Home Business Guidelines ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা কি? শুরু করার ধাপ, লাভ-খরচসহ বিস্তারিত

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা কি? শুরু করার ধাপ, লাভ-খরচসহ বিস্তারিত

বর্তমান সময়ে ছোট-বড় অনুষ্ঠান মানেই সেখানে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের বিষয়টি চলে আসে। কারণ পরিকল্পিত এবং সুন্দরভাবে বিয়ে, জন্মদিন, কর্পোরেট ইভেন্ট, পণ্য উদ্বোধন, কনসার্ট ইত্যাদি অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হলে পেশাদার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বাংলাদেশেও এই খাত দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে কারণ মানুষ এখন সময় ও পরিশ্রম বাঁচাতে অনুষ্ঠান আয়োজনে অভিজ্ঞদের হাতে দায়িত্ব দিতে পছন্দ করে।

আজকের এই ব্লগে আলোচনা করবইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কি, এখানে কোন ধরণের কাজ করতে হয়, কিভাবে শুরু করবেন, কত আয় হয় ইত্যাদি।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কি?

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হলো একটি অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা, আয়োজন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া। এর মধ্যে থাকে:

  • অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণ
  • বাজেট তৈরি
  • ডেকোরেশন ও থিম ডিজাইন
  • অনুষ্ঠানে আগত অতিথি ব্যবস্থাপনা
  • খাবার, সাউন্ড, লাইটিং ও বিনোদনের ব্যবস্থা

সংক্ষেপে বলা যায়, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট মানে হলো ক্লায়েন্টের চিন্তাকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। অর্থাৎ ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ইভেন্ট সফলভাবে আয়োজন করা।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের কাজ কি?

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে হয়, যেমনঃ

  • ক্লায়েন্টের চাহিদা ও বাজেট বুঝে ইভেন্টের থিম নির্ধারণ করা,
  • ইভেন্টের ধরন অনুযায়ী (বিয়ে, কর্পোরেট, কনসার্ট, জন্মদিন ইত্যাদি) পরিকল্পনা তৈরি
  • ইভেন্টের সময়সূচি (Timeline) তৈরি করা
  • সম্ভাব্য ব্যয় ও আয়ের হিসাব (Budget Sheet) তৈরি
  • ভেন্যু, ডেকোরেশন, কেটারিং, সাউন্ড ইত্যাদি সেবা অনুযায়ী খরচ নির্ধারণ,
  • ক্লায়েন্টের সাথে চুক্তি সম্পন্ন করা, 
  • উপযুক্ত ভেন্যু নির্বাচন ও বুকিং,
  • ডেকোরেটর, ক্যাটারিং, লাইট-সাউন্ড, ফটোগ্রাফার, ট্রান্সপোর্ট ইত্যাদির সাথে সমন্বয়,
  • ভেন্যুর অনুমতি, সময় ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা,
  • ইভেন্টের থিম ও রঙ অনুযায়ী সাজসজ্জা ডিজাইন করা,
  • স্টেজ, ব্যাকড্রপ, লাইটিং, ফ্লাওয়ার ও সিটিং অ্যারেঞ্জমেন্ট ঠিক করা,

আরও পড়ুন: ফার্মেসি ব্যবসা শুরু করবেন যেভাবে।খরচ লাভসহ বিস্তারিত 

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?

how to start event management business

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা শুরু করা মানে শুধু অনুষ্ঠানের আয়োজন নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবসায়িক প্রকল্প যেখানে পরিকল্পনা, সৃজনশীলতা ও যোগাযোগ দক্ষতা একসাথে কাজ করে।

নিচে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হলো:

ধাপ ১: বাজার গবেষণা ও নিস (Niche) নির্ধারণ

এই ব্যবসায় আসার আগেই আপনাকে বাজারের আকার ও বর্তমান মার্কেটে কারা লিড দিচ্ছে সে বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। তারপর আপনি কোন ধরণের ইভেন্ট (নিস) নিয়ে কাজ করতে চান সেটি ঠিক করতে হবে।

বাংলাদেশে জনপ্রিয় ইভেন্ট নিসগুলো হলো:

  • বিয়ে ও এনগেজমেন্ট পার্টি
  • কর্পোরেট ইভেন্ট (সেমিনার, কনফারেন্স, প্রোডাক্ট লঞ্চ)
  • কনসার্ট ও কালচারাল প্রোগ্রাম
  • জন্মদিন ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান
  • স্কুল/কলেজ ফাংশন
  • ধর্মীয় অনুষ্ঠান (মিলাদ, ওয়াজ, ইফতার মাহফিল ইত্যাদি)

উদাহরণঃ যদি আপনি ঢাকায় থাকেন, তাহলে কর্পোরেট ইভেন্ট, বিয়ের অনুষ্ঠান, কনসার্ট ইত্যাদি বেশি চাহিদাসম্পন্ন। তাই এই ধরণের নিস সিলেক্ট করতে পারেন।

আর যদি আপনি ছোট শহর এই ব্যবসা করতে চান তাহলে পারিবারিক অনুষ্ঠান বা স্কুল-কলেজ ইভেন্টে কাজ শুরু করতে পারেন।

ধাপ ২: ব্যবসার নাম, ব্র্যান্ড ও আইডেন্টিটি তৈরি

মনে রাখবেন একটি ভালো নাম ক্লায়েন্টের মনে সহজে জায়গা করে নেয়।

নাম বাছাইয়ের ক্ষেত্রে টিপসঃ

* ছোট, সহজ ও অর্থবহ নাম দিন (যেমন: *Dream Events*, *PlanPro*, *Eventify*)

* নামের সাথে “Events”, “Planner”, “Creation” বা “Management” শব্দ যোগ করতে পারেন

* লোগো ও কালার থিম তৈরি করুন;

ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি টেকসই ব্যবসার জন্য বড় সম্পদ। আপনি যদি আপনার ব্যবসার একটা ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার নতুন নতুন কাজ পেতে বেগ পেতে হবে না।

ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি তৈরি করার জন্য কাজে প্রফেশনালিজম বজায় রাখতে হবে। বিজনেস লোগো এবং কার্ড ডিজাইন করতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া, ওয়েবসাইট ও বিজনেস কার্ডে একই ডিজাইন ব্যবহার করুন। নিজের কাজগুলো ওয়েবসাইটে সুন্দর করে সাজিয়ে প্রদর্শন করুন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেগুলো প্রচার করুন।

ধাপ ৩: ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন ও আইনগত প্রক্রিয়া

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা শুরু করতে হলে একটি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে। শুধু ব্যবসা পরিচালনার জন্যেই নয় কর্পোরেট ক্লায়েন্টর পেতে হলেও আপনাকে রেজিস্টার্ড হতে হবে কারণ কর্পোরেট ক্লায়েন্টরা সাধারণত রেজিস্টার্ড কোম্পানির সেবা নিয়ে থাকে।

যা করতে হবেঃ

  • স্থানীয় সিটি কর্পোরেশন/উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে;
  • TIN নম্বর (ইনকাম ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন) সংগ্রহ করতে হবে;
  • বড় পরিসরে ব্যবসা করতে চাইলে RJSC থেকে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে।
  • যদি ছোট পরিসরে শুরু করেন, প্রাথমিকভাবে শুধু ট্রেড লাইসেন্সই যথেষ্ট। ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ছোট একটা অফিস নিয়ে শুরু করে দিন।

জনবল নিয়োগ করার ক্ষেত্রে যেসব যোগ্যতা দেখা উচিতঃ

১. ম্যানেজমেন্ট, মার্কেটিং, কমিউনিকেশনস, বিজনেস বা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট-সংক্রান্ত স্নাতক ডিগ্রি,

২. উচ্চ স্তরের পজিশনে বা ম্যানেজার হিসেবে প্রফেশনাল সার্টিফিকেশন যেমন CMP (Certified Meeting Professional) বা CSEP (Certified Special Events Professional) থাকা প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে,

৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা,

৪. ক্লায়েন্ট, ভেন্ডর, টিম মেম্বারদের সাথে যোগাযোগে দক্ষতা;

৫. রুচিশলতা এবং সৃজনশীল চিন্তাভাবনার অধিকারী কিনা যাচাই করা,

প্রথম দিকে ২-৩ জন মেম্বার নিয়েই শুরু করা যায়, তবে কিছু ট্রেনিং দিতে হবে যেমনঃ

* কাজের টাইম ম্যানেজমেন্ট

* অতিথি ব্যবস্থাপনা

* ক্লায়েন্টের সাথে আচরণ

* ইমার্জেন্সি সমস্যা সমাধান ইত্যাদি,

ভালো টিমই সফল ইভেন্টের মূল ভিত্তি।

আরও পড়ুন: ২০২৫ সালের ৭ টি সম্ভাবনাময় বড় ব্যবসার আইডিয়া 

ধাপ ৪: পার্টনার ও সাপ্লায়ার নেটওয়ার্ক তৈরি

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট একা করা সম্ভব নয়। এই ধরণের ব্যবসায় অনেক সেবা একসাথে কাজ করে। তাই সঠিক সাপ্লায়ারদের সাথে সম্পর্ক তৈরি করুন।

যাদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবেঃ

* ডেকোরেশন ও ফুল সরবরাহকারী,

* লাইট ও সাউন্ড টেকনিশিয়ান,

* কেটারিং সার্ভিস,

* ফটোগ্রাফার ও ভিডিওগ্রাফার,

* ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস,

* ভেন্যু/হল মালিক,

টিপসঃ প্রথম দিকে একাধিক ছোট সাপ্লায়ারের সাথে চুক্তি করে রাখুন, যাতে কাজের সময় বিকল্প সাপ্লায়ের ব্যবস্থা থাকে।

ধাপ ৫: স্যাম্পল প্রজেক্ট ও পোর্টফোলিও তৈরি

প্রথম দিকে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা কম থাকতে পারে তাই নিজের উদ্যোগে কিছু স্যাম্পল ইভেন্ট আয়োজন করুন। যেমন পরিবার বা বন্ধুর জন্মদিন, ছোট অফিস পার্টি ইত্যাদি।

  • প্রফেশনালভাবে ছবি তুলুন ও ভিডিও ধারণ করুন,
  • এগুলো আপনার Facebook Page ও ওয়েবসাইটে আপলোড করুন,
  • পরিচিত মানুষের কাছে নিজের কাজের কথা প্রচার করুন,

মনে রাখবেন ভালো পোর্টফোলিও থাকলে সহজে নতুন ক্লায়েন্ট পাওয়া যায়।

ধাপ ৬: ডিজিটাল উপস্থিতি তৈরি করুন

বর্তমানে ৮০% ক্লায়েন্ট অনলাইনে সার্চ করে ইভেন্ট কোম্পানি খোঁজে। তাই অনলাইন আপনার উপস্থিতি অপরিহার্য।

অনলাইন উপস্থিতির জন্য যা করতে পারেনঃ

  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠানের নামে একাউন্ট খুলুন এবং সেখানে নিয়মিত কন্টেন্ট দেওয়ার পাশাপাশি বিজ্ঞাপন দিন।
  • Google Business Profile-এ রেজিস্টার করুন (এটি ফ্রি ও অত্যন্ত কার্যকর)
  • একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন যেখানে থাকবেঃ

* আপনার সার্ভিস লিস্ট

* পূর্ববর্তী ইভেন্টের ছবি

* কাস্টমার রিভিউ

* যোগাযোগের তথ্য

ওয়েবসাইট তৈরি করে বসে থাকলে হবে না। আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবপেজ র‍্যাংক করার জন্য এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করতে হবে। এর পাশাপাশি ইমেইল মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিংসহ বিভিন্ন ডিজিটাল মার্কেটিং টেকনিক ব্যবহার করুন। আমাদের মার্কেটিং গাইডলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত পাবেন।

ধাপ ৭: প্রাইসিং ও প্যাকেজ নির্ধারণ

প্রথম দিকে কম লাভে ছোট প্যাকেজ অফার করে মার্কেটে জায়গা তৈরি করুন।

উদাহরণস্বরূপঃ

* Basic Package: শুধুমাত্র সাজসজ্জা ও সাউন্ড

* Standard Package: সাজসজ্জা + খাবার + ফটোগ্রাফি

* Premium Package: সম্পূর্ণ ইভেন্ট আয়োজন

এভাবে প্যাকেজ বানালে ক্লায়েন্ট তার বাজেট অনুযায়ী বেছে নিতে পারবে।

প্রতিটি ইভেন্ট শেষে ক্লায়েন্টকে ছোট ডিসকাউন্ট বা গিফট দিন এটি ক্লায়েন্টকে খুশি রাখা এবং ক্লায়েন্ট ধরে রাখার ক্ষেত্রে ভাল ভূমিকা পালন করে।

ধাপ ৮: ক্লায়েন্ট ফিডব্যাক ও উন্নয়ন

প্রতিটি ইভেন্টের পর ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক সংগ্রহ করুন।

কি ভালো হয়েছে, কোথায় উন্নতি দরকার তা জিজ্ঞেস করুন এবং তাদের ফিডব্যাক বিশ্লেষণ করুন। এই ফিডব্যাকই আপনার পরবর্তী ইভেন্টকে আরও সফল করবে।

এই ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি একেবারে শূন্য থেকে একটি সফল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গড়ে তুলতে পারবেন।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার প্রাথমিক খরচ ও বাজেট পরিকল্পনা

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় খরচ নির্ভর করে অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যপ্তি ও সেবার ধরণের উপর।

খরচের খাত আনুমানিক খরচ (ছোট স্কেল)

অফিস ও ব্র্যান্ড সেটআপ ৳৫০,০০০ ৳১,০০,০০০

সরঞ্জাম ও ডেকোরেশন ৳৭৫,০০০ ৳২,০০,০০০

টিম ও স্টাফ খরচ ৳৫০,০০০+

মার্কেটিং ও প্রচার ৳৩০,০০০+

মোট আনুমানিক শুরু বাজেট প্রায় ৳২৪ লাখ টাকার মধ্যে

তবে আপনি চাইলে খুব ছোট পরিসরে, পার্টনারশিপ বা ফ্রিল্যান্স ভিত্তিতে শুরু করেও ধীরে ধীরে বড় হতে পারেন।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসা থেকে আয় ও লাভ

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় আয় নির্ভর করে ইভেন্টের ধরণ ও ক্লায়েন্ট বাজেটের উপর।

ছোট পার্টি বা জন্মদিন: ৳২০,০০০ ৳৫০,০০০

বিয়ের অনুষ্ঠান: ৳১ ৫ লাখ+

কর্পোরেট ইভেন্ট বা কনসার্ট: ৳২ ১০ লাখ পর্যন্ত

একজন অভিজ্ঞ ইভেন্ট ম্যানেজার মাসে ৳১৩ লাখ বা তারও বেশি আয় করতে পারেন, যদি নিয়মিত ইভেন্ট পান এবং ব্র্যান্ড রেপুটেশন ভালো হয়।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স

আমাদের দেশে বেশ কিছু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স চালু আছে। এসব ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোর্স করে আপনি চাইলেই এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এসব কোর্সের মধ্যে রয়েছেঃ

১. GoEdu “Event Management for Corporate Executives” নামে অনলাইন কোর্স। বাংলা ভাষায়, ২১টি লেকচারসহ, প্রায় এক ঘন্টার মধ্যে করা যায়।

২. Apex Learning Centre “Event & Wedding Planning” নামক ২-বছরের ডিপ্লোমা কোর্স; অফিসিয়াল যেমন কর্পোরেট ইভেন্ট, উইডিং এর পরিকল্পনা ইত্যাদি শেখায়।

৩. Bdjobs eLearning “Successful Event Management” নামে একটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম যা ঢাকা-ভিত্তিক। পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন পর্যন্ত ১৩টি লেসন রয়েছে।

৪. The Knowledge Academy ঢাকা সহ আন্তর্জাতিকভাবে “Event Management Course” পরিচালনা করে। অনলাইনে এবং সরাসরি দুভাবেই এই কোর্স করা যায়।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার টিপস

১. ক্লায়েন্টের চাহিদা (বাজেট, পছন্দ, থিম ও উদ্দেশ্য) ভালোভাবে বোঝুন। তারপর তাদের চাহিদা অনুসারে ইভেন্টের আয়োজন করুন। সবসময় ২-৩টি বিকল্প প্ল্যান (Plan A, Plan B) প্রস্তুত রাখুন।

২. প্রথমেই বড় পরিসরে শুরু না করে ছোট পার্টি, জন্মদিন, বিয়ের অনুষ্ঠান বা কর্পোরেট সেমিনারথেকে শুরু করুন, অভিজ্ঞতা অর্জন করুন। নেটওয়ার্ক তৈরি করুন। সক্ষমতা অর্জনের পর ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়ান।

৩. দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য লোক নিয়োগ দিন। ভাল কাজের প্রশংসা করুন এবং আরও ভালভাবে কাজ করতে উতসাই দিন। যোগ্য লোকদের কদর করতে ভুলবেন না কারণ এরাই আপনার প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

৪. ক্লায়েন্টের ফিডব্যাক নিয়ে নিজেদের কাজে কিভাবে উন্নতি করা যায় সেটা বিশ্লেষণ করুন।

৫. অনলাইন এবং অফলাইন মার্কেটিং করুন। বিশেষ করে অনলাইন মার্কেটিং এ বেশি জোর দিন।

৬. প্রতিটি কাজের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি তৈরি করুন ।বাজেট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করুন।

৭. নিজের কোম্পানির ব্র্যান্ডিং এর জন্য একটি স্মার্ট নাম রাখুন ও প্রফেশনাল ওয়েবসাইট ও লোগো ডিজাইন করুন।

উপসংহার

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ একদিকে যেমন সৃজনশীল, তেমনি দায়িত্বপূর্ণ। এই ব্যবসায় ছোট একটি ভুলও বড় প্রভাব ফেলতে পারে, আবার একটি নিখুঁত আয়োজন ক্লায়েন্টের মনে অমলিন ছাপ ফেলে। তাই সফলভাবে ইভেন্ট আয়োজন করার জন্য ক্লায়েন্টের চাহিদামতো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version