বর্তমানে টিকটক শুধু বিনোদনের একটি মাধ্যম নয়; এটি অনেকের জন্য আয়ের একটি বড় উৎস হয়ে উঠেছে।
ছোট ছোট ভিডিও তৈরি করে এবং নির্দিষ্ট দর্শকশ্রেণীকে আকৃষ্ট করে ব্যবহারকারীরা এই প্ল্যাটফর্ম থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
বিশেষ করে, যারা নিজেদের ব্র্যান্ড তৈরি করতে চান বা কোনো বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন করতে চান, তাদের জন্য টিকটক হতে পারে একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্ম।
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব, কীভাবে টিকটক থেকে আয় করা যায়, টিকটকের বিভিন্ন ফিচার এবং সেগুলো কিভাবে ব্যবহার করে আপনি আপনার আয়ের পরিমাণ বাড়াবেন।
টিকটক থেকে আয় করার উপায়
টিকটক থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে, এসব উপায় ব্যবহার করে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা বিভিন্নভাবে টিকটক থেকে আয় করতে পারবেন।
১. টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড (TikTok Creator Fund) এর মাধ্যমে টিকটক থেকে আয়
২. লাইভ গিফটস ও ডায়মন্ড (Live Gifts and Diamonds)
৩. ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ (Brand Sponsorship)
৪. টিকটকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
৫. নিজস্ব পণ্য বিক্রি করে টিকটক থেকে আয়
৬. টিকটক মার্কেটপ্লেস (TikTok Creator Marketplace)
৭ . টিপিং ফিচার (TikTok Tips) এর মাধ্যমে টিকটক থেকে আয়
নিচে টিকটক থেকে আয় করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো:
১. টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড (TikTok Creator Fund)
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড টিকটক থেকে আয় করার এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা তাদের তৈরি করা কন্টেন্ট এর ভিউ এবং এনগেজমেন্ট এর ভিত্তিতে আয় করতে পারেন। মূলত ইউনিক এবং ভাল কন্টেন্ট তৈরি করতে পারে এমন কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের উৎসাহ দিতে টিকটক এই প্লাটফর্ম এর সূচনা করেছে।
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড কিভাবে কাজ করে?
কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কন্টেন্ট যখন খুব ভাল পারফর্ম করে তখনই টিকটক সেখানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা শুরু করে এবং ক্রিয়েটররা আয় করা শুরু করে। অর্থাৎ আপনার কন্টেন্ট যখন মানুষ পছন্দ করবে এবং প্রচুর এনগেজমেন্ট পাবেন তখনই আপনার আয় শুরু হয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়াটা হতে হবে অর্গানিক, পেইড হলে এর আওতায় পড়বে না। কন্টেন্ট হতে হবে ইউনিক এবং এনগেজিং।
টিকটিক ক্রিয়েটর ফান্ডে যুক্ত হতে যেসব যোগ্যতা লাগবে
১. যেসব দেশে এই ফিচার আছে সেসব দেশের অধিবাসী হতে হবে।
২. বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে।
৩. কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার থাকতে হবে,
৪. বিগত ৩০ দিনে কমপক্ষে ১ লাখ বৈধ ভিডিও ভিউ থাকতে হবে,
৫. টিকটক টার্মস এবং কন্ডিশন মেনে চলতে হবে।
এর পাশাপাশি ব্যবহারকারীকে ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যান সাবমিট করতে হবে।
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ডে যুক্ত হতে কিভাবে আবেদন করবেন?
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ড ব্যবহারের যোগ্যতা অর্জন করার পর আপনি এই প্লাটফর্মে যুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে অবশ্যই একটি প্রো অ্যাকাউন্ট থাকত হবে।
আপনার অ্যাকাউন্টের সেটিংস অপশন এর ভেতর “Creator Tools” এর মধ্যে “TikTok Creator Fund” অপশন পাবেন। বাটনে ক্লিক করে আপনার বয়স কনফার্ম করুন এবং টার্মস মেনে চলার বিষয় কনফার্ম করে আবেদন সম্পন্ন করুন।
টিকটক আপনার আবেদন যাচাই করে দেখবে সেটি গ্রহণ করা যায় কিনা। যদি তারা আপনার আবেদন রিজেক্ট হয় তখন আপনি ৩০ দিন পর আবার আবেদন করতে পারবেন। তবে তার আগে তাদের রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করুন।
কিভাবে প্রো অ্যাকাউন্টে সুইচ করবেন?
প্রো অ্যাকাউন্টে সুইচ করা বেশ সহজ। সেটিংস থেকে “Manage Account” অপশনে গেলেই “Switch to Pro Account.” পাবেন। সেখানে ক্লিক করলেই আপনি প্রো অ্যাকাউন্টে সুইচ করতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনি ভিডিও পারফরম্যান্স এবং দর্শকদের প্রবৃদ্ধি ও এনগেজমেন্ট এর ব্যাপারে জানতে পারবেন।
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ডের সুবিধা
এই ফিচারের বড় সুবিধা হচ্ছে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন বা স্পন্সরশিপ ছাড়াই আপনি যত আপনি আনলিমিটেড আয় করতে পারবেন।
টিকটক ক্রিয়েটর ফান্ডের অসুবিধা বা সীমাবদ্ধতা
এই ফিচারের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে এটি নির্দিষ্ট কিছু দেশে অনুমোদিত। আয়ের পরিমাণ এডসেন্স এর তুলনায় কিছু কম এবং ইনকাম ক্যালকুলেশন পরিষ্কার না।
আরও পড়ুন : ইউটিউব থেকে কি কি উপায়ে আয় করা যায়?
২. লাইভ গিফটস ও ডায়মন্ড (Live Gifts and Diamonds)
টিকটক লাইভ গিফটস এবং ডায়মন্ডস হচ্ছে এমন একটি ফিচার যেখানে ভক্তরা তাদের পছন্দের কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের লাইভ চলাকালে গিফট পাঠাতে পারে । ভক্তদের কাছ থেকে গিফট পেতে হলে LIVE Gifting একটিভ করতে হবে । এছাড়া আপনি ডায়মন্ডও সংগ্রহ করতে পারবেন যা ভাঙিয়ে আপনি অর্থে রূপান্তর করতে পারবেন।
কিভাবে লাইভ গিফট সেট করবেন ?
লাইভ গিফট সেট করার শর্ত পূরণ করতে পারলে আপনি এটি সেট করার সুযোগ পাবেন। লাইভ গিফট সেট করার উপায়:
১। টিকটিক স্ক্রিনের নিচের দিকে ডান পাশে Profile বাটনে ক্লিক করুন।
২। Creator Tools অপশন থেকে Live Gifts ক্লিক করে স্ক্রিনের নির্দেশনা অনুসরণ করুন
আপনার অন্যান্য ভিডিওতেও গিফট পেতে চাইলে আপনার অনুমোদন লাগবে। অনুমোদন পেতে চাইলে উপরের প্রক্রিয়া অনুসরণ করুন কিন্তু Live Gifts অপশনের বদলে Video Gifts অপশন নির্বাচন করুন।
লাইভ চলাকালীন ভক্তরা কিভাবে আপনাকে গিফট পাঠাবে?
আপনার লাইভ চলাকালে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যাদের বয়স তারা চাইলে আপনাকে যত খুশি গিফট পাঠাতে পারবে । মূলত গিফট দেওয়ার মাধ্যমে তারা আপনার কাজের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে।
গিফট দেওয়ার প্রক্রিয়া হচ্ছে:
১। লাইভ চলার সময় গিফট আইকনে চেপে ধরুন,
২। আপনি যে ধরণের গিফট দিতে চান সেটি নির্বাচন করুন ,
৩। যদি গিফট রিচার্জ করার প্রয়োজন হয় তাহলে নির্দেশনা অনুসরণ করে রিচার্জ করুন,
৪। Send বাটনে ক্লিক করে গিফট পাঠান।
লাইভ ডিফটি দেওয়ার পর ভক্তরা কমেন্ট সেকশনে সেটি দেখতে পাবে ।
লাইভ গিফট এর মাধ্যমে ডায়মন্ড সংগ্রহ করা
লাইভ গিফট ফিচার চালুর পর আপনি সেগুলো ভিডিওর মধ্যে দেখতে পাবেন । ভক্তরা যখন আপনাকে গিফট দিবে তখন আপনি গিফট পপ আপ দেখতে পাবেন। লাইভের শেষে আপনি মোট গিফট কত তার হিসেবে দেখতে পাবেন।
টিকটকে গিফট প্রাপ্তির পর সেই গিফটগুলো ডায়মন্ডে পরিণত হয়। ডায়মন্ড হলো গিফটের ভার্চুয়াল মান, যা পরে অর্থে রূপান্তর করা যায়। সাধারণত, ২টি কয়েনের সমমান একটি ডায়মন্ড হয়। ১০০ ডলার সমপরিমাণ অর্থ আয় করতে পারলেই আপনি সেই অর্থ উত্তোলন করতে পারবেন।
টিকটক লাইভ গিফটস এবং ডায়মন্ডস ফিচার চালুর যোগ্যতা
লাইভ গিফটস এবং ডায়মন্ড ফিচারটি চালু করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হয়:
- আপনার বয়স কমপক্ষে ১৮ বা তার বেশি হতে হবে,
- কমপক্ষে ১ হাজার অনুসারী থাকতে হবে,
- টিকটিক কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলতে হবে,
ডায়মন্ড থেকে অর্থে রূপান্তর
টিকটকের নীতিমালা অনুযায়ী আপনি ডায়মন্ড কিনতে পারবেন না, আবার আপনি চাইলে আপনার প্রাপ্ত ডায়মন্ড অন্য কাউকে দিতে পারবেন না। অর্থাৎ তাদের নিয়ম অনুযায়ী ডায়মন্ড বিক্রয়, বিনিময়, ট্রান্সফার, কাউকে ন্যস্ত করা একেবারে নিষিদ্ধ।
টিকটক ক্রিয়েটররা যেকোনো সময় তাদের প্রাপ্ত ডায়মন্ড এর সংখ্যা দেখতে পারে এবং ডায়মন্ডকে অর্থে রুপান্তর করতে পারে। আপনি আবেদন করার পর টিকটক আপনার প্রাপ্ত ডায়মন্ড এর সংখ্যা হিসেব করে সেটা অর্থে রুপান্তর করে দিবে তখন আপনি সেটা উত্তোলন করতে পারবেন।
টিকটক লাইভ গিফটস এর বিভিন্ন আইকনের ভিন্ন মূল্য নির্ধারণ করা আছে, Advertisemint এমন কিছু ভার্চুয়াল গিফট এর কয়েনে রুপান্তরিত মূল্য সম্পর্কে রিপোর্ট করেছে:
- পান্ডা (Panda) : ৫ কয়েন
- ইটালিয়ান হ্যান্ড (Italian Hand) : ৫ কয়েন
- লাভ ব্যাঙ (Love Bang): ২৫ কয়েন
- সান ক্রিম (Sun Cream): ৫০ কয়েন
- রেইনবো পিউক (Rainbow Puke): ১০০ কয়েন
- কন্সার্ট (Concert): ৫০০ কয়েন
- আই এম ভেরি রিচ (I’m Very Rich): ১,০০০ কয়রন
- ড্রামা কুইন (Drama Queen): ৫,০০০ কয়েন
টিকটক ব্যবহারকারীরা অর্থের বিনিময়ে কয়েন ক্রয় করতে পারে এবং এসব কয়েন ব্যবহার করে গিফট ক্রয় করে থাকে । তারপর এসব গিফট ডায়মন্ডে রূপান্তর করা যায়। কয়েনের ৫০% হচ্ছে ডায়মন্ডের মূল্য অর্থাৎ ১০০ কয়েন সমান ৫০ ডায়মন্ড, ১০০০ কয়েন সমান ৫০০ ডায়মন্ড । কিন্তু আপনি টিকটক থেকে যা আয় করবেন তার ৫০% টিকটক রেখে দিবে।
লাইভ গিফটস এবং ডায়মন্ড থেকে আয় বাড়ানোর টিপস
- আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করুন । আকর্ষণীয় বলতে আপনার ভক্তরা আপনার কাছ থেকে যে ধরণের কন্টেন্ট পছন্দ করে সে ধরণের কন্টেন্ট তৈরি করুন ।
- নিয়মিত লাইভে আসুন । কারণ যত বেশি লাইভে আসবেন তত আপনার আয় বাড়বে।
- ভক্তদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করুন। তাদের কাছ থেকে কন্টেন্ট সম্পর্কে ফিডব্যাক নিন এবং কন্টেন্টের ম্যান উন্নয়ন করুন ।
৩. ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ (Brand Sponsorship)
আপনি যদি সোশ্যাম মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে থাকেন থাকেন ব্র্যান্ডের সাথে কোলাবরেশন করে টিকটক থেকে আয় করতে পারেন । ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে স্বীকৃতি পেতে কিন্তু অনেক ফলোয়ার লাগে বিষয়টা এমন নয়। চার প্রকারের ইনফ্লুয়েন্সার আছে, সেগুলো হচ্ছে :
১। মেগা ইনফ্লুয়েন্সার (১ মিলিয়ন প্লাস ফলোয়ার)
২। ম্যাক্রো ইনফ্লুয়েন্সার ( ৪০ হাজার থেকে ১ মিলিয়ন ফলোয়ার)
৩। মাইক্রো ইনফ্লুয়েন্সার (১ হাজার থেকে ৪০ হাজার ফলোয়ার)
৪। ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার ( ৫০০ থেকে ১ হাজারের কম ফলোয়ার)
ইনফ্লুয়েন্সাররা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে থাকেন। এক্ষেত্রে আপনার ফলোয়ারের সংখ্যা এবং তাদের এনগেজমেন্ট এর উপর নির্ভর করবে আপনি কি পরিমান আয় করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় একজন মেগা ইনফ্লুয়েন্সার ন্যানো ইনফ্লুয়েন্সার থেকে অনেক বেশি আয় করতে পারবেন।
৪. টিকটকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
টিকটক থেকে আয় করার জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটা বড় মাধ্যম হতে পারে। আপনি চাইলে টিকটক এডস অ্যাফিলিয়েট হিসেবে জয়েন করে বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করতে পারেন যেমন পুরস্কার, এক্সক্লুসিভ রিসোর্স এ প্রবেশাধিকার, টিকটক থেকে বিশেষ সাপোর্ট পাওয়া।
এজেন্সি বা ইনফ্লুয়েন্সাররা এই প্রোগ্রামে যুক্ত হতে পারবেন। আপনার রেফার করা টিকটক এডস ক্লায়েন্ট যখন টিকটকে বিজ্ঞাপন দিয়ে খরচ করবে তখন আপনি আয় করতে পারবেন। ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে যারা ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স, ব্যবসা ইত্যাদি নিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করেন তারা এই প্রোগ্রামের জন্য বেশি উপযুক্ত ।
এই প্রোগ্রামে যুক্ত হওয়ার জন্য আপনাকে আবেদন করতে হবে। টিকটক সেই আবেদন যাচাই করার পর যদি অনুমোদন দেয় তখন আপনি অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করার সুযোগ পাবেন। আপনি চাইলে এসব লিংক বিভিন্ন প্লাটফর্মে শেয়ার করার সুযোগ পাবেন যেমন নিজের ওয়েবসাইট, ইউটিউব, ফেসবুক, ইস্টাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি।
টিকটকের নিজস্ব অ্যাফিলিয়েট ছাড়াও আপনি অন্যান্য প্লাটফর্মের অ্যাফিলিয়েট পণ্য বা সেবা প্রচার করেও আপনি ভাল পরিমাণে আয় করতে পারবেন ।
আরও পড়ুন : ফেসবুকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করা যায়?
৫. নিজস্ব পণ্য বিক্রি করে টিকটক থেকে আয়
আপনার যদি নিজস্ব পণ্য বা সেবা থাকে তাহলে আপনি টিকটকের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন । এজন্য আপনাকে অনেক ফলোয়ার অর্জন করতে হবে । কারণ যদি ফলোয়ার থাকবে তত বেশি আপনার পণ্য বা সেবার প্রচার হবে। এছাড়া অনেক বেশি মানুষের কাছে পণ্য প্রচার করতে চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন ।
৬. টিকটক মার্কেটপ্লেস (TikTok Creator Marketplace)
টিকটক ক্রিয়েটর মার্কেটপ্লেস হলো একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্র্যান্ড এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা নিজেদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। একে অপরের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারে।
এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে “Creator tools” অপশন থেকে “Creator Marketplace” নির্বাচন করুন এবং তারপর “Profile” বাটনে ক্লিক করুন। তারপর সেখানে যুক্ত হয়ে আপনার স্পন্সর্ড ভিডিওর জন্য রেট সেট করুন। তারপর আপনার কাজ হচ্ছে অপেক্ষা করা। যদি কোন কোম্পানি আপনার সাথে যোগাযোগ করে তখন তাদের সাথে রেট এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলাপ করুন ।
এই প্লাটফর্মে যুক্ত হতে আপনাকে কিছু যোগ্যাতা পূরণ করতে হবে:
- আপনার কমপক্ষে ১ লক্ষ ফলোয়ার থাকতে হবে
- বিগত ২৮ দিনে কমপক্ষে ৩ টি ভিডিও পোস্ট করতে হবে
- বিগত ২৮ দিনে কমপক্ষে ১ লক্ষ লাইক পেতে হবে
- বয়স ১৮ বছর হতে হবে
৭. টিপিং ফিচার (TikTok Tips) এর মাধ্যমে টিকটক থেকে আয়
টিপ হচ্ছে এমন একটি ফিচার যার মাধ্যমে ভক্তরা তাদের প্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে সরাসরি আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারে। টিকটিক টিপ এর জন্য ব্যবহারকারী বা ক্রিয়েটরকে কোন চার্য করে না কিন্তু থার্ড পার্টি টিপ ফিচারের মাধ্যমে কোন পেমেন্ট এর জন্য ফি ধার্য্য করতে পারে।
টিকটক থেকে টিপ পেতে হলে আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে:
১. বয়স কমপক্ষে ১৮ হতে হবে,
২. কমপক্ষে ১০ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে।
৩. Stripe অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে,
৪. টিপ ফিচার অনুমোদিত দেশের অধিবাসী হতে হবে,
এসব শর্ত পূরণ করতে পারলে আপনি টিপ ফিচার চালু করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে প্রোফাইলে গিয়ে উপরের সর্ব ডানে তিনটা ডটে ক্লিক করতে হবে। তারপর “Settings and Privacy ” তে প্রবেশ করে “Tips” অপশন চালু করতে হবে।
যে কেউ আপনাকে ১ থেকে ১০০ ডলারের মধ্যে যে কোন অ্যামাউন্ট টিপ দিতে পারে। কেউ আপনাকে টিপ দিলে সেটা আপনার স্ট্রাইপ অ্যাকাউন্টে যোগ হবে। স্ট্রাইপ হচ্ছে একটা পেমেন্ট প্রসেসিং কোম্পানি যারা ক্রিয়েটরদের অর্থ জমা রাখে এবং সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।
আপনার যদি অনেক ফলোয়ার থাকে তাহলে আপনি এই ফিচার ব্যবহার করে টিকটক থেকে প্রচুর আয় করতে পারবেন।
আরও পড়ুন : টুইটার (X) থেকে আয় করা যায় কি কি উপায়ে? বিস্তারিত গাইডলাইন।
পাঠক জিজ্ঞাসা
কত ভিউ হলে টিকটক থেকে আয় করা যায়?
টিকটই ক্রিয়েটর রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম থেকে আয় করার জন্য বিগত ৩০ দিনে কমপক্ষে ১ লাখ ভিউ থাকতে হবে।
টিকটক থেকে আয় শুরু করার জন্য কত ফলোয়ার লাগে?
টিকটক থেকে আয় শুরু করার জন্য আপনার কমপক্ষে ১০,০০০ ফলোয়ার লাগবে। নিয়মিত এনগেজিং কন্টেন্ট তৈরি করলে এই পরিমাণ ফলোয়ার অর্জন করতে খুব বেশি সময় লাগবে না।
টিকটকে প্রতি ১ হাজার ভিউ থেকে কি পরিমাণ আয় হয়?
টিকটক প্রতি এক হাজার ভিউ এর জন্য ০.২ থেকে ০.৪ ডলার প্রদান করে থাকে। টিকটিক ক্রিয়েটর ফান্ড ব্যবহার করে এমন বেশ কিছু ফ্রিল্যান্সারের কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।
প্রতি ১ মিলিয়ন ভিউ এর জন্য টিকটক থেকে কি পরিমাণ আয় হয়?
প্রতি হাজার ভিউ থেকে ২ থেকে চার সেন্ট আয় হলে আপনি প্রতি মিলিয়ন ভিউ থেকে ২০-৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
টিকটক এই বছর ৩৩০ মিলিয়ন ডলার তাদের কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রদান করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সুতরাং আপনিও তৈরি হোন।
আপনি যদি এনগেজিং কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন তাহলে এই বিশাল পরিমাণ অর্থ থেকে আপনিও ভাল পরিমাণে আয় করতে পারবেন বলে আমি আশা করি।