Home Digital Marketing SEO অন পেজ এসইও (ON-PAGE-SEO) কি? স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

অন পেজ এসইও (ON-PAGE-SEO) কি? স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন।

অন পেজ এসইও (ON-PAGE-SEO) কি? 

অন পেইজ এসইও (ON-PAGE-SEO) হল একটি প্রক্রিয়া যেখানে আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠা বা কনটেন্টকে সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপটিমাইজ করা হয়, যাতে সেই পৃষ্ঠাগুলি সার্চ ইঞ্জিনের র‍্যাঙ্কিংয়ে ভালো অবস্থানে আসে। এটি মূলত ওয়েবসাইটের কনটেন্ট এবং HTML সোর্স কোডের মধ্যে পরিবর্তন করে সার্চ ইঞ্জিনের সাথে সাইটকে ভালোভাবে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে।

অন পেজ এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ?

অন পেজ একটি ওয়েবসাইটের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  এটি শুধু সার্চ ইঞ্জিনকে ওয়েবসাইট সম্পর্কে ভাল ধারণা দেয় না এটি ওয়েবসাইট ভিজিটরদের সুন্দরভাবে সাইট নেভিগেট করতে সাহায্য করে।

ভালভাবে অন পেজ এসইও করলে সার্চ ইঞ্জিন সেটিকে সার্চ র‍্যাংকিং এ গুরুত্ব দিয়ে থাকে । ইন্টারনাল লিংকের কারণে সার্চ ক্রলাররা খুব সহজেই ওয়েবসাইটের অন্যান্য পেজ সম্পর্কে জানতে পারে এবং সেগুলোকে দ্রুত ইনডেক্স করে থাকে । ভিজিটররাও একই কারণে অন্যান্য পেজ সম্পর্কে জানতে পারে এবং ওয়েবসাইটে অনেক সময় ব্যয় করে।

অন পেজ এসইও (ON-PAGE SEO) এর মূল উপাদানগুলো

অন পেজ এসইও  এর উপাদান হচ্ছে:

on-page-seo-checklist

 

কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন

অন পেজ এসইও (ON-PAGE-SEO) এর জন্য  ওয়েবপেইজের প্রতিটি কনটেন্টের ক্ষেত্রে সঠিক কীওয়ার্ড নির্বাচন করুন এবং সেগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করুন।

মূল কীওয়ার্ডগুলো টাইটেল, হেডিং, সাবহেডিং, মেটা ট্যাগ এবং প্যারাগ্রাফে অন্তর্ভুক্ত করুন।

টাইটেল ট্যাগ (Title Tag)

প্রতিটি পৃষ্ঠার টাইটেল ট্যাগ সঠিকভাবে অপটিমাইজ করা জরুরি। টাইটেল ট্যাগ গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের কাছে আপনার পৃষ্ঠার মূল বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য প্রদান করবে। টাইটেল ট্যাগটি প্রায় ৫০-৬০ অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত এবং এতে মূল কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। বেশ শব্দ ব্যবহার করলে পুরো টাইটেলটি সার্চ রেজাল্টে প্রদর্র্শিত হয় না।

মেটা ডিসক্রিপশন (Meta Description)

মেটা ডিসক্রিপশন হল একটি সংক্ষিপ্ত সারাংশ যা সার্চ ইঞ্জিনে আপনার ওয়েবসাইটের লিংকের নিচে প্রদর্শিত হয়। এটি ১৫০-১৬০ অক্ষরের মধ্যে রাখা উচিত এবং এমনভাবে লিখতে হবে যেন তা পাঠককে আকর্ষণ করতে পারে। উপরের ছবিতে দেখতে পাচ্ছেবা backlinko কিভাবে তারা মেটা ডেসক্রিপশন লিখেছে। ডেস্ক্রিপশনের শেষে এমন একটা শব্দ লিখেছে যা আপনাকে ওই লিংকে ঢুকতে উৎসাহিত করবে। এটি সাইটে ভিজিটর বাড়ানোর একটা ভাল কৌশল।

ইউরাল (URL) স্ট্রাকচার

আপনার ওয়েবসাইটের প্রতিটি পৃষ্ঠার URL পরিষ্কার, ছোট এবং বোধগম্য হওয়া উচিত। এছাড়া URL এ কীওয়ার্ড যুক্ত করা ভালো।

উদাহরণ:

  • ভুল: example.com/p=12345
  • সঠিক: example.com/start-online-business

হেডিং ট্যাগ (H1, H2, H3)

  • H1 ট্যাগটি পৃষ্ঠার প্রধান শিরোনাম হিসেবে ব্যবহার করা উচিত এবং এতে প্রধান কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত থাকা উচিত।
  • H2 এবং H3 ট্যাগগুলিকে সাবহেডিং হিসেবে ব্যবহার করা উচিত, যা কনটেন্টকে পরিষ্কারভাবে সাজাতে সাহায্য করবে এবং SEO এর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

আরও পড়ুন : টাইটেল ট্যাগ হেডিং ট্যাগ এবং ইউরাল এর গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত নির্দেশিকা

অন পেজ এসইও এর জন্য সঠিকভাবে অপটিমাইজেশন

ছবিগুলোর জন্য Alt Text ব্যবহার করুন। Alt Text এটি এমন একটি টেক্সট যা গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে ছবিটির বিষয়ে তথ্য প্রদান করে। তাই সঠিকভাবে Alt Text ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন সেই ছবিটিকে  সার্চ পেজে সহজে র‍্যাংক করে। উপরের ছবিতে দেখুন আমার ফিচারড ছবিতে আমি Alt Text হিসেবে অন- পেইজ-এসইও (ON-PAGE-SEO) দিয়েছি।  এর ফলে সার্চ ক্রলাররা সহজেই বুঝতে পারবে এই ছবিটা কোন বিষয়টি নির্দেশ করছে।

ছবির ফাইল সাইজ ছোট রাখুন যাতে পেজ লোডিং স্পিড কমে না যায়।

ইন্টারনাল লিংকিং

উপরের ছবিতে আপনি দেখতে পাচ্ছেন আমি কিভাবে এই পেইজটার সাথে ওয়েবসাইটের আরেকটা পেইজের লিঙ্ক করে দিয়েছি। এর ফলে আমার পাঠকরা আমার এই আর্টিকেল পড়ার পাশাপাশি আমার লিঙ্ক করা আর্টিকেলেও প্রবেশ করতে পারে । এর ফলে আমি একজন পাঠককে অনেক সময় ধরে আমার ওয়েবসাইটে ধরে রাখতে পারবো যা আমার এসইও পারফর্মেন্স বাড়াতে সাহায্য করবে ।

এছাড়া ইন্টারনাল লিঙ্ক ব্যবহার করার ফলে সার্চ ইঞ্জিনের ক্রলারগুলো সহজেই এসব লিঙ্কের মাধ্যমে পুরো ওয়েবসাইটে ঘুরে বেড়াতে পারে। এসইও গাইডলাইনে এসইও সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন । আপনি খেয়াল করলে দেখবেন এসইও গাইডলাইনেও আমি একটি ইন্টারনাল লিঙ্ক ব্যবহার করেছি ।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন

ওয়েবসাইটটি মোবাইল ডিভাইসে ভালোভাবে প্রদর্শিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। গুগল এখন মোবাইল ফ্রেন্ডলি সাইটকে বেশি প্রাধান্য দেয়।

পেজ লোড স্পিড

পেইজের লোডিং স্পিড কম হলে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা খারাপ হয় এবং সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাঙ্কিং কমে যায়। এজন্য আপনার সাইটের স্পিড ভালো রাখতে হবে। তাই কিভাবে ওয়েব পেইজের লোডিং স্পীড বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে জানতে হবে।

CSS, JS এবং ছবির সাইজ কমিয়ে পেজ স্পিড বাড়ানো যেতে পারে।

মানসম্মত কনটেন্ট

আপনার কনটেন্ট অবশ্যই উচ্চমানের এবং প্রাসঙ্গিক হতে হবে। দীর্ঘ ও তথ্যবহুল কনটেন্ট গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের কাছে বেশি মূল্যবান। এজন্য আপনাকে গুগল ওয়েবমাস্টার গাইডলাইন এবং বিং ওয়েবমাস্টার গাইডলাইন ভাল করে পড়ে তারপর তাদের গাইডলাইন মেনে কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে।

ইউজার এক্সপেরিয়েন্স (UX)

ওয়েবসাইটের নেভিগেশন সহজ, পরিষ্কার এবং ব্যবহারকারীর জন্য সুবিধাজনক হওয়া উচিত। ব্যবহারকারীরা সহজেই যা খুঁজছে তা খুঁজে পেলে তারা ওয়েবসাইটে বেশি সময় ব্যয় করবে, যা র‍্যাঙ্কিংয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অন পেজ এসইও (ON-PAGE-SEO) কিভাবে করবেন? 

অন পেইজ এসইও (ON-PAGE-SEO) করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

১. কীওয়ার্ড গবেষণা করুন: আপনার টার্গেট করা পাঠকরা কোন ধরণের কীওয়ার্ড ব্যবহার করছে সে বিষয়ে গবেষণা করুন। কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই এটি বের করতে পারবেন ।  যেমন আপনি যদি গুগলে কোন কিওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্চ করেন তখন অন্যান্য ব্যবহারকারীরাও ওই বিষয় সম্পর্কিত যেসব বিষয় সার্চ করছে সেগুলো প্রদর্শিত হবে। আপনি সেসব কীওয়ার্ড আপনার কন্টেন্টে ব্যবহার করতে পারেন ।

আরও পড়ুন: কীওয়ার্ড রিসার্চ কি? কিভাবে কী ওয়ার্ড রিসার্চ করবেন?

২. টাইটেল এবং মেটা ট্যাগ তৈরি করুন: প্রতিটি পৃষ্ঠার জন্য কাস্টমাইজড এবং  টাইটেল ও মেটা ডিসক্রিপশন লিখুন। টাইটেলে এবং মেটা ডেসক্রিপশন এ কীওয়ার্ড যুক্ত করুন। এর ফলে সার্চ ইঞ্জিনের ক্রলাররা আপনার কন্টেন্টের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বুঝতে পারবে ।

৩. কনটেন্ট লিখুন: মূল কীওয়ার্ড ও সম্পর্কিত কীওয়ার্ড ব্যবহার করে তথ্যবহুল, পাঠযোগ্য কনটেন্ট তৈরি করুন।

৪. ইমেজ মিডিয়া অপটিমাইজ করুন: ইমেজের Alt Text এবং সঠিক ফাইল ফরম্যাট ব্যবহার করে সঠিকভাবে ইমেজ অপটিমাইজ করুন। তবে ইমেজ অপ্টিমাইজ করার বেশ কিছু উপায় আছে সেগুলো সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে। সঠিকভাবে অপটিমাইজ না করলে আপনার ওয়েব পেজ লোড নিতে অনেক দেরি হবে কারণ ইমেজকে লো স্পীডের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়।

৫. ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিঙ্ক তৈরি করুন: আপনার সাইটের মধ্যে এবং বাইরের বিশ্বস্ত সাইটের সাথে লিঙ্ক তৈরি করুন। ইন্টারনাল লিংকের কারণে সার্চ ক্রলার এবং ভিজিটররা খুব সহজেই সাইটে বিচরণ করতে পারবে। এক্সটার্নাল ভাল লিংক ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন সেটিকে ইতিবাচকভাবে দেখে।

৬. পে স্পিড এবং মোবাইল অপটিমাইজেশন নিশ্চিত করুন: অন পেইজ এসইও এর জন্য পেজ স্পিড একটি বড় ফ্যাক্টর। পেজ লোড স্পীড কম হলে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভাল হয়।  এছাড়া মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইনও এসইও র‍্যাংকিং এ বড় ভূমিকা পালন করে।

এই পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করে অন পেইজ এসইও (ON-PAGE-SEO) করলে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে ভালো র‍্যাঙ্ক করবে এবং আপনি আরও বেশি ট্রাফিক আনতে সক্ষম হবেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version