Home Digital Marketing Affiliate Marketing কনটেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য কী?

কনটেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে পার্থক্য কী?

কন্টেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

কনটেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল। এই দুটি মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বা সেবার বিক্রয় বা লিড জেনারেশন এর চেষ্টা কিরছে। কন্টেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে বেশ কিছু মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। নিচে তাদের সংজ্ঞা এবং পার্থক্যগুলো তুলে ধরা হলো:

কনটেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing)

কনটেন্ট মার্কেটিং হলো এমন একটি কৌশল যেখানে একটি ব্র্যান্ড বা কোম্পানি বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে যেমন ব্লগ পোস্ট, ভিডিও, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, ই-বুক ইত্যাদি, যা তাদের সম্ভাব্য ক্রেতাকে আকর্ষণ করতে এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

লক্ষ্য:

  • দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক তৈরি করা।
  • ব্যবহারকারীদের কাছে মানসম্মত তথ্য প্রদান করে তাদের আস্থা অর্জন করা।
  • পণ্য বা সেবা সম্পর্কে অবহিত করা এবং গ্রাহককে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করা।

কৌশল:

  • তথ্যবহুল এবং আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করা।
  • SEO-ফ্রেন্ডলি কনটেন্ট ব্যবহার করে অর্গানিক ট্রাফিক আনা।
  • ব্র্যান্ড সচেতনতা এবং ক্রেতাদের এনগেজমেন্ট বাড়ানো।

আরও পড়ুন : কন্টেন্ট মার্কেটিং কি? কিভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করা হয়?  

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি কৌশল যেখানে তৃতীয় পক্ষ (অ্যাফিলিয়েট) বিভিন্ন পণ্য বা সেবা প্রচার করে এবং তাদের প্রচারের মাধ্যমে বিক্রি বা লিড জেনারেট হলে কমিশন উপার্জন করে।

লক্ষ্য:

  • অ্যাফিলিয়েটরা পণ্য বিক্রি বা সেবা প্রচারের মাধ্যমে কমিশন আয় করা।
  • পণ্য বা সেবা বিক্রি বাড়াতে তৃতীয় পক্ষের সহযোগিতা নেয়া।

কৌশল:

  • অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে পণ্য প্রচার।
  • সোশ্যাল মিডিয়া, ব্লগ, ইমেইল মার্কেটিং বা পেইড মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে লিড তৈরি করা।
  • প্রতিটি বিক্রির জন্য কমিশন আয় করা।

কন্টেন্ট মার্কেটিং এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর পার্থক্যগুলো নিম্নরূপ :

বৈশিষ্ট্য
কনটেন্ট মার্কেটিং
কনটেন্ট মার্কেটিং
মূল উদ্দেশ্য ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি, ব্যবহারকারীর আস্থা তৈরি করা এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়া। বিক্রয় বা লিড জেনারেট করে কমিশন আয় করা।
কাজের ধরণ মানসম্পন্ন এবং তথ্যবহুল কনটেন্ট তৈরি ও শেয়ার করা। তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করা।
আয় সরাসরি বিক্রয় থেকে না, বরং ব্যবহারকারীদের আস্থার মাধ্যমে ভবিষ্যতের আয়ের ব্যবস্থা করা। বিক্রি বা লিড জেনারেট হলেই কমিশন আয় করা।
ব্যবহারকারীর উপর ফোকাস ব্যবহারকারীর সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষামূলক কনটেন্ট প্রদান করা। বিক্রয় ফোকাসড পণ্য প্রচার, যেখানে কমিশনের বিষয়টি মূল ফোকাস থাকে।
রিসোর্স এবং খরচ নিজস্ব রিসোর্স ব্যবহার করে কনটেন্ট তৈরি করতে হয়। কোম্পানি তৃতীয় পক্ষের অ্যাফিলিয়েটদের লিংক ব্যবহার করে বিক্রি বাড়ায় তাই এর খরচ তুলনামূলক বেশি।
লং-টার্ম ইফেক্ট দীর্ঘমেয়াদী আস্থা এবং গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। অ্যাফিলিয়েটদের প্রচার থেকে তাৎক্ষণিক বিক্রয় ঘটে।

 

উপসংহার:

  • কনটেন্ট মার্কেটিং দীর্ঘমেয়াদী কৌশল যেখানে ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ব্যবহারকারীর আস্থা অর্জনের মাধ্যমে ফলাফল আসে।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো পারফরম্যান্স ভিত্তিক একটি মডেল, যেখানে পণ্য বিক্রি বা লিডের ভিত্তিতে আয় হয়।

দুটি কৌশলই আলাদা, তবে বেশিরভাগ সময়ে সফলভাবে প্রয়োগ করার জন্য দুটোকে একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়। কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ভালো কনটেন্ট তৈরি করে অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলো ব্যবহার করে আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ইমেইল মার্কেটিং কি? একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারকে ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে সাহায্য করে? 

ইমেইল মার্কেটিং হলো একটি ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল, যার মাধ্যমে কোনো ব্যবসা বা মার্কেটার গ্রাহকদের ইমেইল পাঠিয়ে তাদের কাছে প্রাসঙ্গিক তথ্য, অফার, পণ্য বা সেবার প্রচার করে। এটি একটি ব্যক্তিগত ও সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যম, যা গ্রাহকদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়ক।

ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে কাজ করে?

  • ইমেইল তালিকা তৈরি: প্রথমে একটি ইমেইল তালিকা তৈরি করা হয়, যেখানে সম্ভাব্য গ্রাহক বা আগ্রহী ব্যক্তিদের ইমেইল আইডি সংগ্রহ করা হয়।
  • ইমেইল কন্টেন্ট তৈরি: এরপর প্রাসঙ্গিক এবং আকর্ষণীয় ইমেইল কনটেন্ট তৈরি করা হয়, যেমন নিউজলেটার, প্রমোশনাল ইমেইল, বা অফার।
  • ইমেইল পাঠানো: গ্রাহকদের কাছে ইমেইল পাঠানো হয়।
  • ফলাফল বিশ্লেষণ: ইমেইল পাঠানোর পরে ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়, যেমন কতজন ইমেইল খুলেছে, কতজন লিঙ্কে ক্লিক করেছে ইত্যাদি।

একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারকে ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে সহায়তা করে?

ইমেইল মার্কেটিং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকরী কৌশল। এটি বিভিন্নভাবে সহায়ক হতে পারে:

১. সরাসরি যোগাযোগ:

ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েটরা সরাসরি তাদের টার্গেট অডিয়েন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। এটি একটি ব্যক্তিগত মাধ্যম, যেখানে প্রোমোশনাল অফার এবং অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করা যায়।

২. বিশ্বস্ত সম্পর্ক তৈরি:

নিয়মিত ইমেইল পাঠানোর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েটরা তাদের গ্রাহকদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। নিয়মিত প্রাসঙ্গিক এবং উপকারী কনটেন্ট পাঠালে গ্রাহকদের আস্থা বাড়ে এবং তারা অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে পণ্য কেনার সম্ভাবনা বেশি হয়।

৩. রিপিটেড প্রমোশন:

ইমেইল তালিকায় অন্তর্ভুক্ত গ্রাহকদের নিয়মিত প্রমোশন পাঠিয়ে বারবার পণ্য প্রচার করা সম্ভব, যা বিক্রয় বাড়াতে সহায়ক।

৪. টার্গেটেড কনটেন্ট:

ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েটরা বিভিন্ন গ্রাহকের জন্য বিভিন্ন ধরণের কন্টেন্ট পাঠাতে পারে। যেমন আপনি যদি জানেন কোন গ্রাহক কোন ধরনের পণ্য কিনতে আগ্রহী, তাহলে সেই পণ্যের প্রমোশনাল ইমেইল পাঠাতে পারেন।

৫. কনভার্সন বাড়ানো:

ইমেইলের মাধ্যমে সঠিক সময়ে প্রাসঙ্গিক অফার পাঠিয়ে কনভার্সন বাড়ানো সম্ভব। এটি সাধারণত সরাসরি বিক্রয় বাড়াতে সাহায্য করে, কারণ ইমেইলে পাঠানো প্রমোশনগুলো ব্যক্তিগত এবং সময়োপযোগী হয়।

৬. ইমেইল অটোমেশন:

ইমেইল মার্কেটিং অটোমেশন টুল যেমন Mailchimp, ConvertKit, এবং ActiveCampaign ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েটরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমেইল পাঠানোর সিস্টেম তৈরি করতে পারে। এটি গ্রাহকদের সঠিক সময়ে ইমেইল পাঠানোর সুযোগ দেয়, যেমন সাইন-আপ করার পরে স্বাগত ইমেইল বা নির্দিষ্ট সময়ে প্রোমোশনাল ইমেইল।

৭. কাস্টমাইজড অফার:

গ্রাহকদের পণ্য বা সেবা ক্রয় করার অভ্যাস বা আচরণ বিশ্লেষণ করে সে অনুযায়ী ইমেইল তৈরি করে তাদের জন্য বিশেষ অফার এবং প্রমোশন পাঠানো যায়, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করে।

উদাহরণ:

একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার যিনি ফিটনেস প্রোডাক্ট প্রচার করছেন, তিনি তার ইমেইল তালিকার গ্রাহকদের নিয়মিত ফিটনেস টিপস, ভিডিও টিউটোরিয়াল এবং প্রডাক্ট রিভিউ পাঠাতে পারেন। এর ফলে গ্রাহকরা সেই পণ্য সম্পর্কে আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং প্রমোশনাল ইমেইলে থাকা অ্যাফিলিয়েট লিংকের মাধ্যমে পণ্য কিনতে পারে।

উপসংহার:

ইমেইল মার্কেটিং একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারের জন্য শক্তিশালী একটি টুল, যা সরাসরি যোগাযোগ, সম্পর্ক গড়া এবং প্রমোশনাল অফার পাঠানোর মাধ্যমে বিক্রয় বৃদ্ধি করতে সহায়ক। ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে সঠিক কৌশল অবলম্বন করে, অ্যাফিলিয়েটরা দীর্ঘমেয়াদী সফলতা অর্জন করতে পারে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version