এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং এর সুবিধা হচ্ছে গ্রাহক টার্গেট করে বিজ্ঞাপন দেওয়ার কারণে দ্রুত প্রকৃত গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো যায় এবং কনভার্সন বেশি হয়।

অসুবিধার বিষয় হচ্ছে এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে অনেক খরচ করতে হবে। চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সঠিক বিজ্ঞাপন কৌশল তৈরি করা এবং বাস্তবায়ন করে বিক্রয় বাড়ানো।

কন্টেন্ট মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং হচ্ছে তথ্যবহুল, মানুষের চাহিদা মেটায় এমন কন্টেন্ট তৈরি করে গ্রাহকদের আকর্ষণ করা।

বিভিন্নভাবে আপনি কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে পারেন যেমন;

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট
ব্লগ পোস্ট
ইনফোগ্রাফিক্স
পডকাস্ট
ইবুক
ইমেইল নিউজলেটার
কেস স্টাডি
প্রেস রিলিজ

পেইড বিজ্ঞাপনে সরাসরি গ্রাহকদের ক্রয় করতে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু দেখা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্রেতারা পেইড বিজ্ঞাপনকে খুব একটা পাত্তা দেন না।

কন্টেন্ট মার্কেটিং সরাসরি গ্রাহকদের ক্রয় করতে বলে না। এর মাধ্যমে গ্রাহকের সমস্যা সমাধান করা হয়, তাদের প্রয়োজনীয় বিষয় সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়া হয় বা বিনোদনের ব্যবস্থা করে। এসবের মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করে এবং ধীরে ধীরে তাদের গ্রাহকে পরিণত করার চেষ্টা করা হয়।

Content Marketing Institute এর তথ্য মতে ৭৫ শতাংশ ব্র্যান্ড বলেছে কন্টেন্ট মার্কেটিং গ্রাহকদের তাদের ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বাস এবং আগ্রহ বাড়াতে বিরাট ভূমিকা পালন করেছে।

আরও পড়ুন: কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করবেন? গাইডলাইন।

ভিডিও মার্কেটিং

ভিডিও মার্কেটিং

আপনি যখন আপনার ব্যবসার পণ্য বা সেবা ভিডিওর মাধ্যমে ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব ইত্যাদির মাধ্যমে প্রমোট করবেন তখন তাকে ভিডিও মার্কেটিং বলে।

ভিডিও মার্কেটিং সফলভাবে করার জন্য আপনাকে অবশ্যই দৃষ্টি আকর্ষণ করে এমন ভিডিও তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে এডিটিং একটা বড় ফ্যাক্টর। ভাল এডিটিং একটা সাধারণ ভিডিওকে অসাধারণ করে দিতে পারে। একটি ভাল এডিটিং করা ভিডিও প্রচুর মানুষকে আকর্ষণ করতে পারে।

ভিডিও মার্কেটিং অন্যান্য মার্কেটিং এর তুলনায় কিছুটা সহজ। হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়েই আপনি একটি মানসম্মত ভিডিও তৈরি করে ফেলতে পারবেন এবং মোবাইলেই এডিট করে ভিডিও প্লাটফর্মে আপলোড করতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, টিকটক, ইন্সটাগ্রাম, লিংকডইন ইত্যাদি ব্যবহার করে টার্গেট গ্রাহকের কাছে ব্র‍্যান্ড পরিচিত এবং পণ্য পৌঁছে দেওয়াকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে।

যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়ায় সব বয়সী, স্থান, পেশার মানুষ পাওয়া যায় তাই এই প্লাটফর্মে মার্কেটিং থেকে রিটার্ন অন্য যেকোন প্লাটফর্মের তুলনায় বেশি হয়।

পেইড বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে আপনি সহজেই টার্গেট গ্রাহকের কাছে দ্রুত পৌঁছাতে পারবেন। এই প্লাটফর্মে সব ধরণের মানুষের উপস্থিতি থাকায় টার্গেট গ্রাহক খুঁজে পাওয়া সহজ হয়।

নিয়মিত পোস্ট দেয়া, শ্রোতাদের লাইক, কমেন্ট, শেয়ার করতে উৎসাহিত করা এবং কমেন্টে বা পার্সোনাল মেসেজের মাধ্যমে শ্রোতাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারলে আপনি শ্রোতাদের এনগেজমেন্ট বাড়াতে পারবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর সুবিধা হচ্ছে একই প্লাটফর্মে বিশাল পরিমাণ মানুষ পাওয়া যায়। এর ফলে একটি ব্র‍্যান্ডকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হয়।

এছাড়া এনালিটিক্স ড্যাশবোর্ডে আপনার পারফরম্যান্স ট্র‍্যাক করতে পারবেন। শ্রোতারা আপনার কন্টেন্ট এ কিভাবে রিঅ্যাক্ট করছে সেটা আপনি এনালিটিক্স ড্যাশবোর্ডে দেখতে পারবেন।

আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কি? এর গুরুত্ব, কৌশল, শুরু করার টিপস।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং (ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যম)

ইনফ্লুয়েন্সার হচ্ছে একজন হাই প্রোফাইল, বিশ্বাসযোগ্য এবং ব্যক্তিত্ববান ব্যক্তি যাকে অনেক মানুষ অনুসরণ করে।

ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে ব্যবসার পণ্য বা সেবা প্রমোট করাকে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং বলে। বর্তমানে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে মার্কেটিং করার জন্য প্রচুর খরচ করছে।

ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ইনফ্লুয়েন্সারদের দিয়ে মার্কেটিং করায় না। কারণ ইনফ্লুয়েন্সাররা অনেক পারিশ্রমিক দাবি করে থাকে।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর সুবিধা হচ্ছে এর মাধ্যমে ব্র‍্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত বিক্রয় বাড়ানো যায়। এর কারণ হচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সারদের বিশাল অনুসারী থাকে এবং অনুসারীদের উপর তাদের একটা প্রভাব থাকে। এই প্রভাবকে ব্যবহার করে ইনফ্লুয়েন্সাররা বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সর্ড প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মাধ্যমে ব্র‍্যান্ড সচেতনতা সৃষ্টি করতে হলে আপনাকে সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার বেছে নিতে হবে। যাদের কথায় মানুষ বিশ্বাস করে। আরেকটা বিষয় দেখতে হবে সেটা হচ্ছে তাদের কন্টেন্ট এর মান এবং সৃজনশীলতা। একটি সৃজনশীল আকর্ষণীয় কন্টেন্ট সহজেই মানুষকে আকর্ষণ করতে পারে।

এক জরিপে দেখা গেছে জেন জি প্রজন্মের ৬১ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সারদের রিকোমেন্ডেশানকে বিশ্বাস করে।

আরও পড়ুন: ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটি কি? বিস্তারিত গাইডলাইন।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং মডেল যেখানে একজন মার্কেটার কমিশনের বিনিময়ে অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রয় করে থাকে।

মার্কেটাররা অ্যাফিলিয়েট লিংক তাদের ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব, মেইল ইত্যাদি মাধ্যমে কন্টেন্টের ভেতর অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে। গ্রাহকরা এসব লিংকে ক্লিক করে যখন মার্চেন্টের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে কিছু ক্রয় করে তখন লাভের কিছু অংশ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার পেয়ে থাকে।

ব্যবসায়ীদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যয় সাশ্রয়ী একটি মার্কেটিং পদ্ধতি যার মাধ্যমে কম খরচে বিশাল পরিমাণ মানুষের কাছে পণ্য পৌঁছানো যায় এবং বিক্রয়ের বিপরীতে মার্কেটারদের পেমেন্ট প্রদান করা হয়।

বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্লাটফর্ম আছে যেমন:

Amazon Associates
ShareAsale
ClickBank
eBay
Rakuten
Shopify
CJ Affiliate

একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার এর সুবিধা হচ্ছে তিনি চাইলেই একসাথে অনেক কোম্পানির লিংক শেয়ার করতে পারেন। তার আয়ের কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই। যত বেশি বিক্রয় হবে তত বেশি কমিশন পাবেন।

আবার অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কমিশন মডেল আছে যেখানে অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে মার্চেন্টের ওয়েবসাইটে ভিজিটর নিয়ে আসতে পারলেই কমিশন পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং গাইডলাইনঃ সংজ্ঞা, সুবিধা, শুরু করার ধাপ।

ইমেইল মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং হচ্ছে ইমেইলের মাধ্যমে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করা। ইমেইলের মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে আকর্ষণীয় কন্টেন্ট পাঠিয়ে গ্রাহকদের পণ্য ক্রয় করতে, সাবস্ক্রাইব বা ফর্ম পূরণ করতে উৎসাহিত করা হয়।

ইমেইল মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় এবং ব্যয় সাশ্রয়ী মার্কেটিং কৌশল । এই মার্কেটিং কৌশলের রিটার্ন বেশ ভাল। প্রতি ডলার খরচের বিপরীতে ৩৬ থেকে ৪২ ডলার পর্যন্ত রিটার্ন আসে।

ইমেইল মার্কেটিং এর বিভিন্ন ধরণের টুলস আছে যেমনঃ

Mailchimp
HubSpot Email Marketing
GetResponse
Brevo
AWeber
Constant Contact

ইমেইলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে সরাসরি পারসন টু পারসন যোগাযোগের কারণে গ্রাহকদের সাথে সম্পর্কটা বেশ মজবুত হয়। তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে ইমেইলে শুধু নিজের পণ্যের প্রচার চালালেই হবে না গ্রাহকদের উপকার হয় এমন কন্টেন্টও গ্রাহকদের পাঠাতে হবে। তাহলে গ্রাহক এনগেজমেন্ট এবং কনভার্সন বাড়বে।

আরও পড়ুন: ইমেইল মার্কেটিং এর সংজ্ঞা টুলস সুবিধা এবং শুরু করার গাইডলাইন।

এসএমএস মার্কেটিং

এসএমএস মার্কেটিং

এসএমস এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পণ্য বা সেবা প্রমোট করাই হচ্ছে এসএমএস মার্কেটিং। এসএমএস এর মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, ডিসকাউন্ট, অফার ইত্যাদি দিয়ে গ্রাহককে ক্রয় করতে উৎসাহিত করাই হচ্ছে এসএমএস মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য।

এসএমএস মার্কেটিং এর সুবিধা হচ্ছে গ্রাহক এসএমএস টি দেখবে এটা নিশ্চিত। আমি নিজেই দেখি। আমার মোবাইলে প্রায় সময় বাটা, এপেক্স, স্বপ্ন সুপারশপসহ নানা প্রতিষ্ঠান তাদের ডিসকাউন্ট, বিভিন্ন অফার, নতুন ডিজাইনের পণ্য ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এসএমএস করে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ৯০ শতাংশ মানুষ এসএমএস পাওয়ার ৩ মিনিটের মধ্যে সেটা পড়ে থাকে। তাই এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং করা বেশ ফলপ্রসূ।

এই পদ্ধতিতে মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে একটি মোবাইল নাম্বার লিস্ট তৈরি করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে আপনি আপনার টার্গেট গ্রাহকদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করতে পারবেন।

নাম্বার সংগ্রহ করার আগে আপনাকে প্রাইভেসি পলিসি তৈরি করতে হবে। যারা আপনাকে নাম্বার প্রদান করবে তাদের নাম্বারের হেফাজত আপনাকে করতে হবে। শুধুমাত্র আপনার প্রমোশনের কাজ ছাড়া অন্য কোন কাজে সেসব নাম্বার ব্যবহার করা যাবে না। এভাবে পলিসি তৈরি করে গ্রাহকদের মোবাইল নাম্বার প্রদান করতে উৎসাহিত করুন।

পরিশেষে

ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে মার্কেটিং কার্যক্রম পরিচালনা করা। এসইও, পে-পার-ক্লিক, সোশাল মিডিয়া মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং এগুলো হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উদাহরণ।

ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে টার্গেট গ্রাহকদের কাছে সহজেই ব্র‍্যান্ড পরিচিত এবং পণ্য উপস্থাপন করা যায়। এছাড়া গ্রাহকদের কাছে পণ্য বিক্রয়ে সরাসরি বা পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করা হয়।

ডিজিটাল মার্কেটিং সফল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই কৌশল তৈরি করতে হবে, বাজার নিয়ে গবেষণা করতে হবে, সঠিক মাধ্যম বেছে নিতে হবে এবং নিয়মিত পারফরম্যান্স মনিটর করতে হবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular