গুগল এনালিটিক্স হলো একটি শক্তিশালী ওয়েব অ্যানালিটিক্স টুল। এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক এবং ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করা যায়। এটি ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা মূল্যায়ন এবং উন্নত করতে সহায়তা করে।
Google Analytics এর ফিচারগুলো:
- Real-time Data: আপনার ওয়েবসাইটে সরাসরি কী ঘটছে তা তাৎক্ষণিকভাবে দেখার সুযোগ পাওয়া যায়।
- Audience Insights: ব্যবহারকারীর ডেমোগ্রাফিক, লোকেশন, ডিভাইস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেখা যায়।
- Acquisition Tracking: ব্যবহারকারীরা কীভাবে ওয়েবসাইটে আসছেন (অর্গানিক, পেইড, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদি) সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।
- Behavior Flow: ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইটে কোন পেইজ থেকে কোন পেইজে যাচ্ছেন তা দেখা যায়।
- Conversions and Goals: কনভার্সন ট্র্যাকিং করা যায় যেমন কেনাকাটা, সাবস্ক্রিপশন, বা ফর্ম ফিলআপ।
SEO এবং মার্কেটিংয়ের জন্য সুবিধা:
- Keyword Tracking: কোন কীওয়ার্ড এর কারণে সবচেয়ে বেশি ট্রাফিক আসছে তা জানা যায় ।
- Bounce Rate Analysis: কোন পেইজে বাউন্স রেট বেশি তা বিশ্লেষণ করে উন্নতির সুযোগ বের করা যায়।
- Goal Setting: বিজনেস গোল সেট করে সেগুলো অর্জিত হচ্ছে কিনা তা ট্র্যাক করার সুবিধা।
গুগল এনালিটিক্স (Google Analytic) ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসা ও ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতা পরিমাপ এবং তা উন্নত করা সহজ হয়।
আরও পড়ুন : Robot.txt ফাইল কি? এর কাঠামো এবং ব্যবহারবিধি উদাহরণসহ।
গুগল এনালিটিক্স কিভাবে ব্যবহার করবো?
Google Analytics ব্যবহার শুরু করতে নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
Google Analytics ব্যবহারের ধাপসমূহ:
১. একাউন্ট তৈরি করা
Google Analytics ওয়েবসাইটে যান এবং একটি নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন বা লগ ইন করুন।
২. Property সেটআপ
আপনার ওয়েবসাইটের নাম, URL, সময় অঞ্চল, এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে একটি Property তৈরি করুন।
৩. Tracking Code সংযোজন
Property তৈরি করার পর গুগল আপনাকে একটি Tracking Code দেবে। এই কোডটি আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠায় <head> ট্যাগের মধ্যে যুক্ত করতে হবে।
৪. Google Tag Manager ব্যবহার
কোড ম্যানেজমেন্টের জন্য Google Tag Manager ব্যবহার করে Tracking সহজে কনফিগার করতে পারেন।
Google Tag Manager কিভাবে ব্যবহার করবো?
Google Tag Manager (GTM) ব্যবহার করার প্রক্রিয়া সহজ। এটি ব্যবহারের আগে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। GTM একটি ফ্রি টুল যা বিভিন্ন ট্র্যাকিং কোড বা ট্যাগ ব্যবস্থাপনা করতে সাহায্য করে, বিশেষ করে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনে। নিচে স্টেপ-বাই-স্টেপ আলোচনা করা হলো:
ধাপ ১: Google Tag Manager অ্যাকাউন্ট তৈরি
- Google Tag Manager এ যান।
- একটি Google অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করুন এবং নতুন GTM অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- অ্যাকাউন্টের নাম, কন্টেইনারের নাম (যেমন আপনার ওয়েবসাইটের নাম), এবং ব্যবহারকারীর দেশ সিলেক্ট করুন।
- “Web” নির্বাচন করুন যদি আপনি ওয়েবসাইটের জন্য সেটআপ করতে চান, তারপর “Create” এ ক্লিক করুন।
- টার্মস এবং কন্ডিশন মেনে নিন এবং আপনার কন্টেইনার তৈরি হয়ে যাবে।
ধাপ ২: GTM কোড সাইটে যুক্ত করা
- কন্টেইনার তৈরি হলে GTM একটি কোড প্রদান করবে।
- এই কোডটি আপনার ওয়েবসাইটের
<head>এবং<body>ট্যাগের মধ্যে যুক্ত করুন।- <head> ট্যাগের মধ্যে প্রথম স্ক্রিপ্ট যুক্ত করুন।
- <body> ট্যাগের পরেই দ্বিতীয় কোড যুক্ত করুন।
ধাপ ৩: ট্যাগ, ট্রিগার এবং ভ্যারিয়েবল সেটআপ
১. ট্যাগ (Tags): আপনি যে ট্র্যাকিং কোড বা ইভেন্ট ট্র্যাক করতে চান, সেটি এখানে যুক্ত করুন। যেমন, Google Analytics, Facebook Pixel ইত্যাদি।
-
- GTM এর ড্যাশবোর্ডে “Tags” এ যান এবং “New” ক্লিক করুন।
- ট্যাগ কনফিগারেশনে ক্লিক করে প্রয়োজনীয় ট্র্যাকিং কোড যোগ করুন।
২. ট্রিগার (Triggers): ট্রিগার নির্ধারণ করে কখন এবং কিভাবে ট্যাগগুলি চালু হবে।
-
- উদাহরণ: “Page View” ট্রিগার দিয়ে নিশ্চিত করুন যে আপনার ট্যাগ প্রতিটি পেজ ভিউতে কাজ করছে।
৩. ভ্যারিয়েবল (Variables): বিভিন্ন ডেটা বা উপাদান সংগ্রহ করার জন্য ভ্যারিয়েবল যুক্ত করতে পারেন।
ধাপ ৪: ট্যাগ টেস্ট এবং প্রিভিউ করা
১. আপনার সেটআপ সঠিক হয়েছে কিনা দেখতে GTM এর “Preview” মুড ব্যবহার করতে পারেন।
২. প্রিভিউ মুডে ওয়েবসাইট খুলুন এবং নিশ্চিত করুন ট্যাগগুলি সঠিকভাবে কাজ করছে।
ধাপ ৫: ট্যাগ প্রকাশ করা
১. সবকিছু সঠিকভাবে কনফিগার করার পরে, GTM ড্যাশবোর্ডে গিয়ে “Submit” বাটনে ক্লিক করে “Publish” করে দিন।
২. এরপরে, আপনার সকল ট্যাগ সরাসরি লাইভ হয়ে যাবে এবং ট্র্যাকিং শুরু করবে।
এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই Google Tag Manager ব্যবহার শুরু করতে পারেন। GTM দিয়ে নতুন ট্যাগ ম্যানেজ করা খুব সহজ এবং এটি আপনার ওয়েবসাইটের কর্মক্ষমতা বিশ্লেষণে সহায়তা করবে।
৫. ডেটা অ্যানালাইসিস
Google Analytics ড্যাশবোর্ড থেকে আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক, ব্যবহারকারীর আচরণ, রেফারেল সোর্স, কনভার্সন এবং আরও অনেক তথ্য বিশ্লেষণ করতে পারেন।
এখন গুগল এনালিটিক্স ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন মেট্রিক যেমন ব্যবহারকারীর সংখ্যা, বাউন্স রেট, সেশন ডিউরেশন, পেজ ভিউ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং সেগুলো বিশ্লেষণ করতে পারবেন।
