HomeBusiness GuidelinesWooCommerce এর মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা করার গাইডলাইন।

WooCommerce এর মাধ্যমে অনলাইনে ব্যবসা করার গাইডলাইন।

WooCommerce কি?

WooCommerce হল একটি ওপেন-সোর্স প্লাগইন যা ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য WordPress-এ ব্যবহৃত হয়। WooCommerce প্লাগিন এর মাধ্যমে আপনি  সহজেই পণ্য তালিকা, অর্ডার ম্যানেজমেন্ট, পেমেন্ট গেটওয়ে ইন্টিগ্রেশন, শিপিং অপশন ইত্যাদি যুক্ত করতে পারবেন।

এটি ব্যবহার করে আপনি নিজের ইচ্ছামত ডিজাইন কাস্টমাইজ করতে পারেন এবং বিভিন্ন ধরণের ই-কমার্স ফিচার যুক্ত করতে পারবেন। বিভিন্ন ফিচার সুবিধা থাকার কারণে আপনি চাইলেই WooCommerce ব্যবহার করে আয় করতে পারবেন।

WooCommerce প্লাগিন এর ফিচার 

WooCommerce প্লাগিন এর বেশ কিছু ফিচার আছে যা ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন । ফিচারের মধ্যে রয়েছে :

woocommerce ব্যবহার করে আয়

১।  ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট (Inventory Management)
২।  শপিং নীতিমালা
৩। অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (Order Management)
৪। বিক্রয় রিপোর্ট
৫। পেমেন্ট ম্যাথড

১। ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট (Inventory Management)

যখন আপনি একটি অনলাইন স্টোর তৈরী করবেন তখন আপনার কাছে সবচেয়ে কঠিন কাজ মনে হতে পারে ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টকে। WooCommerce এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে খুব সহজে বিভিন্ন ধরণের পণ্য তাদের ক্যাটাগরি অনুযায়ী যুক্ত করতে পারবেন । WooCommerce ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্টের জন্য  Product অপশন ক্লিক করলে পণ্য যুক্ত করার ইন্টারফেস আসবে।  স্ক্রল করে নিচে আসলেই Inventory অপশন দেখতে পাবেন । তারপর SKU (stock-keeping unit) এবং অন্যান্য ঘর পূরণ করুন ।

আপনার যুক্ত করা পণ্য গ্রাহকরা চাইলে সাইজ, রং বা দাম ইত্যাদির ভিত্তিতে কাস্টমাইজ করতে পারবে ।

গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন ধরণের প্রোমো এবং ডিসকাউন্ট অফার দিতে পারেন।

২। WooCommerce প্লাগিন এর শপিং রুলস 

woocommerce এর শপিং রুল ফিচার আছে যার কারণে যার ফলে ক্রেতারা সহজেই পণ্য ক্রয় করার জন্য অর্ডার দিতে পারে । এর ফিচার এর মাধ্যমে বিক্রেতা চেকআউট রেস্ট্রিক্ট করতে পারে, শিপিং পেমেন্ট, ডিসকাউন্ট দেওয়াসহ অনেক কিছু করা যায় ।

৩। অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (Order Management)

order management system

অর্ডার ম্যানেজমেন্ট ফিচার ব্যবহার করে আপনি আপনার গ্রাহকদের করা সকল অর্ডার ম্যানেজ করতে পারবেন । রিপোর্ট থেকে আপনি গ্রাস সেলস , নেট সেলস, অর্ডার সংখ্যা, আইটেম ক্রয়ের সংখ্যা , রিফান্ড এবং শিপিং চার্জ ইত্যাদি বিষয় দেখতে পারবেন ।

৪। বিক্রয় রিপোর্ট 

বিক্রয় রিপোর্টে বিক্রয় সংক্রান্ত সকল তথ্য দেওয়া থাকে ।  বিক্রয় থেকে লাভ লসের বিষয়েও তথ্য পাবেন।

৫। পেমেন্ট ম্যাথড 

WooCommerce বিভিন্ন ধরণের পেমেন্ট ম্যাথড সরবরাহ করে থাকে, এদের মধ্যে রয়েছে ক্যাশ ও ডেলিভারি, ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার, ডিজিটাল পেমেন্ট, পেপাল ইত্যাদি ।

WooCommerce প্লাগিন কেন ব্যবহার করবেন ? 

WooCommerce হচ্ছে একটি জনপ্রিয় ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই অনলাইন স্টোর খুলে পণ্য বিক্রিয় করতে পারবেন । ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে অনলাইন স্টোর পরিচালনাকরীদের মধ্যে  ৯৫.৭% WooCommerce ব্যবহার করে। তার মানে আপনি বুঝতে পারছেন এটি কত জনপ্রিয়!

WooCommerce এর বেশ কিছু ব্যবসায়ী বান্ধব ফিচার আছে যার কারণে আপনি এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করবেন।

আপনি যদি সহজে এবং প্রফেশনালী অনলাইন স্টোর খুলে ব্যবসা করতে চান তাহলে আপনার জন্য WooCommerce সবচেয়ে ভাল প্লাটফর্ম হবে ।

এটি এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি প্রডাক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং ট্রানজেকশন মেনেজমেন্টে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ।

বিল্ট-ইন মার্কেটিং এবং এনালিটিক্স টুল অনলাইন স্টোরের পারফর্মেন্স যেমন অর্ডার মূল্যের গড়, মোট বিক্রয় ইত্যাদি । এসব সুবিধার কারণে মানুষ WooCommerce ব্যবহার করতে চায়।

WooCommerce প্লাগিন ব্যবহারের সুবিধা

WooCommerce ব্যবহার করে আপনি বেশ কিছু সুবিধা পাবেন, নিচে এরকম বেশ কিছু সুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো :

ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রেন্ডলি

WooCommerce প্লাগিন ওয়ার্ডপ্রেস প্লাটফর্মকে কেন্দ্র করেই তাদের সকল সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন ফিচার তৈরি করেছে। একজন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী খুব সহজেই এই প্লাগিন ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারবে। এর মাধ্যমে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা ক্যাটাগরি অনুযায়ী গ্রাহকের সামনে প্রদর্শন করতে পারবেন।

পেমেন্ট গেটওয়ে

WooCommerce ব্যবহারের আরেকটা সুবিধা হচ্ছে সহজে বিভিন্ন ধরণের পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করা যায়। এই প্লাগিনের ইন বিল্ট পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে আপনি যেকোনো প্রকার লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি

WooCommerce তার গ্রাহকদের ব্যবহারের সুবিধার জন্য মোবাইল ফ্রেন্ডলি থিম অফার করে থাকে। কিছু থিম পেইড আর কিছু ফ্রি ব্যবহার করা যায়।

পরিপূর্ণ ই-কমার্স ফিচারসম্পন্ন

WooCommerce এমনভাবে তাদের প্লাটফর্ম এর ডিজাইন করেছে যাতে এই প্লাগিন ব্যবহার করে একজন ই-কমার্স ব্যবসায়ী সহজেই তাদের ব্যবসার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন।

ব্যবসায়ীরা ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সেলস ইনসাইটসহ সব ধরণের সুবিধাসম্পন্ন ফিচার ব্যবহার করতে পারেন।

সিকিউরিটি সিস্টেম ভাল

WooCommerce প্লাগিন এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যার কারণে কোন ব্যবহারকারীর তথ্য থার্ড পার্টির কাছে ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতসারে যেতে পারে না। মার্চেন্ট এবং গ্রাহকের মধ্যে লেনদেনের ক্ষেত্রেও এটি সতর্কতা অবলম্বন করে।

কাস্টমাইজেবল ইন্টারফেস

ব্যবহারকারীরা খুব সহজেই তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী কাস্টমাইজ করতে পারবে।

ফ্রি এবং পেইড এক্সটেনশন

এই প্লাটফর্ম গ্রাহকদের জন্য ফ্রি এবং পেইড এক্সটেনশন অফার করে থাকে। ব্যবহারকারীরা এসব এক্সটেনশন ব্যবহার করে তাদের অনলাইন স্টোর কাস্টমাইজ করতে পারে এবং ইন্টিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করতে পারে।

WooCommerce ব্যবহার করে কি কি উপায়ে আয় করবেন?

১. ড্রপশিপিং

WooCommerce ব্যবহার করে আপনি ড্রপশিপিং বিজনেস  করে আপনি আয় করতে পারেন। ড্রপশিপিং বিজনেস হচ্ছে এমন একটি বিজনেস যেখানে  আপনাকে নিজের কোন পণ্য  থাকতে হবে না,  আপনাকে শুধু একটা অনলাইন স্টোর খুলে সেখানে সাপ্লায়ারের পণ্য প্রদর্শন করতে হবে।  ক্রেতা অর্ডার করলে সাপ্লায়ার সরাসরি পণ্য ক্রেতার নিকট পাঠিয়ে দিবেন।

ড্রপশিপিং ব্যবসা সহজভাবে করার জন্য বা ড্রপশিপিং ব্যবসায় সাপোর্ট দেওয়ার জন্য এদের বিভিন্ন ধরণের ফিচার আছে। বিশেষ করে ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট এবং সেলস ট্র‍্যাকিং এর এডভান্সড ফিচার ড্রপশিপারদের অনেক সাহায্য করে।

আরও পড়ুন : ড্রপশিপিং কি? ড্রপশিপিং ব্যবসার পূর্ণ গাইডলাইন। 

২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি মার্কেটিং মডেল যেখানে আপনি অন্য প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার লিংক শেয়ার করে কমিশন আয় করতে পারেন।

WooCommerce সাইটে অ্যাফিলিয়েট পণ্য বিক্রি করে সহজেই আয় করতে পারবেন। এই প্লাগিনের ফিচার ব্যবহার করে আপনি আপনার সাইটে অ্যাফিলিয়েট পণ্য প্রদর্শন করতে পারেন। গ্রাহকরা সেই পণ্য বা সেবা ক্রয় করলে আপনিও কিছু কমিশন পাবেন।

৩. সাবস্ক্রিপশন এবং মেম্বারশিপ বিক্রি

আপনি WooCommerce ব্যবহার করে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক পণ্য বা সার্ভিস বিক্রি করতে পারেন। ডিজিটাল প্রোডাক্ট, কোর্স, বা মেম্বারশিপ সাইটের জন্য WooCommerce বিশেষভাবে উপযোগী।

WooCommerce Subscriptions প্লাগইন ব্যবহার করে মাসিক বা বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন চালু করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজে গ্রাহকদের সাবস্ক্রিপশন ম্যানেজ করতে পারবেন।

এই ফিচার ব্যবহার করে আপনি মাল্টিপল বিলিং শিডিউল করতে পারবেন । ২৫ এর অধিক পেমেন্ট গেটওয়ে যুক্ত করতে পারবেন ।  অটোমেটিক রিবিলিং ফিচার থাকার কারণে আপনি আয় থেকে বঞ্চিত হবেন না।

৪. ডিজিটাল পণ্য বিক্রি

বর্তমানে ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করে অনলাইন থেকে আয় করা একটি জনপ্রিয় আয়ের মাধ্যমে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল পণ্য আছে যেমন ই-বুক, সফটওয়্যার, মিউজিক, ভিডিও, বা টেমপ্লেট বিক্রি ইত্যাদি । আপনি WooCommerce প্লাগিন ব্যবহার করে অনলাইন স্টোর খুলে ডিজিটাল পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারেন।

WooCommerce Digital Downloads প্লাগইন ব্যবহার করে সহজেই ডিজিটাল পণ্য বিক্রির প্রক্রিয়া চালু করতে পারেন।

৫. প্রিন্ট অন ডিমান্ড ব্যবসা

WooCommerce প্ল্যাটফর্মে Print-on-Demand (POD) ব্যবসা পরিচালনা করা যায়, যেখানে আপনার ডিজাইন অনুযায়ী কাস্টম পণ্য তৈরি হয় এবং ক্রেতা অর্ডার দিলে সেগুলো প্রিন্ট করে সরাসরি তাদের কাছে পাঠানো হয়।

আপনি চাইলে Printful, Printify ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম WooCommerce-এর সাথে ইন্টিগ্রেট করে POD ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

৬. ব্লগ কন্টেন্ট মনিটাইজেশন

আপনার WooCommerce সাইটে ব্লগ সেকশন চালু করে কন্টেন্ট মনিটাইজ করতে পারেন। ব্লগে ট্রাফিক আনার মাধ্যমে অ্যাডভার্টাইজিং, স্পন্সরশিপ, এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা যায়।

আরও পড়ুনঃ ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করা যায় কি কি উপায়ে? 

কিভাবে WooCommerce প্লাগিন কিভাবে সেটআপ করবেন? 

WooCommerce সাইট তৈরি এবং সেট আপের ধাপগুলো হচ্ছে –

১. ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল এবং WooCommerce প্লাগিন অ্যাড করা

woocommerce plugin

প্রথমে আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে হবে। বর্তমানে হোস্টিং কোম্পানিগুলোতে ওয়ার্ডপ্রেস অটো ইন্সটলার থাকে। তাই আপনি সামান্য কয়েকটা ক্লিকের মাধ্যমেই ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে পারবেন ।  ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার পর বাম দিকের plugins অপশন থেকে add new plugins এ ক্লিক করলেই উপরের ছবির মত  WooCommerce প্লাগইন প্রদর্শিত হবে। এখন Install Now তে ক্লিক করে ইন্সটল করে এক্টিভেট করুন।

২. WooCommerce প্লাগিন সেট আপ করা

অনলাইন স্টোর সেটআপ

WooCommerce প্লাগিন ইন্সটল করার পরে আপনাকে একটা ওয়েলকাম মেজেস দিবে এবং set up store অপশন প্রদর্শন করবে ।  set up store বাটনে ক্লিক করার পর আপনাকে অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দিতে হবে।  সেখানে আপনাকে স্টোরের ঠিকানা, দেশ, সিটি, পোস্টাল কোড এবং এডমিন ইমেইল এড্রেস দিতে হবে।

এরপর আপনার স্টোর সম্পর্কিত ইন্ডাস্ট্রির যেমন : ফ্যাশন, স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য, ইলেক্ট্রনিক্স ইত্যাদির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হবে।

তৃতীয় ধাপে আপনি কোন ধরণের পণ্য লিস্ট করতে চান সে ব্যাপারে তথ্য দিতে হবে।

আপনি ফ্রিতে এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে পারবেন । তবে সেখানে ফিচার থাকবে সীমাবদ্ধ । তবে পেইড ভার্সনে আপনি বিভিন্ন ধরণের এডভান্সড ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন ।

বর্তমানে WooCommerce প্রাইসিং হচ্ছে :

সাবস্ক্রিপশন – ১৬. ৫৮ ডলার প্রতি মাসে 

মেম্বারশিপ – ১৬. ৫৮ ডলার প্রতি মাসে 

বুকিং – ২০. ৭৫ ডলার প্রতি মাসে 

কাস্টমাইজেবল প্রোডাক্ট – ৪. ০৮ ডলার প্রতি মাসে  

এরপর আপনার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জিজ্ঞেস করা হবে। আপনি কি পরিমান পণ্য প্রদর্শন করবেন এবং কোথায় বিক্রি সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

“Add recommended business features to my site” এই অপশনটা এনাবল করে দিন।  সর্বশেষ ধাপে আপনাকে ফ্রি থিম অফার করা হবে। আপনি থিম নির্বাচন করার পর আপনাকে হোম পেজে রিডাইরেক্ট করে নেওয়া হবে এবং আপনি আরো কাস্টমাইজ করার অপশন পাবেন ।

৩. অনলাইন স্টোরে পণ্য যুক্ত করা

woocommerce inventory management

আপনার অনলাইন স্টোর সেটআপ হলো। এখন আপনার কাজ হচ্ছে WooCommerce-এর Products সেকশনে গিয়ে নতুন পণ্য যুক্ত করুন। প্রতিটি পণ্যের নাম, বিবরণ, ছবি এবং মূল্য যুক্ত করতে হবে। আপনি ফিজিক্যাল বা ডিজিটাল পণ্য উভয়ই যুক্ত করতে পারবেন। এখানে কয়েকটি বিষয় আপনাকে জানতে হবে:

প্রোডাক্ট ক্যাটাগরি – এই অপশন দিয়ে আপনি একই ধরণের পণ্যকে ক্যাটাগরিতে ভাগ করতে পারবেন।

প্রোডাক্ট টাইপ – আপনি যে ধরণের পণ্য আপনার অনলাইন স্টোরে বিক্রি করতে চান।

এট্রিবিউটস (Attributes) – এর মাধ্যমে আপনি পণ্যের সাইজ, রং, কাঁচামাল বা পছন্দের ভিত্তিতে ফিল্টার করতে পারবেন । আপনি প্রত্যেকটি পণ্যের জন্য নির্দিষ্ট Attributes ব্যবহার করতে পারেন বা পুরো অনলাইন স্টোরের জন্য একটি নির্দিষ্ট Attributes ব্যবহার করতে পারেন ।

জেনারেল পেজ – এখানে আপনি পণ্যের দাম নিৰ্ধাৰণ করবেন । আপনি চাইলে মূল্য ছাড় দিতে পারবেন।

ইনভেন্টরি – এখানে আপনি stock-keeping unit (SKU) নিৰ্ধাৰণ করবেন।  আপনার পণ্য ষ্টকে আছে কি না তা সেক্স দিতে পারবেন । আপনি যদি একসাথে বিক্রি না করে ব্যক্তি পর্যায়ে পণ্য বিক্রি করতে চান তাহলে Sold individually সক্রিয় করুন ।

শিপিং – এখানে আপনি পণ্যের ওজন, সাইজ এবং ক্যাটাগরি সম্পর্কিত তথ্য লিখে ডেলিভারি খরচ বুঝতে সাহায্য করবেন ।

লিঙ্কড প্রোডাক্ট –  এর মাধ্যমে আপনি সম্পর্কিত পণ্য প্রদর্শন করতে পারবেন যার কাৰণে বিক্রির পরিমান বাড়তে পারে ।

এডভান্সড – এই অপশনের মাধ্যমে আপনি গ্রাহকের ক্রয় ইতিহাস এর রেকর্ড রাখতে পারবেন এবং রিভিউ সিস্টেম চালু বা বন্ধ করতে পারবেন । এই চাইলে পেজে একটি অর্ডার মেন্যু যুক্ত করতে পারেন এবং একটি লোকেশন সেট করতে পারবেন যেখানে আপনার অর্ডার জমা হবে।

৪. WooCommerce প্লাগিন এ পেমেন্ট গেটওয়ে যুক্ত করা

woocommerce-payment

WooCommerce প্লাগিন ব্যবহার করে আপনার ইকমার্স সাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের পেমেন্ট গেটওয়ে সেটআপ করে পারবেন, যেমন: ভিসা, মাস্টার কার্ড, পেপাল , গুগুল পে, স্ট্রাইপ, বিকাশ ইত্যাদি ।

৪. অনলাইন স্টোর পরিচালনা 

সবকিছু সেট করার পর আপনাকে অর্ডার মেনেজ করতে হবে।  গ্রাহকরা যাতে সঠিক সময়ে সঠিক পণ্যটি পে সেটি খুব ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। গ্রাহকরা যখন কেনাকাটা করে চেকআউট প্রসেস করবে তখন সেই অর্ডারটি ওয়ার্ডপ্রেসের বাম পাশে Orders অপশনে পাবেন ।  প্রত্যেকটি অর্ডারের ইউনিক আইডি থাকবে যেখানে গ্রাহকের মেইল , মোবাইল নাম্বার , ঠিকানা, পেমেন্ট ম্যাথড ইত্যাদি তথ্য থাকবে ।

WooCommerce থেকে আয় বাড়ানোর টিপস

ইউজারফ্রেন্ডলি ডিজাইন: WooCommerce ব্যবহার করে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য সাইটকে ব্যবহারবান্ধব এবং মোবাইল-ফ্রেন্ডলি করুন। যাতে ব্যবহারকারীরা খুব সহেজে আপনার সাইটে সব জায়গায় সহজে যেতে পারে ।  এতে করে ব্যবহারকারী সন্তুষ্টি বৃদ্ধি পাবে।

অফার এবং ডিসকাউন্ট: গ্রাহকদের জন্য নিয়মিত ডিসকাউন্ট এবং বিশেষ অফার দিন। কারণ ডিজকাউন্ট এবং বিশেষ অফার গ্রাহকদের আকর্ষণ করে থাকে এবং ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করে।

ক্রেতার রিভিউ এবং ফিডব্যাক: ভালো রিভিউ সংগ্রহ এবং ক্রেতাদের ফিডব্যাকের ভিত্তিতে পণ্যের মান উন্নয়ন করুন। ক্রেতাদের মন্তব্যকে অবহেলা করা যাবে না।

সোশ্যাল প্রুফ: গ্রাহকরা সন্তুষ্ট হয়ে যেসব ফিডব্যাক দেয় সেগুলোর প্রমাণ দেখানোর মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ান। রিভিউগুলো ওয়েবসাইটে এমনভাবে প্রদর্শন করুন যাতে সবাই দেখতে পারে এবং পণ্য সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়।

অ্যাডভান্সড ফিচার ব্যবহার: WooCommerce-এর বিভিন্ন অ্যাড-অন প্লাগইন ব্যবহার করে কাস্টমার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করুন, যেমন চ্যাটবট, লাইভ চ্যাট সাপোর্ট ইত্যাদি।

উপসংহার

WooCommerce হলো একটি শক্তিশালী এবং ব্যবহারবান্ধব প্ল্যাটফর্ম, যা দিয়ে আপনি খুব সহজে অনলাইনে একটি ব্যবসা দাঁড় করতে পারেন । তবে মনে রাখবেন ব্যবসায় সততা রক্ষা করতে হবে।  আপনি যদি সৎভাবে ব্যবসা করেন তাহলে আপনার গ্রাহকের অভাব হবে না। গ্রাহকরা একবার আপনাকে বিশ্বাস করে ফেললে আপনার কাছ থেকে কিনতেই থাকবে ।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments