Home Digital Marketing ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটি এর গুরুত্ব, ধরণ এবং কার্যক্রম শুরু করার পদ্ধতি।

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটি এর গুরুত্ব, ধরণ এবং কার্যক্রম শুরু করার পদ্ধতি।

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কি?

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং হল একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল, যেখানে কোনো নির্দিষ্ট অডিয়েন্স বা শ্রোতার উপর প্রভাব ফেলা ব্যক্তিদের (ইনফ্লুয়েন্সার) মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করা হয়।

    ইনফ্লুয়েন্সাররা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের ফলোয়ারদের প্রভাবিত করতে সক্ষম, এবং সেই প্রভাব ব্যবহার করে ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্য বা সেবার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে পারে।

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?

    • ব্র‍্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি: ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে প্রচারণা চালালে সেই প্রচারণা গ্রাহকদের কাছে স্বাভাবিক এবং বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। গ্রাহকরা ইনফ্লুয়েন্সারদের পরামর্শ এবং মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করেন। এভাবে ব্র‍্যান্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।
    • নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো: ইনফ্লুয়েন্সারদের নিজস্ব একটি বড় অনুসারী দল থাকে, যা  ব্র্যান্ডকে সহজে বিপুল সংখ্যক নতুন গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে সহায়তা করে।
    • কার্যকরী ক্যাম্পেইন: ইনফ্লুয়েন্সাররা সাধারণত তাদের ফলোয়ারদের সাথে সরাসরি ও সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকেন, যা ব্র্যান্ডের প্রমোশন ক্যাম্পেইনকে আরও কার্যকরী করে তোলে।

    ইনফ্লুয়েন্সারদের ধরণ

    ফলোয়ার সংখ্যা ও প্রভাবের পরিমাণের ভিত্তিতে ইনফ্লুয়েন্সারদের বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়,

    মাইক্রোইনফ্লুয়েন্সার (Micro-influencers)

    • ফলোয়ার সংখ্যা: ১০,০০০ থেকে ১,০০,০০০।
    • সাধারণত একটি নির্দিষ্ট নিস বা বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কাজ করে থাকেন।
    • মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সারদের এনগেজমেন্ট রেট তুলনামূলকভাবে বেশি হয়, এবং তারা ফলোয়ারদের সঙ্গে নিয়মিত সরাসরি যোগাযোগ রাখেন।
    1. ম্যাক্রোইনফ্লুয়েন্সার (Macro-influencers)
    • ফলোয়ার সংখ্যা: ১,০০,০০০ থেকে ১০ লক্ষ।
    • সাধারণত সেলিব্রিটি বা বড় সামাজিক ব্যক্তিত্ব হন।
    • তারা বৃহত্তর পরিসরে অডিয়েন্সকে প্রভাবিত করতে পারেন।
    1. ন্যানোইনফ্লুয়েন্সার (Nano-influencers):

    • ফলোয়ার সংখ্যা: ১,০০০ থেকে ১০,০০০।
    • স্থানীয় বা ক্ষুদ্র নেটওয়ার্কে সক্রিয় থাকেন।
    • সরাসরি এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন, যা ছোট ব্যবসার জন্য উপযোগী।
    1. মেগাইনফ্লুয়েন্সার (Mega-influencers)

    • ফলোয়ার সংখ্যা: ১০ লক্ষের উপরে।
    • এরা সাধারণত সেলিব্রিটি বা আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বহয়ে থাকে।
    • তাদের প্রভাব ব্যাপক হলেও, ব্যক্তিগত সম্পর্কের অভাব থাকতে পারে।

    কিভাবে ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং করা হয়? 

    . লক্ষ্য নির্ধারণ করা

    প্রথমে ঠিক করতে হবে আপনি ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কী অর্জন করতে চান। লক্ষ্য হতে পারে:

    • ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
    • ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিক আনা।
    • বিক্রয় বৃদ্ধি করা।
    • কোনো নির্দিষ্ট ক্যাম্পেইন প্রচার করা।

    . সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন করা

    ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে:

    • নিচের সঙ্গে সামঞ্জস্য: ইনফ্লুয়েন্সারের অডিয়েন্স ও আপনার ব্যবসার লক্ষ্য অডিয়েন্স একই ধরনের হওয়া প্রয়োজন।
    • ইনফ্লুয়েন্সারের এনগেজমেন্ট রেট: ফলোয়ার সংখ্যা ছাড়াও, ইনফ্লুয়েন্সারের পোস্টে কী পরিমাণ এনগেজমেন্ট (লাইক, শেয়ার, কমেন্ট) হচ্ছে তা দেখতে হবে।
    • ইনফ্লুয়েন্সারের প্রভাব: ইনফ্লুয়েন্সারের ফলোয়ারদের প্রতি কতটা প্রভাব রয়েছে এবং তারা কতটা বিশ্বাসযোগ্য, তা যাচাই করতে হবে।

    আরও পড়ুন : ডিজিটাল মার্কেটিং কি?  ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপাদানগুলো কি কি?

    . ইনফ্লুয়েন্সারের সাথে অংশীদারিত্ব করা

    ইনফ্লুয়েন্সারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তাদের সাথে কাজের শর্তাবলী ঠিক করতে হবে। এটি হতে পারে:

    • স্পন্সর পোস্ট: ইনফ্লুয়েন্সার আপনার পণ্য বা সেবা নিয়ে পোস্ট তৈরি করে তার ফলোয়ারদের সাথে শেয়ার করবেন।
    • প্রোডাক্ট রিভিউ: ইনফ্লুয়েন্সার আপনার পণ্য বা সেবা ব্যবহার করে তার সম্পর্কে রিভিউ বা মতামত প্রকাশ করবেন।
    • গিভঅ্যাওয়ে: ইনফ্লুয়েন্সার আপনার ব্র্যান্ডের মাধ্যমে তার ফলোয়ারদের জন্য কোনো পুরস্কার বা অফার দেবে।

    . পরিকল্পিত কনটেন্ট তৈরি করা

    ইনফ্লুয়েন্সারের সাথে মিলে পরিকল্পনা করে কনটেন্ট তৈরি করা হয়। কনটেন্ট হতে পারে:

    • ফটো পোস্ট
    • ভিডিও কনটেন্ট
    • ব্লগ পোস্ট
    • ইনস্টাগ্রাম স্টোরি বা রিল

    . ক্যাম্পেইন পরিচালনা ট্র্যাক করা

    ক্যাম্পেইনের সময়কালে ইনফ্লুয়েন্সারের কার্যকলাপ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কতজন লোক পোস্ট দেখেছে, কতজন লাইক করেছে বা শেয়ার করেছে, এবং কতজন ক্রয় সম্পন্ন করেছে, তা ট্র্যাক করতে হবে।

    . ফলাফল বিশ্লেষণ করা

    ক্যাম্পেইন শেষে এর ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে এটি কতটা সফল হয়েছে। এর জন্য বিভিন্ন অ্যানালিটিক্স টুল ব্যবহার করে মেট্রিকস পর্যালোচনা করা যেতে পারে, যেমন:

    • রিচ (Reach)
    • এনগেজমেন্ট রেট
    • কনভার্শন (Conversion)
    • ROI (Return on Investment)

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংএর চ্যালেঞ্জ

    • সঠিক ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন: ভুল ইনফ্লুয়েন্সার নির্বাচন করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া কঠিন হতে পারে।
    • ফে ফলোয়ার: কিছু ইনফ্লুয়েন্সারের ফলোয়ার সংখ্যা কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয়, যা সঠিক এনগেজমেন্ট দেয় না।
    • উচ্চ খরচ: বড় ইনফ্লুয়েন্সারদের মাধ্যমে কাজ করার জন্য প্রচুর খরচ হতে পারে, বিশেষ করে মেগা-ইনফ্লুয়েন্সারদের জন্য।

    ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং একটি অত্যন্ত শক্তিশালী কৌশল যা সঠিক পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্র্যান্ডের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

    NO COMMENTS

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Exit mobile version