Home Make Money Online ব্লগিং করে আয় করার ১৫ টি উপায়

    ব্লগিং করে আয় করার ১৫ টি উপায়

    অনলাইন থেকে আয় করার যেসব উপায় আছে তার মধ্যে ব্লগিং করে আয় খুবই জনপ্রিয়। সারা বিশ্বে অসংখ্য মানুষ ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করছে।

    ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করার বিষয়ে জানার আগে আপনাকে জানতে হবে ব্লগিং কি।

    ব্লগিং কি?

    ব্লগিং হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত, তথ্য, টিপস বা গাইডলাইন শেয়ার করার একটি মাধ্যম বা প্লাটফর্ম। ব্লগ লেখার মাধ্যমে মানুষ তাদের চিন্তা, অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান বিশ্বের সাথে শেয়ার করে থাকে।

    ব্লগকে ওয়েবসাইটের একটি অংশ হিসেবে বলা যায়। সাধারণ ব্লগ একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস করে পরিচালনা করা হয়।

    ব্লগের ধরণ

    ব্লগ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে, যেমন:

    • ব্যক্তিগত ব্লগ (Personal Blog)
    • ট্র্যাভেল ব্লগ (Travel Blog)
    • ফুড ব্লগ (Food Blog)
    • টেক ব্লগ (Tech Blog)
    • হেলথ অ্যান্ড ফিটনেস ব্লগ (Health & Fitness Blog)
    • ফ্যাশন ব্লগ (Fashion Blog)
    • ফাইনান্স ব্লগ (Finance Blog)

    নাম দেখেই আপনি এসব ব্লগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বুঝে ফেলবেন। অর্থাৎ ব্লগ সাধারণত নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ফোকাস করে থাকে।

    ব্লগ তৈরির নিয়ম 

    ব্লগিং এর মাধ্যমে আয় করতে হলে আপনাকে প্রথমে ব্লগ কিভাবে তৈরি করে সে বিষয়ে জানতে হবে। ব্লগ তৈরি করার বিভিন্ন প্লাটফর্ম আছে তার মধ্যে জনপ্রিয় দুটি প্লাটফর্ম হচ্ছে:

    •  ব্লগার (Blogger)
    • ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress)

    ব্লগার(Blogger)

    ব্লগার হচ্ছে গুগলের একটি প্লাটফর্ম।  ব্লগার ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন।

    ব্লগিং ওয়েবসাইট ব্লগার থেকে ব্লগ তৈরি করার  আপনাকে blogger.com এ প্রবেশ করতে হবে। ব্লগারে প্রবেশ করার পর আপনি Create your Blog অপশন দেখতে পাবেন। এই অপশনে ক্লিক করলেই আপনাকে Sign in পেজে রিডাইরেক্ট করে নিয়ে যাবে।
    আপনার মেইল আর পাসওয়ার্ড দিয়ে প্রবেশ করুন। তারপর ব্লগ টাইটেল, ইউরাল এবং ডিসপ্লে নাম দিয়ে finish অপশনে ক্লিক করলেই আপনার ব্লগ তৈরি হয়ে যাবে ।

    ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress)

    ব্লগ তৈরি করার সবচেয়ে জনপ্রিয় প্লাটফর্ম হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস । কিছু স্ট্যাটিস্টিক্স দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেস কি পরিমান জনপ্রিয় :

    • বর্তমানে ৪৮৮.৬ মিলিয়ন ব্লগ ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি
    • পৃথিবীর ৪৭% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে
    • ওয়ার্ডপ্রেস সিএমএস ( CMS) মার্কেটের ৬২.২% শেয়ার ওয়ার্ডপ্রেসের দখলে
    • WooCommerce হচ্ছে শীর্ষ ইকমার্স প্লাটফর্ম

    ওয়ার্ডপ্রেসে ব্লগ তৈরি করারও বেশ সহজ। ব্লগারের মত ব্লগিং ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসেও আপনি ফ্রি ডোমেইন হোস্টিং ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ফ্রি জিনিস ভাল হয় না। আপনি যদি প্রফেশনালী ব্লগার হতে চান তাহলে অবশ্যই ডোমেইন হোস্টিং কিনে ব্যবহার করবেন ।

    বর্তমানে হোস্টিং কোম্পানিগুলো ওয়ার্ডপ্রেসকে অটো ইন্সটলার করে রাখে। মাত্র কয়েকটি ক্লিকে ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড করে একটি থিম সিলেক্ট করতে হবে । তারপর নিজের প্রয়োজনমতো কাস্টমাইজ করে প্রয়োজনীয় প্লাগিন ইন্সটল করে নিন। যেমন SEO এর Yoast প্লাগিং ব্যবহার করুন । প্লাগিন ইন্সটল করা শেষ হলে আপনার ব্লগ কমপ্লিট হয়ে গেল ।

    ব্লগিং করে আয় করার পদ্ধতি

    ব্লগিং বর্তমানে শুধু শখ নয়, এটি আয়ের একটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্লগিং করে আয় করার  যায়, তা নিচে বিস্তারিত দেওয়া হলো:

    ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আয়ের জন্য প্রথমে একটি ভালো ব্লগ তৈরি করতে হবে এবং সঠিক কৌশল অনুসরণ করতে হবে। ব্লগিং এর মাধ্যমে আয়ের কিছু জনপ্রিয় উপায় নিম্নরূপ:

    ১. গুগল অ্যাডসেন্স (Google AdSense) এর মাধ্যমে ব্লগিং করে আয় 

    Google AdSense হলো একটি জনপ্রিয় বিজ্ঞাপন প্রোগ্রাম। ব্লগিং করে আয় করার জন্য গুগল এডসেন্স এর এপ্রুভাল এর প্রয়োজন। এপ্রুভাল পাওয়ার পর আপনার ব্লগে গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আয় করতে পারেন। সাধারণত ভিজিটররা বিজ্ঞাপনগুলোর উপর ক্লিক করলে আপনি আয় করতে পারবেন।

    Google AdSense-এ লগ ইন করে যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে আবেদন করতে হবে  এবং Google যদি আপনার ব্লগকে অ্যাডসেন্স এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন এর জন্য উপযুক্ত মনে করে তাহলে আপনার ব্লগকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের অনুমোদন দিবে।

    এডসেন্স এর অনুমোদন পাওয়ার জন্য ব্লগের নির্দিষ্ট ট্র্যাফিক থাকতে হবে এবং এডসেন্স পাবলিশার পলিসি মেনে চলতে হবে।

    বিস্তারিত পড়ুন : গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আয় করা যায় কিভাবে?

    ২. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং 

    অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করে কমিশন আয় করতে পারেন। ব্লগি এ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে সহজেই যায় করতে পারবেন । এজন্য আপনাকে মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে এবং সেসব কন্টেন্টের মধ্যে অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করতে হবে।

    কোন পাঠক যখন আপনার শেয়ার করা লিংকে ক্লিক করে কোন কিছু কিনবে তখন আপনি সেই বিক্রয়ের বিপরীতে কিছু কমিশন পাবেন। অ্যাফিলিয়েট সম্পর্কে যদি আপনার ধারণা কম থাকে তাহলে আপনি  অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর গাইডলাইনে পড়তে পারেন ।

    ৩. স্পন্সরড পোস্ট (Sponsored Posts) এর মাধ্যমে ব্লগিং করে যায় 

    ব্লগিং করে যায় করার আরেকটি বড় মাধ্যম হচ্ছে স্পন্সর্ড পোস্ট। এই ধরণের পোস্ট পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগকে অবশ্যই যথেষ্ট পরিমান জনপ্রিয় হতে হবে । প্রকার ট্রাফিক থাকতে হবে ।

    স্পন্সর্ড পোস্ট পাওয়ার জন্য আপনি বিভিন্ন কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তাদেরকে আপনার ব্লগের ট্রাফিক সম্পর্কে ধাৰণা দিন এবং আপনার ব্লগে তারা স্পন্সর্ড পোস্ট করলে কিভাবে লাভবান হবে সেটা তুলে ধরুন।

    আরও পড়ুন: টিকটকে ব্র্যান্ড স্পন্সরশিপ এর মাধ্যমে কিভাবে আয় করে?

    ৪. ডিজিটাল প্রোডাক্ট বিক্রি 

    ব্লগের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল পণ্য যেমন ই-বুক, অনলাইন কোর্স, সফটওয়্যার ইত্যাদি বিক্রি করতে পারেন। জনপ্রিয় ব্লগাররা এসব ডিজিটাল পণ্য তাদের ব্লগে বিক্রি করে বেশ ভালো ইনকাম করছে।

    তাহলে আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করে থাকে তাহলে দেরি না করে ইবুক লিখে ফেলুন বা একটি ভিডিও কোর্স তৈরী করে ফেলুন। আপনার কাজের মান যদি ভাল থাকে তাহলে গ্রাহকের অভাব হবে না।

    ৫. সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model) ব্যবহার করে ব্লগিং থেকে যায় 

    সাবস্ক্রিপশন মডেল ব্লগিং থেকে আয়ের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম । এই পদ্ধতিতে যায় করার জন্য প্রথমে আপনাকে এমন পাঠক তৈরী করতে হবে যারা আপনার কন্টেন্ট টাকা খরচ করে পড়তে বা দেখতে চাইবে। মানুষ কখন টাকা খরচ করে কোন কিছু কেনে সেটা অবশ্যই ভালভাবে জানেন । আপনাকে এমন কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে যা গ্রাহকের উপকার করবে। গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরণের টিপস নিয়মিত দেওয়ার চেষ্টা করুন।

    সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তুলুন তাহলে দেখবেন আপনার অনুসারীরাই আপনার সাবস্ক্রিপশন ক্রয় করছে।

    ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি সহজেই একটি সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম তৈরি করতে পারবেন এবং গ্রাহকদের ডেটাবেস সংরক্ষণ করতে পারবেন ।

    ৬. কোচিং এবং কনসালটেশন (Coaching & Consultation)

    মনে করেন আপনি খুব স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞান আপনার খুব ভাল আছে তাহলে আপনি স্বাস্থ্য বিষয়ে আপনার ব্লগে একটি পরামর্শক সেন্টার খুলে ফেলতে পারেন । আপনি যদি ভাল পরামর্শ দিতে পারেন তাহলে দেখবেন আপনি প্রকার ভিজিটর পাচ্ছেন।

    তেমনিভাবে আপনি যদি কোন বিষয়ে খুব দক্ষ হয়ে থাকে তাহলে অনলাইন কোচিং চালাতে পারেন । কোচিং সেন্টারটি হবে আপনার ব্লগ ভিত্তিক ।

    ৭. ইভেন্ট স্পন্সরশিপ (Event Sponsorship)

    আপনি যদি একটি জনপ্রিয় ব্লগ চালান এবং নিয়মিত ওয়েবিনার বা অনলাইন ইভেন্ট আয়োজন করেন, তাহলে বিভিন্ন কোম্পানি সেই ইভেন্টে স্পন্সর করতে আগ্রহী হতে পারে।

    এসব ইভেন্টে আপনি আপানর অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এটা অনেকটা ওয়ার্কশপের মতো বিষয়। এখানে সবাই জয়েন করবে কিছু জানা এবং শেখার জন্য।  তাই নিয়মিত এই ধরণের আয়োজন করতে পারলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির নিকট থেকে স্পনসরশিপ নিয়ে বেশ ভাল পরিমানে আয় করতে পারবেন ।

    ৮. ড্রপশিপিং (Dropshipping)

    ড্রপশিপিং হচ্ছে নিজের অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে অন্যের পণ্য বিক্রি করা। ড্রপশিপিং ব্যবসা এর একটা বড় সুবিধা হচ্ছে এই ব্যবসায়ে পণ্য স্টক করা বা সাপ্লাই করতে হয় না।  স্টক এবং সাপ্লাই এর দায়িত্ব পালন করে তৃতীয় পক্ষ।

    আপনি আপনার ব্লগে সহজেই অনলাইন স্টোর খুলে ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন । সুন্দর করে ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন টাইটেল দিয়ে আকর্ষণীয়ভাবে গ্রাহকের সামনে উপস্থাপন করলে গ্রাহক ক্রয় করতে উৎসাহিত হবে । তবে মনে রাখবেন গ্রাহকদের কখনো ঠকিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করার চেষ্টা করবেন না এতে আপনি গ্রাহক হারাবেন।

    ৯. ফ্রিল্যান্স সেবা প্রদান (Freelance Services)

    ব্লগের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং সেবা প্রদান করে আপনি ভাল পরিমানে যায় করতে পারেন ।  মনে করেন আপনি লেখায় খুব দক্ষ তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন। গ্রাহকরা আপনার লেখা দেখে পছন্দ করলে আপনি ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে কাজ করে যায় করলেন । এমনভাবে আপনি যদি ভিডিও এডিটিং ডিজাইনিং বা প্রোগ্রামিং এ দক্ষ হন তাহলে আপনি এসব বিষয়ে ফ্রিল্যান্স সেবা প্রদান করা শুরু করতে পারেন ।

    আপনার ব্লগ যদি কোনো বিশেষায়িত দক্ষতার উপর হয়, যেমন লেখালেখি, ডিজাইনিং বা প্রোগ্রামিং, তাহলে আপনি ফ্রিল্যান্স সেবা প্রদান করতে পারেন। আপনি চাইলে একটা নিজের টিম বানিয়ে ফেলতে পারেন তাহলে আপনি একসাথে অনেক কাজের অর্ডার নিতে পারবেন ।

    আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিং করে আয় করবেন কি কি উপায়ে?

    ১০. ব্লগে কোর্স তৈরি ও বিক্রি করে আয় 

    আপনার ব্লগে নিজের তৈরি করা কোর্স বিক্রি করতে পারেন। বেশিরভাগ অভিজ্ঞ ব্লগাররা তাদের ব্লগে নিজস্ব কোর্স বিক্রি করে থাকে ।  কোর্স তৈরী করার সময় বৰ্তমান ট্রেন্ড সম্পর্কে ভালোভাবে আপনাকে বুঝতে হবে । মানুষ কোন ধরণের বিষয়গুলো জানতে চায় এবং শিখতে চায় সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে কোর্স তৈরি করলে আশা করা যায় আপনি ভাল পরিমানে আয় করতে পারবেন ।

    আপনি বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স তৈরী করতে পারেন যেমন :

    • ফটোগ্রাফি
    • কোডিং
    • ডিজাইনিং
    • ডিজিটাল মার্কেটিং
    • ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
    • এপস তৈরী
    • গ্রাফিক্স ডিজাইন

    ১১. অনলাইন ওয়ার্কশপ আয়োজন 

    আপনার ব্লগের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে অনলাইন ওয়ার্কশপ আয়োজন করতে পারেন এবং এতে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ফি নিতে পারেন।

    আপনার সমমনা অন্য জনপ্রিয় ব্লগারদের এসব ওয়ার্কশপে আমন্ত্রণ জানাতে পারেন এর ফলে ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণকারীরা অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে অংশ নিবে এবং আর বেশি অংশগ্রহণকারী মানেই আপনার আয়ের পরিমাণও বেশি।

    ১২. ব্লগ ফ্লিপিং (Blog Flipping)

    ব্লগ ফ্লিপিং হচ্ছে একটি ব্লগ তৈরি করে সেটি ব্যবহার করে জনপ্রিয় করার পর বিক্রি করে দেওয়া।  আপনি ভাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হয়ে থাকেন তাহলে আপনার পক্ষে দ্রুত একটি ব্লগকে জনপ্রিয় করা সম্ভব।

    আপনি যদি অন পেজ এসইও ঠিকভাবে করতে পারেন এবং মানসম্মত ব্যাকলিংক জোগাড় করতে পারেন তাহলে আপনার ব্লগ দ্রুত সার্চ রেজাল্টে উপরের দিকে উঠে আসবে এবং আপনি প্রচুর পাবেন।  তখন আপনি সেই ট্রাফিক পরিসংখ্যান দেখিয়ে অনেক দামে সেই ব্লগটি বিক্রি করতে পারেন । এছাড়া Flippa.com এর মত অনলাইন প্লাটফর্ম আছে যেখানে আপনি ব্লগ কেনাবেচা করতে পারবেন।

    ১৩. সফটওয়্যার বা অ্যাপ বিক্রি করে ব্লগিং থেকে আয় 

    আপনার ব্লগ যদি সফটওয়ার বা অ্যাপ বিষয়ক হয় তাহলে আপনার ব্লগে আপনি কোনো বিশেষ সফটওয়্যার বা মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপ করে তা বিক্রি করে ভাল পরিমানে আয় করতে পারেন।

    ১৪. ফটো বা গ্রাফিক্স বিক্রি 

    অনেক ফটোগ্রাফার আছে যারা তাদের ফটোগ্রাফ বিক্রি করে বেশ ভাল পরিমানে আয় করছে। আপনি যদি প্রফেশনালী ছবি তুলতে পারেন তাহলে আপনার ওয়েবসাইটে সেসব ফটো গ্রাহকদের সামনে প্রদর্শন করতে পারেন।অনেক গ্রাহক আছে যারা সুন্দর ছবি দেখলেই কিনতে চায় ।

    আবার স্টক ফটোর চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ওয়েবসাইট মালিকরা তাদের পোস্টে ব্যবহার করার জন্য কপিরাইটমুক্ত ছবি খুঁজে থাকে । এসব গ্রাহকদের কাছে আপনি চাইলেই আপনার তোলা ছবি বিক্রি করে বেশ ভাল পরিমানে আয় করতে পারেন।

    তবে ফটোগ্রাফি করে আয় করার অনেক প্লাটফর্ম আছে। এসব প্লাটফর্মে ছবি বিক্রয় করে আয় করা যায়।

    ১৫. পডকাস্ট স্পন্সরশিপ (Podcast Sponsorship)

    পডকাস্টিং হলো একটি ডিজিটাল অডিও মাধ্যম, যেখানে কনটেন্ট ক্রিয়েটর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অডিও কনটেন্ট তৈরি করে এবং তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছে দেয়। এটি মূলত একটি ধারাবাহিক অডিও শো, যা বিভিন্ন বিষয়ে হতে পারে, যেমন:

    • শিক্ষা
    • বিনোদন
    • সাক্ষাৎকার
    • জীবনধারা
    • স্বাস্থ্য
    • প্রযুক্তি ইত্যাদি।

    পডকাস্টগুলো সাধারণত বিভিন্ন এপিসোডে বিভক্ত থাকে এবং শ্রোতারা যেকোনো সময় সেগুলো শুনতে পারেন। পডকাস্টিং এমন একটি মাধ্যম যার মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া যায়।

    আপনি যদি একজন জনরপিয় পডকাস্টার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে স্পন্সরশিপ পেতে পারেন ।  এভাবে নিয়মিত স্পনসর পেলে আপনি বেশ ভাল পরিমানে আয় করতে পারবেন ।

    স্পন্সরশিপ নেওয়ার আগে অবশ্যই কোম্পানির সাথে চুক্তি করে নিন। চুক্তির মধ্যে থাকতে পারে আপনি কত দিন তাদের ব্র্যান্ড প্রমোট করবেন এবং তার বিনিময়ে তারা আপনাকে কি পরিমান অর্থ প্রদান করবে ।

    ব্লগিং করে আয় করার জন্য প্রয়োজনীয় টিপস

    নিয়মিত পোস্ট করুন

    আপনি ব্লগিং করে যায় করতে চান তাহলে আপনাকে নিয়মিত মানসম্মত পোস্ট দিতে হবে। যত বেশি ভাল পোস্ট দিবেন আপনার শ্রোতার সংখ্যা তত বাড়বে । এই শ্রোতারাই একসময় আপনার গ্রাহকে পরিণত হবে।

    সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন 

    সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংকিং পাওয়ার উপায় । অর্থাৎ এসইও এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় সার্চ ইঞ্জিন আপনার ব্লগকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে প্রথম দিকে প্রদর্শিত হয়।

    অর্গানিক সার্চ স্টাডিতে দেখা গেছে ওয়েবসাইটে মোট ট্রাফিকের ৫৩.৩% আসে অর্গানিক সার্চের মাধ্যমে। তাই আপনি যত বেশি এসইও সমৃদ্ধ কন্টেন্ট তৈরি তত বেশি সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভিজিটর পাবেন এবং এর ফলে আপনা রায় বাড়বে ।

    পাঠকদের সাথে যোগাযোগ

    পাঠকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ আপনার ব্লগের এনগেজমেন্ট বাড়াতে সাহায্য করবে। আপনার কন্টেন্ট তাদের কেমন লাগছে , আরো নতুন কিছু চায় কিনা বা আপনার কন্টেন্ট এর কোন জায়গায় আরো উন্নতি করা দরকার এসব বিষয়ে তাদের মতামত চান। এভাবে নিয়মিত শ্রোতাদের সাথে কনভারসেশন করলে আপনার শ্রোতার সংখ্যা বাড়বে এবং এর পাশাপাশি আয়ের পরিমাণও বাড়বে।

    পাঠক জিজ্ঞাসা 


    ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়? 

    যারা ব্লগিং এর জগতে আসেন তারা প্রথমেই জানতে চায় ব্লগিং করে কত টাকা আয় করা যায়। আসলে ব্লগিং করে কি পরিমান আপনি ইনকাম করবেন সেটা আপনার কন্টেন্ট এর মান এবং জনপ্রিয়তার উপর নির্ভর করবে। আমি বিদেশী অনেক ব্লগারের ইনকাম রিপোর্ট দেখেছি। তারা বছরে কয়েক মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত যায় করে থাকে আবার অনেক ব্লগারকে বলতে শুনেছি ব্লগের পেছনে অনেক অর্থ এবং শ্রম দেওয়ার পরও আশানুরূপ আয় করতে পারে নাই।  তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে সফল ব্লগাররা দীর্ঘদিন অনেক পরিশ্রম করার পর আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছে তাই আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে তাহলে আপনি ভাল পরিমাণে ব্লগিং করে আয় করতে পারবেন।

    ব্লগিং করতে গিয়ে কোন ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়?

    ব্লগিং এর চ্যালেঞ্জেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ধৈর্য ধরে নিয়মিত মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরী করে যাওয়া। এখানে আপনাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হবে। আপনি ব্লগিং শুরু করলেন আর কিছুদিনের মধ্যেই আপনি সাফল্য পেয়ে যাবেন তা সম্ভব নয় এজন্য আপনাকে লম্বা সময় ধরে লেগে থাকতে হবে।

    ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি?

    একটি ব্লগের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে তার কন্টেন্ট। আপনি যদি ভাল কন্টেন্ট তৈরী করতে পারেন তাহলে আপনার ব্লগ দ্রুত সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংকিং করবে এবং প্রচুর ভিজিটর পাবেন।

    ব্লগ থেকে আয় করার জন্য কিসের এপ্রুভাল প্রয়োজন হয়?

    ব্লগ থেকে যায় করার জন্য আপনি যে প্লাটফর্ম থেকে আয় করতে চাচ্ছেন সেই প্লাটফর্মের এপ্রুভালের প্রয়োজন হবে । মনে করুন আপনি আপনার ব্লগে এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আয় করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনার এডসেন্স থেকে এপ্রুভালের প্রয়োজন হবে। আবার আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করতে চাচ্ছেন তাহলে আপনাকে অ্যাফিলিয়েট প্লাটফর্ম থেকে এপ্রুভাল নিয়ে তাদের পণ্য প্রচার করতে হবে।

    কোন প্লাটফর্ম থেকে ব্লগ তৈরি করা যায় ? 

    ব্লগ তৈরি করা করার বেশ কিছু প্লাটফর্ম আছে ,যেমন :

    • WordPress
    • Blogger.com
    • Website.com
    • Wix
    • Weebly
    • Squarespace

    উপসংহার

    ব্লগিং শুধুমাত্র শখ বা লেখার মাধ্যমে জ্ঞান শেয়ারের মাধ্যম নয়, এটি একটি শক্তিশালী আয়ের উৎসও হতে পারে। তবে সফলভাবে আয় করতে হলে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে, মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করতে হবে এবং ব্লগকে সঠিকভাবে প্রচার করতে হবে।

    NO COMMENTS

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    Exit mobile version